মঙ্গলবার, ১০ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

নারীর অংশীদারিত্ব

রাজনৈতিক দলগুলোর সুমতি হোক

বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধি রাখার বিধান থাকলেও এক যুগেও তা পূরণ হয়নি। নারীর ক্ষমতায়নে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ অগ্রসর ভূমিকা পালন করলেও তাদের কমিটিগুলোয় নারী প্রতিনিধি ২৬ শতাংশের বেশি নয়। সাংগঠনিক দিক থেকে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম দল বিএনপির কমিটিতে নারী প্রতিনিধি ২০ শতাংশের কাছাকাছি। নারী প্রতিনিধির ক্ষেত্রে পিছিয়ে ইসলামী দলগুলো। এসব দলের কমিটিতে শতকরা ১ ভাগ নারীও নেই। সোজা কথায়, কেন্দ্রীয় কমিটিসহ দলের বিভিন্ন স্তরের কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধি নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক দলগুলো ব্যর্থ হয়েছে। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলে নারীর প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী অংশীদার নির্ধারণ করে। নির্বাচন কমিশন এখন বলছে, নিবন্ধিত দলগুলো চাইলে এ বিষয়ে আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের সময় বাড়ানো হবে। নারীর অংশীদারিত্ব সম্পর্কিত অগ্রগতি জানাতে দলগুলোকে শিগগিরই চিঠি দেবে কমিশন। স্মর্তব্য, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ৯০-এর খ-এর খ(২) অনুচ্ছেদে কেন্দ্রীয় কমিটিসহ রাজনৈতিক দলের সর্বস্তরের কমিটিতে অন্তত ৩৩ শতাংশ পদ নারী সদস্যদের জন্য সংরক্ষণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ এবং ২০২০ সালের মধ্যে সে লক্ষ্য অর্জনের কথা বলা হয়েছে। ২০০৮ সালে নির্বাচন কমিশনে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রথা চালু হয়। এরপর এক যুগ পার হয়েছে। চলতি বছরের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে পারবে এমন সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। বিশেষ করে ইসলামী দলগুলো মনস্তাত্ত্বিকভাবে তাদের দলের কমিটিতে নারী প্রতিনিধি রাখার ব্যাপারে উৎসাহী নয়। গত এক যুগে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মতো বড় দলগুলোর পক্ষ থেকেও নারী প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর দৃষ্টিগ্রাহ্য কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে নির্বাচন কমিশন শেষ পর্যন্ত নারী প্রতিনিধিত্ব রাখার লক্ষ্যমাত্রা ২০২০ সাল থেকে পিছিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেবে বলেই মনে হচ্ছে। রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব কাঠামোয় অংশগ্রহণ নারীর ক্ষমতায়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে- এমনটিই আশা করা হয়। এ ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোকে উদ্যোগী করতে নির্বাচন কমিশনকে সক্রিয় হতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর সুমতি সৃষ্টিতে চাপ অব্যাহত রাখতে হবে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর