শনিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

বুড়িগঙ্গার দূষণ

ধারেকাছের সব নদন্ডনদীর জন্যও বিপজ্জনক

বুড়িগঙ্গা এখন শুধু রাজধানী ঢাকা বা বাংলাদেশের নয়, দুনিয়ার অন্যতম দূষণাক্রান্ত নদী। সরকারের নানামুখী পদক্ষেপ সত্ত্বেও এ দূষণ কমছে না। এ নদীর পানি তার স্বাভাবিক রংও হারিয়ে ফেলেছে দূষণের কারণে। বুড়িগঙ্গার দূষণ দেশের অন্যসব নদীর জন্যও কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিবেশবিজ্ঞানীদের মতে, বুড়িগঙ্গার দূষণ ধারেকাছের অন্তত ছয়টি নদন্ডনদীর পানি দূষণে ভূমিকা রাখছে। বিষয়টি শুধু উদ্বেগজনকই নয়, আতঙ্কের। বুড়িগঙ্গার বিষ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে দেশের অন্য ছয় নদন্ডনদীতে। বর্ষাকালে এই দূষিত পানি বিভিন্ন নদন্ডনদী হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়। সদরঘাটের অতি পরিচিত দূষণ এখন আর বুড়িগঙ্গায় সীমাবদ্ধ নেই। তা ছড়িয়ে পড়ছে চাঁদপুর অঞ্চলের পদ্মা ও মেঘনার মোহনায়ও। বুড়িগঙ্গার দূষিত পানি দেশের বৃহৎ নদন্ডনদী পদ্মা, মেঘনা, আড়িয়াল খাঁ, গোমতী, ধলেশ্বরী আর শীতলক্ষ্যায়ও দূষণ ছড়াচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভয়াবহ এ দূষণ রোধ করতে না পারলে অদূর ভবিষ্যতে এসব নদন্ডনদীর পানিও ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে যাবে। নদীপথে ঢাকা থেকে বরিশাল অঞ্চলে প্রতিদিন ৭ শতাধিক নিবন্ধিত যাত্রীবাহী নৌযান চলছে। এসব যানে প্রতিদিন প্রায় ৩ লাখ মানুষ যাতায়াত করে। তাদের ত্যাগ করা কমপক্ষে ৩ হাজার ঘনমিটার বর্জ্য প্রতিদিন বুড়িগঙ্গাসহ বিভিন্ন নদন্ডনদীতে সরাসরি ফেলা হচ্ছে। বুড়িগঙ্গার পানি ইতিমধ্যে এতটাই বিষাক্ত হয়েছে যে, মাছ, পোকামাকড়সহ কোনো প্রাণীই এ পানিতে বেঁচে থাকতে পারছে না। প্রচ- দুর্গন্ধ থেকে বাঁচতে নাকে-মুখে রুমাল চেপে সদরঘাট ছাড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। শুধু মানববর্জ্যই নয়, শিল্পকারখানার বর্জ্য, রাজধানীর ময়লা-আবর্জনা ও নৌযানের সব ধরনের আবর্জনা নির্বিচারে বুড়িগঙ্গায় ফেলা হচ্ছে। দূষণের কারণে বুড়িগঙ্গা যেভাবে জলজ প্রাণীর জীবনধারণের অযোগ্য হয়ে পড়েছে তা উদ্বেগজনক। এ নদীর পানি ব্যবহার করতে বাধ্য হয় পাড়ের হাজার হাজার মানুষ। যে কারণে জনস্বাস্থ্যের জন্যও হুমকি সৃষ্টি করছে। বুড়িগঙ্গার পানি আরও বেশ কিছু নদন্ডনদীর পানি দূষণে ভূমিকা রাখায় এসব নদন্ডনদীর তীরের অধিবাসীরাও দূষণে আক্রান্ত হচ্ছে। এ সমস্যার সমাধানে নদী দূষণ রোধে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে হবে। নদীতে শিল্পবর্জ্য ও মানববর্জ্য ফেলা বন্ধে নিতে হবে কার্যকর ব্যবস্থা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর