শুক্রবার, ৬ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

বিদেশ সফরের বিলাসিতা

অপচয় বন্ধের উদ্যোগ প্রশংসনীয়

প্রশিক্ষণের নামে সরকারি খরচে বিদেশ সফরের সাধ মেটানো একশ্রেণির সরকারি কর্মকর্তার মজ্জাগত অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এসব প্রশিক্ষণ দেশের কোনো কাজে লাগুক না লাগুক তাতে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী নামের মহাপ্রভুদের কিছু আসে যায় না। কারণ লাগে টাকা দেবে গৌরী সেন। জনগণ নামের অসহায়দের ট্যাক্সের টাকা অপচয় করতে যে তাদের বাধে না তার প্রকৃষ্ট প্রমাণ পুকুর কাটার জন্যও কর্তাব্যক্তিরা ইউরোপীয় দেশগুলোয় সফরে যান! সরকারি কর্মকর্তা নামে দেশের জনগণের টাকায় যাদের পোষা হয়, তারা কতটা যোগ্য, কতটা বোধ-বিবেচনাসম্পন্ন তা পুকুর কাটার কলাকৌশল বিদেশে গিয়ে শেখার কসরতে প্রমাণিত হয়। অবসরের আগে যখন প্রশিক্ষণের কোনো প্রয়োজন থাকার কথা নয়, তখন এসব মহারথীর বিদেশ ভ্রমণের প্রবণতা বেড়ে যায়। এলোমেলো করে দে ভাই লুটেপুটে খাই তত্ত্বের প্রবক্তা ঊর্ধ্বতন কর্তাব্যক্তিরা তা অনুমোদনও করেন যথেচ্ছভাবে। আশার কথা, অবসরের আগে বিদেশে প্রশিক্ষণে আপত্তি জানিয়েছে সংসদীয় কমিটি। কমিটির অভিমত, বিদেশ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসে কর্মক্ষেত্রে তা প্রয়োগের আগেই অনেক সরকারি কর্মকর্তা অবসরে চলে যান। এজন্য অবসরে যাওয়ার অন্তত চার বছর আগে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশে প্রশিক্ষণে পাঠানোর শর্ত যুক্ত করার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। বিদেশি প্রশিক্ষণের অভিজ্ঞতা কর্মক্ষেত্রে কাজে লাগানোর জন্য মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। সংসদ ভবনে বুধবার অনুষ্ঠিত বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়। বৈঠকে একজন সদস্য বিদেশে প্রশিক্ষণের বিষয়টি উত্থাপন করে বলেন, মাটি কাটা, পুকুর খনন দেখার মতো বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতেও বিদেশ যাচ্ছেন কর্মকর্তারা। আবার এমন কর্মকর্তাও সরকারি টাকা খরচ করে প্রশিক্ষণে যাচ্ছেন, যারা কিছুদিন পরই অবসরে যাবেন। ফলে এ প্রশিক্ষণ দেশের কোনো কাজে লাগে না। আমরা সংসদীয় কমিটির এ সুপারিশকে স্বাগত জানাই এবং আশা করতে চাই- সরকারি অর্থের অপচয় বন্ধে বিদেশে প্রশিক্ষণের নামে তামাশা বন্ধ হবে। দেশবাসীর ট্যাক্সের টাকার অপচয় রোধে বিদেশে যারা প্রশিক্ষণ নেবেন তাদের অভিজ্ঞতা যাতে কাজে লাগানো যায় সে বিষয়েও নজর রাখা উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর