করোনাভাইরাস পরীক্ষার কিট তৈরির জন্য গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র সরকারের ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের অনুমতি পেয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি এর আগে জানিয়েছিল এ ব্যাপারে তাদের প্রস্তুতি ও লোকবল দুটিই রয়েছে। ঔষধ প্রশাসনের অনুমোদন পেলেই তারা কিট তৈরির প্রয়োজনীয় উপাদান ইংল্যান্ড থেকে আমদানি করবে। সব মিলিয়ে উৎপাদন করতে এক মাস সময়ের প্রয়োজন হবে। প্রাথমিকভাবে ১০ হাজার ভাইরাস শনাক্তকরণ কিট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পক্ষ থেকে। কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, এক মাসে ১ লাখ কিট তৈরি করা সম্ভব। আইইডিসিআরের কাছে বর্তমানে এ কিট আছে মাত্র ১ হাজার ৭০০ পিস, যা সরবরাহ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র এ কিট মাত্র ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় সরবরাহ করতে পারবে। তাদের অনুরোধ, কিটের ওপর যেন বড় আকারে কোনো ট্যাক্স বসানো না হয়। তাহলে জনসাধারণের কাছে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকায় এ কিট পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র করোনাভাইরাসের টেস্ট কিট উৎপাদনের জন্য ফেব্রুয়ারিতেই কাজ শুরু করে। তাদের সুদক্ষ টিম এ কিটের ডিজাইন ও উৎপাদনের কাজ করছে। ২০০৩ সালে সার্স ভাইরাসের ডায়াগনোসিস কিট তৈরির সময় সিঙ্গাপুরে কাজ করেছেন ড. বিজন কুমার শীল। তিনিই গণস্বাস্থ্যের এ টিমের অধিনায়কত্ব করছেন। এ কিট তৈরির জন্য বিএসএল টু প্লাস ল্যাব তৈরির কাজ প্রায় শেষের দিকে। এজন্য রি-এজেন্ট ও ইকুইপমেন্টও জোগাড় করা হচ্ছে। করোনাভাইরাস গত চার মাসে ৩৮৪ বারের বেশি তার জিনের গঠন পরিবর্তন করেছে। নতুন পরিবেশে টিকে থাকতে এ ভাইরাস তার জিনের গঠন পরিবর্তন করে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশ নিজেদের প্রয়োজনে করোনাভাইরাস চিহ্নিত করার কিট তৈরি করছে। বাংলাদেশে এ ব্যাপারে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রই প্রথম এগিয়ে এসেছে। গণস্বাস্থ্যের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গণস্বাস্থ্য আরএন এবায়োটেক লিমিটেড বাংলাদেশের মানুষের দেহে কভিড-১৯-এর অস্তিত্ব প্রমাণের জন্য পিওসি কিউ ডেভেলপের যে চেষ্টা করে আসছে তা প্রশংসার দাবিদার। ডট ব্লট টেকনোলজি পদ্ধতিতে গণস্বাস্থ্য যে কিট তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছে তার সাহায্যে আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে ভাইরাস শনাক্ত করা যাবে। বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে করোনাভাইরাস নির্ণয়ের
কিট উৎপাদনের অনুমতি দেওয়া প্রশংসার দাবিদার। সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে তারা যাতে এ কিট উৎপাদনে সক্ষম হয় সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা নজর রাখবেনÑ এমনটিও প্রত্যাশিত।
