শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

মধ্যবিত্তদের দুঃসময়

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিন

মানুষের আয় বেড়েছে এটি অবশ্যই খুশির খবর। তবে অস্বস্তির খবর হলোÑ আয়ের তুলনায় ব্যয় বেড়েছে তুলনামূলকভাবে বেশি। বিশেষত রাজধানী ঢাকা, বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম ও সিলেটে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় এতটাই বেড়েছে যে তা আয়বৃদ্ধির সব সুফলকে গিলে খাচ্ছে। এর মধ্যে ঢাকা এখন বিশ্বের অন্যতম ব্যয়বহুল নগরী। যে দেশের ২ কোটির বেশি মানুষের নুন আনতে পান্তা ফুরায় সে দেশের রাজধানীর জীবনযাত্রার ব্যয়ের এই ঘোড়ারোগ অস্বস্তিকর বললেও কম বলা হবে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি সারা দেশের মানুষের জন্য দুঃসংবাদ বয়ে এনেছে। এ কথা ঠিক, গত এক যুগে মানুষের আয় বেড়েছে। একই সঙ্গে সমানতালে বেড়েছে আয়-ব্যয় বৈষম্য। জীবনযাত্রার ব্যয় যে হারে বাড়ছে সে হারে আয় বাড়ছে না নিম্ন ও মধ্যবিত্তের। যাদের সম্পদ বেশি তাদের সম্পদ বাড়ছে দ্রুতগতিতে। আর যাদের সম্পদ কম প্রয়োজন অনুযায়ী তাদের আয় বাড়ছে না। রাজধানীতে মাসিক আয়ের প্রায় তিন ভাগের দুই ভাগই ব্যয় হয় বাড়ি ভাড়ায়। সঙ্গে যোগ হয় পোষ্যদের স্কুল-কলেজের বেতন, যাতায়াত ভাড়া, চিকিৎসা ব্যয়। এ ছাড়া এর সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হয়েছে পিয়াজের খরচ। যেখানে ১৩০ টাকায় ৫ কেজি পিয়াজ কিনলে ছোট পরিবারগুলোর তিন মাস চলে যেত, সেখানে এখন ১ কেজি পিয়াজ কিনতে ১৩০-১৫০ টাকা ব্যয় হচ্ছে। আগে মানুষ সব ধরনের মসলার পেছনে যা ব্যয় করত এখন তার চেয়ে বেশি ব্যয় করতে হচ্ছে শুধু পিয়াজের পেছনে। আর আয়বৈষম্য তো আমাদের অর্থনীতির একটি পুরনো ইস্যু। কেননা দেশের সম্পদ অল্প কিছু মানুষের কাছে কেন্দ্রীভূত হয়ে পড়ছে। ফলে যাদের সম্পদ বেশি তারাই ধনী হচ্ছে। আর যাদের সম্পদ কম বা সম্পদ নেই তারা পড়ছে বিপাকে। জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষ সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। আয় বৃদ্ধির তুলনায় খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় তা লাভের গুড় পিঁপড়েয় গিলে খাওয়ার বিপদ সৃষ্টি করছে। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষের জীবন স্বভাবতই দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। বিশেষ করে মধ্যবিত্তদের জন্য চলছে দুঃসময়। দেশের লাখ লাখ উচ্চশিক্ষিত বেকারের জীবন তা আরও অসহনীয় করে তুলছে। এ অবস্থার মোকাবিলায় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারকে যতœবান হতে হবে। উৎসাহিত করতে হবে কর্মসংস্থানের সুযোগ; যা এখন সময়ের দাবি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর