শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

অন্ধ বানানোর শিক্ষালয়

অপরাধী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

বিকৃত মস্তিষ্কের অধিকারী যারা তারা শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেলে যা হয় তেমনটি হয়েছে বগুড়ার শাজাহানপুরের মালিপাড়ার গ্রামীণ একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজে। এই স্কুলের এক শিক্ষক এবং এক শিক্ষিকা সুশিক্ষা দানের বদলে কলম ছুড়ে শিক্ষার্থীর চোখ অন্ধ করে দেওয়াকে তাদের কর্তব্য হিসেবে বেছে নেওয়ায় দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে দুই শিশু। এর মধ্যে একটি ঘটনা ঘটেছে পাঁচ সপ্তাহ আগে, আরেকটি কয়েক মাস আগের। শিক্ষাদানের বদলে চোখ অন্ধ করার জংলিপনার শিকার হয়ে যারা চোখ হারিয়েছে তাদের চিকিৎসা ব্যয় বহনেও অস্বীকৃতি জানিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলো- উপজেলার মালিপাড়া গ্রামের সাইদুল ইসলামের ছেলে শাহ আলম ও রামচন্দ্রপুর গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে সোহান। শাহ আলম ওই বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ও সোহান সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। শিশু শাহ আলম জানায়, ১৪ জানুয়ারি স্কুলে কোচিং করার সময় লিখতে ভুল করায় ম্যাডাম তার দিকে কলম ছুড়ে মারে। সঙ্গে সঙ্গে চোখ দিয়ে রক্ত পড়তে শুরু করে। এর পর থেকে সে আর চোখ দিয়ে দেখতে পারছে না। ঘটনার পর প্রধান শিক্ষিকা লুৎফা জাহান ও পরিচালক আবু সাঈদ বাদশা বিদ্যালয়ের সুনামের স্বার্থে তার বাবা-মাকে চুপ থাকতে বলেন এবং চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয় বহনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শাহ আলমকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। কিন্তু চিকিৎসা খরচ বেশি শুনে পরদিনই ডাক্তারকে বলে ছাড়পত্র নেওয়া হয়। টাকা জোগাড়ের নামে এক মাস ঘুরিয়ে এক পর্যায়ে চিকিৎসা ব্যয় বহনে অস্বীকৃতি জানায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। একইভাবে কয়েক মাস আগে সোহানের চোখে কলম ছুড়ে অন্ধ করে দেন আরেক শিক্ষক। বিষয়টি ফাঁস হয়ে পড়ায় সাংবাদিকরা এ বিষয়ে স্কুল পরিচালক ও প্রধান শিক্ষিকার কাছে জানতে চাইলে তারা এগুলোকে পুরনো কথা বলে অভিহিত করেন। বলেন, নতুন করে বলার কী আছে? দুর্ঘটনা তো ঘটতেই পারে- এমন অজুহাত তুলে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ারও চেষ্টা করেন তারা। শাজাহানপুরের উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বলেছেন, তাদের এ বিষয়ে জানানো হয়নি। এ ধরনের ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় আনা জরুরি। আমরা দোষী শিক্ষকদের আইনের আওতায় আনা, ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের চিকিৎসার ব্যবস্থা ও উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি এ ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব জিইয়ে রাখা ঠিক হবে কিনা সে বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবেন- এমনটিই দেখতে চাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর