মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

ইসলাম জ্ঞানার্জনকে উৎসাহিত করেছে

আবদুর রশিদ

অজ্ঞানতা মানুষকে অন্ধকারাচ্ছন্ন করে রাখে। জ্ঞান সে অন্ধত্বকে দূর করে। যে কারণে ইসলামে জ্ঞান অর্জন ফরজ করা হয়েছে। আল কোরআন মানবজাতিকে জ্ঞানার্জনে উদ্বুদ্ধ করেছে। কোরআনের যে আয়াতটি প্রথম রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর অবতীর্ণ হয় তার শব্দার্থ হলো- ‘পড় তোমার প্রভুর নামে।’ (সূরা আল আলাক, আয়াত ১। সূরা কলমে আল্লাহ কলম ও লেখার শপথ ব্যক্ত করে জ্ঞানচর্চার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন ‘জ্ঞানার্জন প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরজ।’ কোরআনে জ্ঞানচর্চাকে তাকওয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে জ্ঞানীরাই কেবল তাঁকে ভয় করে।’ সূরা ফাতির, আয়াত ২৮। জ্ঞানী ও অজ্ঞ ব্যক্তিদের পার্থক্য নির্ণয় করে ইরশাদ হচ্ছে, ‘বলুন যারা জানে এবং যারা জানে না, তারা কি সমান হতে পারে।’ সূরা জুমার, আয়াত ৯। জ্ঞান মানুষকে আলোকিত করে, মনের অন্ধকার দূর করে। মনের অন্ধকার দূর করার জন্য আল্লাহর সহায়তা চাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে আল কোরআনে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে উদ্দেশ করে ইরশাদ হচ্ছে, ‘বলুন হে আমার পালনকর্তা! আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করুন।’ সূরা তোয়াহা, আয়াত ১১৫। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিপুলসংখ্যক হাদিসে জ্ঞানচর্চাকে উৎসাহিত করা হয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘জ্ঞানের কথা জ্ঞানী ব্যক্তির হারানো সম্পদ। যেখানেই সে তা পাবে সে-ই হবে এর যোগ্য অধিকারী।’ তিরমিজি থেকে মিশকাতে। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত আরেক হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘একজন বিজ্ঞ আলেম (ফকিহ) শয়তানের কাছে ইবাদতে লিপ্ত এক হাজার আবেদ লোকের চেয়ে অধিক ভয়ঙ্কর’। তিরমিজি থেকে মিশকাতে। এ হাদিসের আলোকে বলা যায়, একজন আবেদ ও জাহেদ (কঠোর সাধনায় লিপ্ত ব্যক্তি) নিজের সীমা পর্যন্ত ব্যক্তিগতভাবে ইসলামী শরিয়তের অল্পবিস্তর মাসালা-মাসায়েলের ওপর আমল করতে পারে। কিন্তু সে তার এই নেক আমলের দ্বারা একটা সমাজ-পরিবেশকে প্রভাবিত করতে পারে না। শয়তানের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করাও তার সাধ্যের বাইরে। এজন্য ইসলামী শরিয়তের সঠিক ও ব্যাপক জ্ঞানের অধিকারী আলেম ব্যক্তিই শয়তানের বিচলিত হওয়ার কারণ হতে পারেন। যে দীন ইসলাম জ্ঞানার্জনকে অবশ্যপালনীয় কর্তব্য হিসেবে চিহ্নিত করেছে তার অনুসারীদের অনেকেই এ সম্পর্কে সচেতন নয়। এ দুর্ভাগ্যের অবসান হওয়া উচিত।

                লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

 

সর্বশেষ খবর