বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

মুজিববর্ষ পালন

বাড়াবাড়ি নয়, কল্যাণ নিশ্চিত হোক

মুজিববর্ষ নিয়ে কোনো বাড়াবাড়ি ও অতি উৎসাহী না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভায় তিনি বলেছেন, এত উৎসাহী থাকলে ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর লাশ সেখানে পড়ে থাকত না। পরিবারের সদস্যদের রেড ক্রিসেন্টের কাপড় দিয়ে দাফন করা লাগত না। কাজেই কোনো বাড়াবাড়ি নয়, দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য কাজ করতে হবে। যেজন্য জাতির পিতা সারা জীবন কষ্ট করেছেন। আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা সময়োপযোগী ও তাৎপর্যের দাবিদার। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশকে সমার্থক শব্দ হিসেবে মূল্যায়ন করা হয়। পদ্মা মেঘনা যমুনা বুড়িগঙ্গা তীরের এই জনপদের কয়েক হাজার বছরের সবচেয়ে বড় অর্জন স্বাধীনতা এসেছে বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে। শত শত বছর ধরে যে জনপদ ছিল ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের শিকার সে জনপদ আজ সমৃদ্ধির পথে পা বাড়াতে সক্ষম হয়েছে স্বাধীনতা নামের পরশপাথরের কল্যাণে। এ স্বাধীনতার মহানায়ক ছিলেন বঙ্গবন্ধু। অথচ বঙ্গবন্ধু তাঁরই প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন দেশে সপরিবারে নিহত হন ষড়যন্ত্রকারীদের হাতে। সে সময়ও দেশে অতি উৎসাহীর অভাব ছিল না। বঙ্গবন্ধুর নামে যারা মুখে ফেনা তুলতেন, তাদেরও জাতির পিতার হত্যার প্রতিবাদে এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে স্বাধীনতার শত্রুরা প্রকারান্তরে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নসাধ একটি সুখী-সমৃদ্ধিশালী বাংলাদেশের প্রত্যাশাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। বিশ্বাসঘাতক চক্রের সে স্বপ্ন সফল হয়নি। মুজিব জন্মশতবার্ষিকীতে বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করার, ইতিহাসের মহানায়কের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর সবচেয়ে বড় উপায় নিজেদের দুঃখী মানুষের কল্যাণে নিবেদিত করা। এ ব্যাপারে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের দায়িত্ব অনেক বেশি। তারা নিজেরা নিবেদিত হওয়ার পাশাপাশি অন্যদের উদ্বুদ্ধ করলে মুজিববর্ষে দেশবাসীর অর্জন সমৃদ্ধ হবে। দেশের গরিব-দুঃখী মানুষের জন্য এ বছরটি মহাকল্যাণ হয়ে আবির্ভূত হবে। মুজিববর্ষ উপলক্ষে সরকারি দলের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়- এমন ধরনের কর্মসূচিই নেওয়া উচিত। মুজিববর্ষে বিনামূল্যে মানুষের চিকিৎসা, স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ঘর, রাস্তা, বাঁধ নির্মাণের কর্মসূচি নিলে মানুষ বঙ্গবন্ধুর অস্তিত্ব অনুভব করবে তাদের যাপিত জীবনে। মুজিববর্ষের নামে কেউ যাতে চাঁদাবাজি অথবা সাধারণ মানুষ বিরক্ত হয় এমন কোনো কর্মকান্ডে লিপ্ত হওয়ার সুযোগ না পায় সেদিকেও নজর রাখা জরুরি। জীবনভর মানুষের কল্যাণে অবদান রেখেছেন বঙ্গবন্ধু, তাঁকে শ্রদ্ধা জানানোর ক্ষেত্রে মানবকল্যাণের প্রত্যয়কে সব ক্ষেত্রে সামনে রাখতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর