শিরোনাম
বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

কেরানীগঞ্জে মাটিদস্যুতা

অপরাধীদের সামাল দিন

রাজধানীর লাগোয়া জনপদ দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের অর্ধলক্ষাধিক বাসিন্দা মাটি লুটেরাদের চক্রান্তে জিম্মি হয়ে পড়লেও দেখার কেউ নেই। ক্ষমতাদর্পী লুটেরা চক্রের সদস্যরা এলাকাবাসীর ফসলি জমি, গাছপালা, ভিটেবাড়ি কেটে, ছেঁটে, ধসিয়ে হাজার হাজার ট্রাক মাটি লুটে নিচ্ছে। এসব মাটি নেওয়া হচ্ছে আশপাশের ৪০টি ইটভাটায়। মাটি ভরাটের ঠিকাদারি কর্মকান্ডে সরবরাহ করা হচ্ছে লুটের মাটি। থানা পুলিশের পাহারায় চিহ্নিত সুজন-ডন-পলাশ বাহিনীর সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে অস্ত্রশস্ত্রের মহড়া দিয়ে ফাঁকা গুলিবর্ষণের আতঙ্ক ছড়িয়ে যেখানে-সেখানে হামলে পড়ছে। স্ক্যাভেটর, ভেকুসহ মাটি খননের সর্বাধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে শত শত শ্রমিক রাত-দিন মাটি খনন করে ট্রাকের পর ট্রাক ভরাট করে নিয়ে যাচ্ছে। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কয়েক হাজার একর আয়তনের সমতল জায়গা, ফসলি জমি কিংবা ভিটেবাড়ি দফায় দফায় খনন করে রীতিমতো ২০-২২ ফুট গভীর খাদে পরিণত করেছে। এরই মধ্যে ব্রাহ্মণগাঁও, কাজীর গাঁ, দক্ষিণ বাগুরের অনেক বাড়িঘর এসব খাদে ধসে পড়েছে। কেউ কেউ বালির বস্তার বাঁধ বানিয়ে বাড়ির ঘরগুলো কোনোরকমে টিকিয়ে রাখলেও তাদের বসবাস করতে হচ্ছে সীমাহীন ঝুঁঁকিতে। ঘরের দরজার সামনে পা ফেলতে সামান্য অসতর্কতাতেই গভীর খাদে পড়ে হতাহতের আশঙ্কা গ্রামবাসীকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। মাটি লুটেরা চক্র তাদের আগ্রাসী থাবায় বুড়িগঙ্গাসংলগ্ন কোন্ডা ইউনিয়নের ছয়টি গ্রামসহ প্রায় ৭ বর্গকিলোমিটার এলাকার চিরচেনা চেহারা আমূল বদলে দিয়েছে, পাল্টে দিয়েছে প্রকৃতি। যত দূর চোখ যায় খাঁখাঁ বিরানভূমি আর গভীর খানাখন্দে ক্ষতবিক্ষত বেহাল চিত্রই দৃশ্যমান হয়। কোথাও একচিলতে ছায়া দেওয়ার মতো গাছপালার নজির পর্যন্ত রাখা হয়নি। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে মাটিদস্যুদের অভয়ারণ্য সৃষ্টি হলেও পুলিশের নীরব ভূমিকা দুর্ভাগ্যজনক। দুষ্টের দমন শিষ্টের পালন পুলিশের দায়িত্ব হলেও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে দুর্বৃত্ত চক্রের সদস্যদের পাহারাদার হিসেবে ভূমিকা পালন করে তারা নিজেদের আত্মপরিচয়কে কলঙ্কিত করছে যা কোনোভাবেই কাম্য হওয়া উচিত নয়। কেরানীগঞ্জের মাটি লুটেরাদের দমনে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সরেজমিনে উপদ্রুত এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন- আমরা এমনটিই দেখতে চাই। পাশাপাশি দুর্বৃত্তদের রাজনৈতিক কানেকশনের

ইতি ঘটানোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে- এমনটিও প্রত্যাশিত।

সর্বশেষ খবর