রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

সালামের প্রচলন বাড়াতে হবে

মুফতি মুহাম্মদ আল আমিন

সালামের প্রচলন বাড়াতে হবে

সালাম দুই মুসলমানের মধ্যে আন্তরিকতা সৃষ্টি করে। সমাজে ও সংসারে সবার মধ্যে হৃদ্যতা ও ভালোবাসা তৈরি করে। পরস্পর থেকে হিংসা-বিদ্বেষ দূর করে। সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য গড়ে তোলে। তাই আমরা একে অন্যকে সালাম করব। সন্তান মা-বাবাকে সালাম করবে। ভাইবোন একে অন্যকে সালাম করবে। স্বামী-স্ত্রী একে অন্যকে সালাম করবে। এক মুসলমান অন্য মুসলমানের সঙ্গে যখনই দেখা হয় সালাম করবে। সালাম শুধু মুখে উচ্চারণ করে দিতে হয়। পা ছুঁয়ে সালাম করা নিষেধ। আল কোরআনে এসেছে, ‘আর যখন কেউ মর্যাদাসহকারে তোমাকে সালাম করে তখন তাকে তার চাইতে ভালো পদ্ধতিতে জবাব দাও অথবা কমপক্ষে তেমনিভাবে। আল্লাহ সব বিষয়ের হিসাব গ্রহণকারী।’ সূরা আন নিসা, আয়াত ৮৬। এক মুসলমান যখন অন্য মুসলমানের বাসায় প্রবেশ করবে তখন তার অনুমতি নেবে এবং সালাম দেবে। আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা নিজেদের ঘর ছাড়া অন্য কারও ঘরে গৃহবাসীদের অনুমতি না নিয়ে এবং তাদের সালাম না করে প্রবেশ কোরো না। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম। আশা করা যায়, তোমরা এর প্রতি অবশ্যই খেয়াল রাখবে।’ সূরা আন নূর, আয়াত ২৭। হাদিসের কিতাবগুলোতেও সালামের ব্যাপক প্রচলনের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হজরত জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কথাবার্তা বলার আগেই সালাম করবেঅ’ তিরমিজি। আমরা যখন একে অন্যের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলি বা ফোন রিসিভ করি, শুরুতেই যেন সালাম দিই। অন্য বর্ণনায় এসেছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, ‘এক ব্যক্তি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে জিজ্ঞাসা করল, ইসলামের কোন অভ্যাসটি উত্তম? তিনি জবাব দিলেন, ক্ষুধার্তকে খাবার খাওয়াবে এবং পরিচিত অপরিচিত সবাইকে সালাম দেবে।’ বুখারি। এ হাদিস দ্বারা বোঝা যায়, সব মুসলমানকে সালাম করতে হবে এবং সবাইকে সালাম করার সওয়াব সমান। কে কাকে সালাম করবে এ বিষয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘ছোটরা বড়দের, হাঁটা ব্যক্তি বসা ব্যক্তিকে এবং কমসংখ্যক লোক বেশিসংখ্যক লোককে সালাম দেবে।’ বুখারি। তবে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছোটদেরও সালাম করতেন। প্রথমে সালামকারীর মর্যাদা বিষয়ে এসেছে; রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘সেই ব্যক্তি আল্লাহর অধিক নিকটবর্তী যে প্রথমে সালাম করে।’ তিরমিজি, আবু দাউদ। অন্য হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি আগে সালাম দেবে তার অন্তর থেকে অহংকার দূর হয়ে যাবে।’ সালাম দিলে পরস্পরের মধ্যে ভালোবাসা তৈরি হয়। এ বিষয়ে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে সত্তার হাতে আমার প্রাণ তাঁর শপথ করে বলছি, তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, যতক্ষণ না তোমরা ইমান গ্রহণ করবে। আর ততক্ষণ পর্যন্ত ইমান লাভ করতে পারবে না যতক্ষণ না পরস্পরকে ভালোবাসবে। আর আমি কি তোমাদের এমন কথা বলব না, যা তোমাদের মাঝে পারস্পরিক ভালোবাসা বৃদ্ধি করবে? তা হলো, তোমরা পরস্পরের মধ্যে সালামের ব্যাপক প্রচলন করবে।’ তিরমিজি।

লেখক : খতিব, সমিতি বাজার মসজিদ নাখালপাড়া, ঢাকা।

 

সর্বশেষ খবর