করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়েছে পণ্যবাজারে। এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে গেলে স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হতে পারে- এমন আশঙ্কায় অনেকেই চাল ডাল তেল আলুসহ নিত্যপণ্য কিনে রাখছেন। ফলে এসব পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ থাকা সত্ত্বেও মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা দানা বেঁধে উঠছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাজারের দিকে সরকারের তীক্ষè নজর রাখা উচিত। করোনাভাইরাসের কারণে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা যে নেই সে বিষয়ে সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করা উচিত। বাজার বিশ্লেষকরা ভোক্তাকে আশ্বস্ত করার পাশাপাশি বাজারের ওপর নজরদারি বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। তা না হলে মানুষ অযথা মজুদ বাড়ানোর জন্য বাজারে হুমড়ি খেয়ে পড়লে অনাকাক্সিক্ষত সংকট দেখা দেবে। সরকারের উচিত হবে যাতে কৃত্রিম সংকট কেউ সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকও নজরে রাখা। আক্রান্ত দেশগুলোর মতো পণ্যের সরবরাহ ঘাটতি দেখা দিতে পারে- ভোক্তাদের এমন আশঙ্কা অমূলক নয়। তাই এখন সরকারের উচিত হবে বাজার পরিস্থিতি নজরে রাখা। যদি বাজারে পণ্যের ঘাটতি হয় তা পূরণ করা। এ ছাড়া মাঝেমধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে ভোক্তাকে আশ্বস্ত করা যাতে দুশ্চিন্তা দূর হয়। এতে বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে। নিত্যপণ্যের দাম গত কয়েকদিন কিছুৃটা বাড়লেও সবজির দাম বাড়েনি। সবজি যেহেতু শতভাগ দেশেই উৎপাদিত হয় এবং এটি মজুদ রাখা যায় না সেহেতু মূল্যবৃদ্ধির ছোবল সবজির বাজারে আঘাত হানেনি। সবজির মধ্যে আলু, পটোল, শিম, লাউ, টমেটো, করলাসহ প্রায় সবকিছুর দাম আগের মতো স্থিতিশীল থাকলেও কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে ঢেঁড়সসহ কয়েকটি সবজির দাম। এ ছাড়া পিয়াজের সরবরাহ বাড়লেও চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দাম আর কমেনি। খুচরায় আগের মতো ৪০ টাকা কেজিতেই পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে। করোনাভাইরাস ইতিমধ্যে দেশের অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত অবস্থায় ফেলেছে। রাস্তাঘাটে মানুষের ভিড় কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে। বিদেশ থেকে কয়েক লাখ কর্মজীবী মানুষ দেশে ফিরেছে; যার প্রতিক্রিয়ায় রেমিট্যান্স আয় হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কমেছে রপ্তানি আয়। আমদানিও পড়ন্ত। ফলে সরকারের পক্ষে চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ অসম্ভব হয়ে পড়বে। এ অবস্থায় নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে না পারলে সরকারের বিড়ম্বনা বাড়বে।