বুধবার, ৪ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক

প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে আন্তরিকতা কাম্য

বাংলাদেশ সফরে এসে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তার দেশের জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) প্রতিবেশী কোনো দেশে প্রভাব ফেলবে না। অভিন্ন নদ-নদীর পানি বণ্টন নিয়েও তার কণ্ঠে ছিল আন্তরিকতার সুর। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের আগে শ্রিংলার বাংলাদেশ সফরকে প্রস্তুতিমূলক হিসেবে দেখা হচ্ছে। এ সফরে এনআরসি সম্পর্কে বাংলাদেশের মানুষের উদ্বেগের অবসানে তার প্রতিশ্রুতি গুরুত্বের দাবিদার। অভিন্ন নদ-নদীর পানি বণ্টন সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি না দিলেও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফরকালে বরফ যে কিছুটা গলবে তা স্পষ্ট হয়েছে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে। স্মর্তব্য, মুজিববর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এ সফরের জন্য ভারত উন্মুখ- এমন মন্তব্যই তিনি করেছেন বাংলাদেশি প্রতিপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে। তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সইয়ের ব্যাপারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, অভিন্ন নদ-নদীগুলোর পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে দুই দেশেরই আগ্রহ রয়েছে। এসব নদ-নদীর পানির তথ্য হালনাগাদ করে সমন্বয়ের প্রক্রিয়া চলছে। এ বছরের মধ্যেই অভিন্ন নদ-নদীর পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনার আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, ৫৪টি অভিন্ন নদ-নদীর পানি পরিবেশবান্ধব, টেকসই ও ন্যায্য বণ্টন করার মধ্যেই দুই দেশের বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থ নিহিত। দুই পক্ষই স্বীকার করে যে, অভিন্ন নদ-নদী বিষয়ে আরও উন্নতির সুযোগ আছে এবং এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে গত আগস্টেই দুই পক্ষের মধ্যে সংলাপ শুরু হয়েছে। ভারতের জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন প্রসঙ্গে শ্রিংলার বক্তব্য- ভারতের প্রধানমন্ত্রী বারবার বাংলাদেশ সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে আশ্বস্ত করেছেন এ প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণভাবে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সুতরাং বাংলাদেশের জনগণের ওপর এর কোনো প্রভাব থাকবে না। নাগরিকত্ব বিল কোনো ধর্মের বিরুদ্ধেও নয়। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে। এ বন্ধুত্বকে টেকসই করতে তিস্তাসহ সব অভিন্ন নদ-নদীর পানি বণ্টনে ন্যায্যতাভিত্তিক চুক্তিতে পৌঁছানো জরুরি। দুই বন্ধু দেশের আবেগের কথা মনে করেই বাংলাদেশের কাছে দেওয়া ভারতের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে দিল্লিকে যত্নবান হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর