বুধবার, ৪ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

‘বীরনিবাস’ অর্থবহ হওয়া চাই

মিজানুর রহমান

‘বীরনিবাস’ অর্থবহ হওয়া চাই

মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে সরকার ‘বীরনিবাস’ নামে একটি গৃহায়ণ প্রকল্প হাতে নিয়েছে। প্রকল্প অনুসারে অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সরকার ১৬ হাজার বাড়ি করে দেবে; নির্মাণ করবে ৯০০ বর্গফুট আয়তনের এক তলা ভবন। এতে থাকবে তিনটি রুম ও ড্রইং-ডাইনিং স্পেস। প্রতিটি বাড়ি নির্মাণে খরচ হবে ১৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। বীরনিবাস প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পের নকশায় নীতিগত অনুমোদনও দিয়েছেন। আমরা মুক্তিযোদ্ধারা দেখেছি, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় থাকে জনগণের কল্যাণে নানা মহতী পদক্ষেপ নেয়। ‘বীরনিবাস’ প্রকল্পও একটি মহতী পদক্ষেপের ফল। জাতির জনকের কন্যা মুক্তিযোদ্ধাদের ঘর উপহার দেবেন মুজিববর্ষ উপলক্ষে। তাঁর নেওয়া মহতী উদ্যোগ অবশ্যই সার্থক করে তুলতে হবে। একাত্তরে যে মুক্তিযোদ্ধার বয়স ছিল ২০, তার এখন ৬৯ চলছে। দরপত্র ডেকে, ঠিকাদার নিয়োগ করে বাড়ি নির্মাণে যে দীর্ঘ সময় লাগবে তাতে অনেক মুক্তিযোদ্ধা তাদের স্বপ্নের ঘরে প্রবেশের আগেই কবরে চলে যেতে পারেন। এ ছাড়া সরকারি ঠিকাদার দ্বারা নির্মিত বাড়ির মান যে সঠিক হবে, তার গ্যারান্টি নেই। নির্মাণের দু-তিন বছরেই ভবনটি ধসে যেতে পারে। খটোমটো আরেকটি ব্যাপার হচ্ছে- ৪ শতাংশ জমি যিনি দেবেন তাকে ‘বীরনিবাস’ বাড়ি করে দেওয়া হবে। নিঃস্ব রিক্ত অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের নুন আনতে পান্তা ফুরায় দশা। তারা জমি দেবেন কোথা থেকে। তাদের তো জমিই নেই। জমি কেনার সামর্থ্যও নেই। এ অবস্থায় আমার প্রস্তাব : ১৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা নগদ দিয়ে দেওয়া হোক। তাহলে সংশ্লিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা জমি কিনে নিজেই ওখানে ঘর বানিয়ে বাস করতে পারবেন। নির্মাণের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে, নির্মাণকাজ সরকার কঠোরভাবে তদারক করলে সংশ্লিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা দ্রুততম সময়ে মানসম্পন্ন টেকসই ঘর বানাবেন। কারণ নিজের বাড়ি নির্মাণে দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়ার মতো আহাম্মকি কেউ করে না।

                লেখক : সাবেক কমান্ডার, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, নোয়াখালী জেলা ইউনিট কমান্ড।

সর্বশেষ খবর