শিরোনাম
মঙ্গলবার, ১৭ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

মহানায়কের জন্মশতবার্ষিকী

স্বাধীনতা শুধু নয় উন্নয়নেও তাঁর উপস্থিতি

জাতির পিতা সর্বকালের সেরা বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী আজ। স্বাধীনতার মহানায়কের জন্মশত বছরকে কৃতজ্ঞ জাতি ‘মুজিববর্ষ’ হিসেবে পালন করছে। সুস্বাগত মুজিববর্ষ। একজন ব্যক্তি কীভাবে আপন মহিমায় ইতিহাসের বরপুত্র হয়ে উঠতে পারেন, কীভাবে নিঃস্বার্থভাবে লড়তে পারেন দেশের মানুষের অধিকার এবং স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তারই প্রতিকৃতি। বাঙালি জাতির পরিচিতি ছিল বীরের জাতি হিসেবে সেই বৈদিক যুগেও। গ্রিক বীর আলেকজান্ডারের সময়ও সমীহ করা হতো এ জাতির সাহস ও বীরত্বকে। হাজার হাজার বছর আগে রোমান কবি ভার্জিলেন কবিতায় পদ্মা মেঘনা যমুনা বুড়িগঙ্গা পাড়ের অধিবাসীদের বীরগাথা ধ্বনিত হয়েছে। সে উজ্জ্বল দিনগুলোর অবসান ঘটিয়ে আসে কালো অন্ধকারে ভরা দিন। পরাধীনতার শিকলে আবদ্ধ হয় বাঙালিরা। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালি জাতি সে অভিশপ্ত অধ্যায়ের অবসান ঘটাতে সক্ষম হয়। বঙ্গবন্ধুর হৃদয়জুড়ে ছিল দেশের মানুষের প্রতি ভালোবাসা। দুনিয়ার ইতিহাসে তার মতো জনপ্রিয় কোনো নেতার অভ্যুদয় হয়নি। ১৯৭০-এর নির্বাচনে বাংলাদেশের দুটি আসন বাদে সব কটিতে জয়ী হয় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ। কিন্তু পাকিস্তানি সামরিক জান্তা এবং কায়েমি স্বার্থবাদ বঙ্গবন্ধুর হাতে পাকিস্তানের শাসন ক্ষমতা ছাড়তে রাজি হয়নি। শুরু হয় এ অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। শুরু হয় অসহযোগ আন্দোলন। ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর অঙ্গুলি হেলনে পরিচালিত হয়েছে বাংলাদেশের মানুষ, পুরো বাংলাদেশ। সেনানিবাস ছাড়া কোথাও পাকিস্তানি শাসনের অস্তিত্ব ছিল না। ১৯৭৫ সালের ২৫ মার্চ রাতের আঁধারে পাকিস্তানি হানাদাররা বাঙালিদের ওপর গণহত্যায় মেতে উঠলে বঙ্গবন্ধু ২৬ মার্চের সূচনালগ্নে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। তার পরপরই পাকিস্তানি হানাদাররা বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করলেও বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনা অনুযায়ী বাঙালি জাতি ঝাঁপিয়ে পড়ে মুক্তিযুদ্ধে। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ছিল মুক্তিযুদ্ধের অনুপ্রেরণা শক্তি। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ শত্রু মুক্ত হওয়ার ২৪ দিন পর পাকিস্তান কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে স্বদেশে ফিরে আসেন। দেশ পুনর্গঠনে নেমে পড়েন শূন্য অবস্থা থেকে। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পাকিস্তানি চরদের হাতে নিহত হন ইতিহাসের মহানায়ক। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে কেড়ে নেওয়ারই চেষ্টা করা হয়। কিন্তু মেঘ দিয়ে সূর্যকে যেমন ঢাকা যায় না তেমন বঙ্গবন্ধুর অজেয় আদর্শকে পরাভূত করতে পারেনি পঁচাত্তরের খুনিরা। বঙ্গবন্ধু আরও উজ্জ্বল হয়ে প্রতিস্থাপিত হয়েছেন জাতির হৃদয়ে। বাংলাদেশকে উন্নতির শিখরে ওঠার যে সংগ্রাম চালাচ্ছে আজ দেশের ১৬ কোটি মানুষ, সেখানেও অনুভূত হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতি। অমরতা একেই বলে।

সর্বশেষ খবর