মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনাভাইরাস থেকে আত্মরক্ষার উপায়

শাহ মাহমুদ হাসান

করোনাভাইরাস থেকে আত্মরক্ষার উপায়

মহামারী থেকে বাঁচতে হলে ইসলামের নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। মহামারী প্রসঙ্গে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘মহামারী আল্লাহর গজব বা শাস্তি যা সর্বপ্রথম বনি ইসরায়েলের এক গোষ্ঠীর ওপর এসেছিল। অতএব, কোথাও মহামারী দেখা দিলে এবং সেখানে তোমরা অবস্থানরত থাকলে সে জায়গা থেকে চলে এসো না। অন্যদিকে কোনো এলাকায় এটা দেখা দিলে এবং সেখানে তোমরা অবস্থান না করলে সে জায়গায় যেও না।’ তিরমিজি। সংক্রামক ব্যাধি থেকে বাঁচার জন্য শরীরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা জরুরি। আল্লাহতায়ালা পরিচ্ছন্নতার প্রতি গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তওবাকারীদের ভালোবাসেন এবং ভালোবাসেন অধিক পরিচ্ছন্নতা ও পবিত্রতা অর্জনকারীদের।’ সূরা বাকারা, আয়াত ২২২। আর হাদিসে পরিচ্ছন্নতাকে ইমানের অংশ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলা হয়েছে, ‘পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ইমানের অর্ধেক।’ মুসলিম। উল্লেখ্য, মুখ, নাক, কান ও চোখ অপরিষ্কার থাকলে বিভিন্ন প্রকারের রোগব্যাধি সংক্রমণ হতে পারে। এ কারণে ইসলামে এসব অঙ্গ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার বিধান দেওয়া হয়েছে। অজুর মধ্যমে হাত-পা, মুখ, নাক, কান ও চোখ দৈনিক পাঁচবার পরিষ্কার করা হয়। এর ফলে এসব অঙ্গপ্রত্যঙ্গে কোনো প্রকার রোগজীবাণু লেগে থাকতে পারে না।

মহামারী থেকে বাঁচার জন্য পাপাচার থেকেও বাঁচার চেষ্টা করতে হবে। কেননা পাপের কারণেই দুনিয়ায় বিভিন্ন বিপদাপদ ও বিপর্যয় দেখা দেয়। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘জলে ও স্থলে মানুষের কৃতকর্মের দরুন বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে। আল্লাহ তাদের কর্মের শাস্তি আস্বাদন করাতে চান, যাতে তারা ফিরে আসে।’ সূরা রুম, আয়াত ৪১। এখানে বিপর্যয় বলে দুর্ভিক্ষ, মহামারী, অগ্নিকান্ড, বন্যা, নিরাপত্তাহীনতা ইত্যাদি আপদ-বিপদ বোঝানো হয়েছে। মানুষ যখন পাপাচারের সব সীমা ছাড়িয়ে যাবে ও অশ্লীলতার স্রোতে গা ভাসিয়ে দেবে তখন তাদের মধ্যে দুরারোগ্য ব্যাধির সংক্রমণ ঘটবে বলে হাদিসে হুঁশিয়ারি রয়েছে, ‘যখন কোনো সম্প্রদায়ের মধ্যে অশ্লøীলতা এমনভাবে ছড়িয়ে পড়বে যে তারা প্রকাশ্যে অশ্লীলতায় লিপ্ত হতে থাকে, তখন তাদের মাঝে এমনসব দুরারোগ্য ব্যাধির সংক্রমণ হবে, যা তাদের পূর্বপুরুষদের মধ্যে ছিল না।’ ইবনে মাজাহ।

মহামারী থেকে আত্মরক্ষার্থে দোয়া করতে হবে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেও দোয়া করতেন, ‘হে আল্লাহ! আমি আশ্রয় কামনা করছি তোমার কাছে শ্বেতকুষ্ঠ,  মানসিক রোগ, কুষ্ঠরোগ ও সকল প্রকার মহামারী থেকে।’ আবু দাউদ। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় তিনবার বলবে বিসমিল্লা-হিল্লাজি লা ইয়াদ্দুররু মাআসমিহি শাইউন ফিল আরদি ওয়ালা ফিস সামা-ই ওহুওয়াস সামিউল আলিম (আল্লাহর নামে যাঁর নামের বরকতে আসমান ও জমিনের কোনো বস্তুই ক্ষতি করতে পারে না, তিনি সর্বশ্রোতা ও মহাজ্ঞানী) সকাল হওয়া পর্যন্ত তার প্রতি কোনো হঠাৎ বিপদ আসবে না। আর যে তা সকালে তিনবার বলবে সন্ধ্যা পর্যন্ত তার ওপর কোনো হঠাৎ বিপদ আসবে না।’ আবু দাউদ।

 লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

 

সর্বশেষ খবর