সোমবার, ১৬ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

সাংবাদিক দলন

গর্হিত কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকুন

সাংবাদিকদের ওপর মামলা, হামলা ও নিখোঁজ হওয়ার চারটি ঘটনা পরপর সংঘটিত হওয়ায় দেশের মত প্রকাশের স্বাধীনতা সম্পর্কে বহির্বিশ্বে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, তারা সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অথচ মাত্র দুই দিনের মধ্যে মানবজমিনের প্রধান সম্পাদককে হয়রানিমূলক মামলায় জড়ানো, বাংলাদেশ প্রতিদিনের মেহেরপুর প্রতিনিধির বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা, কুড়িগ্রামে জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে সংবাদ পরিবেশনের জের হিসেবে মধ্যরাতে সাংবাদিককে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে নির্যাতন ও মোবাইল কোর্ট বসিয়ে জেল জরিমানা এবং রাজধানীতে অফিসে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর থেকে এক সাংবাদিকের উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনা দেশে ও বিদেশে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। সাংবাদিক নির্যাতন ও নিগ্রহের এসব ঘটনা মত প্রকাশের স্বাধীনতার প্রতি সরকারের অঙ্গীকার সম্পর্কেও সংশয়ের জন্ম দিচ্ছে। ইতিমধ্যে সংবাদ মাধ্যম সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠন মামলা ও হামলার তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেছে। সাংবাদিকদের অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে) বাংলাদেশে সাংবাদিক নিগ্রহের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সিপিজে এক বিবৃতিতে বলেছে, মাগুরা-১ আসনের ক্ষমতাসীন দলের এমপি সাংবাদিক কাজলসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করার পর থেকে কাজল নিখোঁজ রয়েছেন। যে ডিজিটাল আইনের আওতায় এ মামলা করা হয়েছে সিপিজে প্রথম থেকেই আইনটির বিরোধিতা করছে। তারা বলেছিল আইনটি সাংবাদিকদের পেশাগত কাজ করার ক্ষেত্রে আইনগত এক বিশাল বিপদ সৃষ্টি করবে। তাদের সে কথাই সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে ৩১ জনের বিরুদ্ধে ওই বিতর্কিত আইনে মামলা করার ঘটনায়। সংবাদ মাধ্যম এবং সংবাদকর্মীদের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র একে অপরের পরিপূরক। সাংবাদিক দলনের ঘটনা বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে, যা সরকারের জন্য সুখবর হওয়ার কথা নয়। আমাদের বিশ্বাস নিজেদের সুনামের স্বার্থেই সরকার সাংবাদিক দলনের হোতাদের সামাল দেবে। সংবাদ মাধ্যমকে প্রতিপক্ষ করার অবিমৃশ্যকারিতা থেকে সরে আসবে। নিজেদের গণতন্ত্র বিশ্বাসী বলে ভাবতে চাইলে সংবাদ মাধ্যম এবং সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে কা-জ্ঞানবর্জিত কর্মকা- থেকে তাদের বিরত থাকা উচিত। এ ব্যাপারে তারা শুভবুদ্ধির পরিচয় দেবে এমনটি প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর