সোমবার, ২ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

মুসলমানের আচার ব্যবহার যেমন হবে

শাহ মাহমুদ হাসান

মুসলমানের আচার ব্যবহার যেমন হবে

ব্যবহারিক জীবনে ভালো ব্যবহার ও সদাচারের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই মানুষের সঙ্গে ভালো ব্যবহার ও ভালো আচরণ করার নির্দেশ দিয়ে আল্লাহতায়ালা বলছেন, ‘তোমরা মানুষের সঙ্গে উত্তম ও সুন্দর কথা বলো।’ (সূরা বাকারা : ৮৩)। যারা সবসময় মানুষের সঙ্গে ভালো কথা বলে, নমনীয়তা রক্ষা করে চলে তাদের সবাই অত্যন্ত পছন্দ করে ও শ্রদ্ধা করে। এমনকি আল্লাহতায়ালাও তাদের অত্যন্ত পছন্দ করেন। আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘যারা ক্রোধ সংবরণ করে এবং মানুষকে ক্ষমা করে থাকে (তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত)। আর আল্লাহ এমন সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন। (সূরা আল ইমরান : ১৩৪)। আমাদের প্রিয় নবী পথহারা মানব জাতিকে আলোর পথে এনেছিলেন তাঁর বিনয়, নমনীয়তা ও সর্বোত্তম আচরণের মাধ্যমে। তিনি বলেছেন, ‘যাকে নমনীয়তার অংশ দেওয়া হয়েছে তাকে সমগ্র কল্যাণের অংশ দেওয়া হয়েছে। নমনীয়তার অংশ হতে যাকে বঞ্চিত করা হয়েছে তাকে যাবতীয় কল্যাণের অংশ হতে বঞ্চিত করা হয়েছে।’ (তিরমিজি : ২০১৩)। এবং তিনি তাঁর উম্মতকেও সে ভাবে তৈরি করেছিলেন। রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা নিজেদের অন্তরে এ কথা বদ্ধমূল করে নাও যে, মানুষ তোমাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করলে তোমরাও ভালো ব্যবহার করবে। তারা তোমাদের সঙ্গে অন্যায় ব্যবহার করলেও তোমরা তাদের প্রতি জুলুম করবে না।’ (তিরমিজি : ২০০৭)। তিনি আরও বলেছেন, ‘যে তোমার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে তুমি তার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন কর। যে তোমাকে বঞ্চিত করে তুমি তাকে দান কর। আর যে তোমার ওপর জুলুম করে তুমি তাকে ক্ষমা কর।’ (মুসনাদে আহমদ : ১৭৪৫২)। মুমিন ও মুসলমানের পরিচয় দিতে গিয়ে তিনি বলেছেন, প্রতিবেশীর সঙ্গে ভদ্র ব্যবহার করলে প্রকৃত মুমিন হতে পারবে; যা নিজের জন্য যা পছন্দ কর তা যদি অন্যের জন্য পছন্দ করতে পারলে প্রকৃত মুসলমান হতে পারবে। (তিরমিজি : ২৩০৫)। ইসলামে গালিগালাজ, খারাপ ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কোনো মুমিনকে গালি দেওয়া ফাসেকি এবং তার বিরুদ্ধে লড়াই করা কুফরি।’ (বোখারি : ৪৮)। ইসলামে ভালো ব্যবহারকে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত বলে সাব্যস্ত করা হয়েছে। রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন একজন মুমিনের আমলনামায় ভালো আচরণের চেয়ে অধিক ভারী আমল আর কিছুই হবে না। আর যার ব্যবহার ভালো, সে তার ভালো ব্যবহারের কারণে নফল রোজা ও তাহাজ্জুদের সওয়াব লাভ করবে।’  (তিরমিজি : ২০০৩)। জাহান্নাম থেকে বাঁচার জন্যও তিনি ভালো ব্যবহারের শর্তারোপ করে বলেছেন, ‘তোমরা জাহান্নামের আগুন থেকে বেঁচে থাক, একটি খেজুর দিয়ে হলেও। যদি তা না পার তাহলে ভালো ব্যবহারের বিনিময়ে জাহান্নাম থেকে বাঁচ। (বোখারি : ১৪১৩)। আর ভালো ব্যবহারকারীদের জন্য জান্নাতের সুসংসবাদ প্রদান করে তিনি বলেছেন, ‘তোমরা পরস্পরে সালামের ব্যাপক প্রচলন কর, অনাহারী লোকদের আহার করাও, আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে ভালো ব্যবহার কর এবং লোকদের ঘুমিয়ে থাকার সময় নামাজ পড়; তাহলে তোমরা নিরাপদে জান্নাতে দাখিল হতে পারবে।’ (তিরমিজি : ২৪৮৫)।

সর্বশেষ খবর