শিরোনাম
সোমবার, ২ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান চুক্তি

শান্তি ফিরে আসুক আফগানিস্তানে

আফগান যুদ্ধের অবসানে দুই জাতশত্রু যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবান চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, এ চুক্তির বদৌলতে দেড় দশক ধরে দক্ষিণ এশীয় এ দেশটিতে যে গৃহযুদ্ধ চলছে তার অবসান ঘটানো সম্ভব হবে। কাতারের দোহায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এবং তালেবান নেতাদের উপস্থিতিতে এ চুক্তি সই হয়। এখন থেকে আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় দেশটির সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাবে তালেবান। দুই পক্ষের সমঝোতা অনুযায়ী, তালেবান জঙ্গিরা শর্ত মেনে চললে আগামী ১৪ মাসের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সব সৈন্য প্রত্যাহার করবে যুক্তরাষ্ট্র ও তার ন্যাটো মিত্ররা। চুক্তির ফলশ্রুতিতে এখন থেকে আফগানিস্তানে আর কোনো হামলা চালাবে না তালেবান। নিয়ন্ত্রিত এলাকায় জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়েদাকে কোনো তৎপরতা চালাতে না দেওয়ারও অঙ্গীকার করেছে তারা। ১৮ বছরের এ যুদ্ধে কী পরিমাণ আফগান বেসামরিক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও তালেবান সদস্যের প্রাণ গেছে, তার সঠিক পরিসংখ্যান বের করা দুরূহ। তবে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়-  যুদ্ধে ৩২ হাজারের বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। আর ব্রাউন ইউনিভার্সিটির ওয়াটসন ইনস্টিটিউটের তথ্যমতে, আফগান যুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনীর ৫৮ হাজার এবং বিরোধী পক্ষের ৪২ হাজার যোদ্ধা নিহত হয়েছে। আফগানিস্তানে অভিযানের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র  নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক যৌথ বাহিনীর প্রায় সাড়ে তিন হাজার সৈন্য নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে দুই হাজার ৪০০-এর বেশি যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্য। বর্তমানে ১২ হাজারের মতো বিদেশি সৈন্য এখনো আফগানিস্তানে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ যুদ্ধের সমাপ্তি টানার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ইসলামের নামে জঙ্গিবাদের সূচনা হয় তালেবানদের হাত ধরে। আফগানিস্তানে সোভিয়েত সমর্থিত সরকারের পতন ঘটাতে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা তাদের মিত্র সৌদি আরবের ধনাঢ্য পরিবারের সদস্য বিন লাদেনকে দিয়ে গড়ে তোলে তালেবান। তারা সোভিয়েত সমর্থিত সরকারের পতন ঘটাতে সামর্থ্য হয়। তবে জঙ্গিবাদের এ উত্থান যুক্তরাষ্ট্রের জন্যও সর্বনাশ ডেকে আনে। ২০০১ সালে টুইন টাওয়ার ধ্বংসে তালেবানের হাত ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তালেবানের চুক্তির বদৌলতে আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হলে তা হবে ট্রাম্পের জন্য বিরাট সাফল্য। আগামী নির্বাচনে জয়ী হতে তা অবদান রাখবে।

সর্বশেষ খবর