বুধবার, ৪ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

সড়ক দুর্ঘটনা

বন্ধ হোক মৃত্যুর মিছিল

সড়ক দুর্ঘটনায় রাশ টানা কিছুতেই সম্ভব হচ্ছে না এবং এটি জাতীয় দুর্ভাগ্যে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিনই গড়ে সড়কে ঝরে পড়ছে অন্তত ২০টি প্রাণ। আহতের সংখ্যাও অনেক। দুর্ঘটনার সব তথ্য সংবাদমাধ্যমে অথবা আইন প্রয়োগকারীদের হাতে পৌঁছে না। তার পরও যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফেব্রুয়ারিতে ২৯ দিনে ৫০৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৩৪ ব্যক্তির প্রাণহানি ঘটেছে এবং ১৬৯ জন আহত হয়েছেন। বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে সংস্থাটি। তাদের হিসাবে জানুয়ারির তুলনায় ফেব্রুয়ারিতে সড়ক দুর্ঘটনায় আহতের হার বেড়েছে ২.৪৫ শতাংশ। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারিতে সড়ক দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি নিহত হয়েছেন পথচারী ১৮৭ জন। তবে দুর্ঘটনার বেশি শিকার হয়েছেন শিক্ষার্থীরা- ২৬০ জন, এরপর পথচারী ২১২ জন, গাড়িচালক ১৩৪ জন, পরিবহন শ্রমিক ৭৩ জন। সংঘটিত দুর্ঘটনায় জড়িত বাহনের মধ্যে ২৭.৯৩ শতাংশ ছিল ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান, ২০.৯৫ শতাংশ ছিল মোটরসাইকেল, ১৫.৭৫ শতাংশ বাস, ১২.৩৩ শতাংশ নসিমন-করিমন-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ১০.৫৪ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৮.১৭ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৪.৩০ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস। ফেব্রুয়ারিতে দুর্ঘটনার ৫৭.৫৩ শতাংশ ছিল গাড়িচাপা, ১৮.০৫ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৬.৬৭ শতাংশ ঘটনা গাড়ি খাদে পড়ে। ৪৫.০৪ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটে আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২৬.১৯ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২৩.০২ শতাংশ ফিডার রোডে। সড়ক দুর্ঘটনায় এক মাসে ৫ শতাধিক মানুষের মৃত্যুর পরিণতিতে সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলোর জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। নিহতের এক বড় অংশ পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি। গাড়িচালক ও পথচারীরা একটু সতর্ক হলেই এসব দুর্ঘটনার সিংহভাগ এড়ানো যেত। বাংলাদেশের দুই প্রধান নগরী ঢাকা ও চট্টগ্রামে দেশের এক-অষ্টমাংশ লোক বসবাস করে। জনজটের কারণে এ দুই মহানগরীতে সর্বাধিক গাড়ি চলাচল করা সত্ত্বেও দুর্ঘটনা কম। কিন্তু কখনো রাস্তা একটু ফাঁকা হলেই যানবাহন চালকরা বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। বিশেষ করে বাসচালকদের মধ্যে পাল্লা দেওয়ার প্রবণতা জেঁকে বসে। সড়ক দুর্ঘটনার রাশ টানতে হলে ট্রাফিক পুলিশ, চালক, যাত্রী, পথচারী- সবার মধ্যে দায়িত্বশীল মনোভাবের উন্মেষ ঘটাতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর