শুক্রবার, ১৩ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে

সড়ক যোগাযোগে অনন্য সংযোজন

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে চালু হয়েছে গতকাল; যা দেশের সড়ক যোগাযোগব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য সংযোজন বলে বিবেচিত। প্রধানমন্ত্রী গতকাল সকাল ১০টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এর উদ্বোধন ঘোষণা করেছেন। দেশের প্রথম প্রবেশ-নিয়ন্ত্রিত এই এক্সপ্রেসওয়ের কল্যাণে পদ্মা সেতু চালুর পর রাজধানীর হানিফ ফ্লাইওভার থেকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ৫৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়া যাবে মাত্র ৪২ মিনিটে। তবে এই এক্সপ্রেসওয়ের সুফল গতকাল থেকেই পাচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। ঢাকার হানিফ ফ্লাইওভার থেকে মাওয়া পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার পথ এখন পাড়ি দিতে লাগবে মাত্র ২৭ মিনিট। ঢাকা-ভাঙ্গা ৫৫ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালের জুলাইয়ে এবং শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৯ সালের জুনের মধ্যে। সব মিলিয়ে ১১ হাজার ৩ কোটি ৯১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ প্রকল্পটি পদ্মা নদীর কারণে দুটি ভাগে বিভক্ত। এর একটি অংশ ঢাকার যাত্রাবাড়ী হানিফ ফ্লাইওভার থেকে মাওয়া পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার। অন্য অংশে পদ্মার ওপারে পাঁচ্চর থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার। চলতি মার্চের প্রথম সপ্তাহেই প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ শেষ হয়েছে। এতে আছে ৫৪টি কালভার্ট, চারটি রেলওয়ে ওভারপাস, পাঁচটি ফ্লাইওভার, ২০টি পাতালপথ বা আন্ডারপাস, ২৯টি মাঝারি ও ছোট সেতু, দুটি ইন্টারচেঞ্জ ও দুটি টোল প্লাজা। দেশের প্রথম প্রবেশ-নিয়ন্ত্রিত এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের নির্মাণকাজ সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতরের তত্ত্বাবধানে সম্পন্ন করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর স্পেশাল ওয়ার্কস অর্গানাইজেশন। ফলে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের ক্ষেত্রে সর্বোত্তম মান রক্ষার দিকে যে নজর দেওয়া হয়েছে তা সহজে অনুমেয়। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধনের ফলে পদ্মা সেতু চালুর আগেই রাজধানীর সঙ্গে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সড়কপথে যাতায়াত কিছুটা হলেও সহজতর হবে। বাস-ট্রাকের যাতায়াত সময় অন্তত এক ঘণ্টা কমবে। রেললাইনসহ পদ্মা সেতু ও এক্সপ্রেসওয়ের কল্যাণে রাজধানী থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বৃহত্তম নগরী খুলনায় যাওয়া-আসা করা যাবে চার ঘণ্টার মধ্যে। এখন গড়ে সময় লাগে দুই থেকে তিন গুণ সময়। সহজ যোগাযোগের কল্যাণে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে উঠবে দেশের অন্যতম প্রধান উৎপাদন কেন্দ্র। এ এলাকার কয়েক কোটি মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে যা অবদান রাখবে বলে আশা করা যায়। দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতেও পদ্মা সেতু এবং ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে আশীর্বাদ বলে বিবেচিত হবে।

সর্বশেষ খবর