বুধবার, ১৮ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা

আইনের শাসনের জন্য প্রাসঙ্গিক

সংবাদমাধ্যমকে বলা হয় রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। দেশের বিচার বিভাগের পক্ষ থেকেও এ স্তম্ভের গুরুত্বকে স্বীকার করার ঔদার্য্য দেখানো হয়েছে এবং বলা হয়েছে, সংবাদমাধ্যম ঠিকমতো কাজ করলে রাষ্ট্রের তিন স্তম্ভও ঠিকমতো চলবে। সোমবার এক রিট আবেদনের শুনানি শেষে হাই কোর্ট সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে গভীর রাতে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে সাজা দেওয়া-সংক্রান্ত মামলার সব নথি তলব করেছে। একই সঙ্গে ওই ঘটনায় জড়িত কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীনসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা আগামী সোমবারের মধ্যে আদালতকে জানাতে রাষ্ট্রপক্ষকে বলা হয়েছে। বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ সংবাদমাধ্যমকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে অভিহিত করে বলেছে, সংবাদমাধ্যম যদি ঠিকমতো কাজ করে তাহলে রাষ্ট্রের অন্য তিন স্তম্ভ (আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগ) ঠিকভাবে কাজ করবে। আদালত বলেছে, তাদের প্রথম উদ্দেশ্য হচ্ছেÑ সাংবাদিক আরিফ যেন বিচার পান। তাকে বিচার দিতে পারলে আদালতের প্রচেষ্টা সফল হবে। শুনানিতে রিটকারীর আইনজীবী বলেন, জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে রিপোর্ট প্রকাশের জেরেই রাতের আঁধারে বসতঘরের দরজা ভেঙে সাংবাদিককে ধরে এনে মোবাইল কোর্টে সাজা দেওয়া হয়েছে। ক্ষমতা আছে বলেই কোনো নাগরিককে এভাবে ধরে এনে সাজা দেওয়া যায় না। এটা ক্ষমতার অপব্যবহার। এ প্রসঙ্গে আদালত বলে, একজন পদধারী ব্যক্তি রাষ্ট্র বা সরকারকে প্রতিনিধিত্ব করেন না। কোনো পদধারী ব্যক্তি যদি অপরাধ করেন এবং তার বিরুদ্ধে যদি ব্যবস্থা নেওয়া হয় তাহলে সেটা আইনের শাসন। আর যদি ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে সেটা হবে আইনের লঙ্ঘন। সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের অধিকারের প্রতি আদালতের স্বীকৃতি বিশেষ তাৎপর্যের দাবিদার। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় পদধারী ব্যক্তিদের অপরাধকে আমলে নেওয়ার যে তাগিদ প্রকাশ করা হয়েছে আদালতের পক্ষ থেকে, তা আইন লঙ্ঘনকারীদের জন্য হুঁশিয়ারি হিসেবে বিবেচিত হবে। সুশাসনের জন্য যা খুবই প্রাসঙ্গিক এবং প্রত্যাশিত।

সর্বশেষ খবর