শনিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

ভয়াবহ মাদক আগ্রাসন

অপরাধীদের দমনে কঠোর হতে হবে

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও মাদক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তাদের অব্যাহত অভিযান সত্ত্বেও মাদকের আগ্রাসী থাবা বন্ধ হচ্ছে না। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কঠোর পদক্ষেপের মধ্যেও মাদক ব্যবসায়ীরা চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের ব্যবসা। মাদক আমদানি, সরবরাহ ও বিপণনব্যবস্থা নির্বিঘ্ন রাখতে প্রতিনিয়তই তারা কৌশল পাল্টাচ্ছেন। নিত্যনতুন কৌশলে পাচার হওয়া মাদক ধরতে হিমশিম খাচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ইদানীং বাকপ্রতিবন্ধীদের মাধ্যমেও পাচার হচ্ছে ইয়াবা। বাকপ্রতিবন্ধীরা মাদকসহ ধরা পড়লেও তারা গডফাদারদের নাম-পরিচয় কিছুই জানাতে পারেন না, দিতে পারেন না স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি। অপ্রতিরোধ্য মাদক আগ্রাসন দেশের যুবসমাজের ভবিষ্যৎ অন্ধকারাচ্ছন্ন করে তুলছে। ইয়াবাসহ মাদকের থাবা প্রতিহত করতে সরকারি উদ্যোগের দৃশ্যত অভাব না থাকলেও এ আগ্রাসন কিছুতেই ঠেকানো যাচ্ছে না। মাদক ব্যবসার সঙ্গে রাজনৈতিক সাইনবোর্ড ব্যবহারকারী ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের সম্পর্ক থাকায় তারা যা ইচ্ছা তাই করার সুযোগ পাচ্ছেন। অভিযোগ করা হয়, ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার, চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে, উপজেলা চেয়ারম্যান এমনকি কোনো কোনো সংসদ সদস্যের সঙ্গে রয়েছে মাদক ব্যবসার সম্পর্ক। আশির দশকে এ দেশে হেরোইনের আগ্রাসন ঘটে। ওই দশকের শেষ দিকে ফেনসিডিল মাদকরাজ্যের পরিচালিকাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয় । নব্বই দশকের শেষ দিকে ইয়াবার আগমন ঘটে মাদকরাজ্যে। প্রথম দিকে এ আগ্রাসনকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এখন ইয়াবার থাবায় আক্রান্ত দেশের প্রায় প্রতিটি এলাকা। রাজধানীর অভিজাত তরুণ-তরুণীদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ইয়াবায় আসক্ত। এ নেশার অর্থ জোগাতে তারা জড়িয়ে পড়ছে নানা অপরাধে। তরুণীদের কেউ কেউ দেহপসারিণী হয়ে জোগাচ্ছে মাদক কেনার অর্থ। সিরিঞ্জের মাধ্যমে মাদক গ্রহণের প্রবণতাও বাড়ছে দ্রুতহারে। একই সিরিঞ্জে বিভিন্নজনের মাদক গ্রহণে এইচআইভি এইডস ও বি-হেপাটাইটিস ছড়িয়ে পড়ার বিপদ সৃষ্টি হচ্ছে। মাদকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বলে বিবেচিত ইয়াবা। এ মাদক নেশায় তৎক্ষণাৎ হৃৎস্পন্দন, রক্তচাপ ও শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। মস্তিষ্কের কিছু কোষের অপমৃত্যু ঘটে। এভাবেই হৃৎপি-, ফুসফুস ও কিডনি বিকলের দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন ইয়াবা আসক্তরা। এ মরণনেশা প্রতিরোধে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর