সোমবার, ৯ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

রোজায় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ

আগাম প্রস্তুতি প্রশংসাজনক

সভ্য দুনিয়ায় ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে দ্রব্যমূল্যের দাম কমিয়ে আনা হয়। মানুষ যাতে উৎসবে শরিক হতে পারে সে জন্য ব্যবসায়ীরা মুনাফা কম করার সিদ্ধান্ত নেয়। আমাদের দেশে ঘটে ঠিক এর বিপরীত ঘটনা। এ দেশে মাহে রমজান কিংবা ঈদের আগে প্রতিটি নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যায়। সিয়াম সাধনা বা কৃচ্ছ্রতার শিক্ষা দেয় যে রমজান, সে সময় মূল্যবৃদ্ধির দাপটে বিব্রতবোধ করেন রোজাদাররা। সাংবাৎসরিক এই বিড়ম্বনা এড়াতে এ বছর আগাম তৎপরতা শুরু হয়েছে। রমজানে অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে পণ্য মজুদ করে রেখে বা সিন্ডিকেট গড়ে দ্রব্যমূল্য বাড়াতে না পারে সেই লক্ষ্যে সরকার এবার নিজেই পণ্য মজুদের উদ্যোগ নিচ্ছে। পণ্য মজুদে যাতে কোনো সমস্যা না হয় সে জন্য দেশের বিভাগীয় ও গুরুত্বপূর্ণ জেলায় গুদাম খালি রাখার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসিদের কাছে চিঠি পাঠানোর সুপারিশ করেছে রাষ্ট্রীয় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে দেশের ১২টি জেলায় ১০ থেকে ২০ হাজার মেট্রিক টন ধারণক্ষমতার গুদাম খালি রাখার সুপারিশ করেছে সংস্থাটি। ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, রংপুর, বরিশাল, মৌলভীবাজার, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, মাদারীপুর, ঝিনাইদহ ও বগুড়া জেলার সংশ্লিষ্ট গুদামগুলো আগামী ১ এপ্রিল থেকে ৩০ মে পর্যন্ত টিসিবি ব্যবহার করবে। রমজান উপলক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ বাস্তবায়ন করতে টিসিবি মোট ১ লাখ ২১ হাজার মেট্রিক টন পণ্য সংগ্রহ ও বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে ৫০ হাজার মেট্রিক টন ভোজ্যতেল, ৩০ হাজার মেট্রিক টন চিনি, ৩০ হাজার মেট্রিক টন পিয়াজ, ৮ হাজার মেট্রিক টন ছোলা, ৩ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল এবং ৫০০ মেট্রিক টন খেজুর সংগ্রহ করবে সংস্থাটি। রমজানে নিত্যপণ্যের দাম মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা সরকারের সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হয়। এ কথা ঠিক, রমজান উপলক্ষে গত এক দশকে সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে মোটামুটিভাবে সাফল্য দেখিয়েছে। তবে চলতি বছর প্রায় প্রতিটি নিত্যপণ্যের দাম আগে থেকে চড়া থাকায় রমজানে পরিস্থিতি বেসামাল হয়ে যে উঠবে না এমন নিশ্চয়তা কম। এ প্রেক্ষাপটে রমজানে সেহরি ইফতারিতে ব্যবহৃত পণ্যগুলোর পর্যাপ্ত মজুদ গড়ে তোলার উদ্যোগ বাস্তবসম্মত ও প্রশংসার দাবিদার।

সর্বশেষ খবর