শনিবার, ২১ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

অবরুদ্ধ শিবচর

ঝুঁকি মোকাবিলায় চাই আরও সতর্কতা

করোনাভাইরাসের থাবা ঠেকাতে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলাকে ‘লকডাউন’ বা অবরুদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। দেশে এ পর্যন্ত হাতে গোনা যে কয়েকজন কভিড-১৯ আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে তার বেশির ভাগই শিবচরের। শুক্রবার পর্যন্ত আক্রান্ত ২০ জনের মধ্যে সাতজন বিদেশফেরত। বাকি ১৩ জন স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত হয়েছেন বিদেশ থেকে আসা স্বজনদের সংস্পর্শে। বিদেশফেরতরা নিজেদের বাসগৃহে কোয়ারেন্টাইন বা সঙ্গনিরোধ অবস্থায় ১৪ দিন থাকবেন- সরকারের পক্ষ থেকে এমন নির্দেশনা দেওয়া হলেও তা না মানার পরিণতিতে করোনাভাইরাস থাবা বিস্তার করতে পেরেছে শিবচরসহ অন্যত্র। সরকার নির্দেশনা দিলেই নাগরিকরা তা পালন করবে, এমন সভ্যভব্য অবস্থা এ দেশে কখনো ছিল না কিংবা এখনো নেই। ফলে ভাইরাসে আক্রান্ত বিদেশফেরতরা শুধু নিজেরা নয়, স্বজনদের জন্যও বিপর্যয় ডেকে এনেছেন। অবরুদ্ধ অবস্থা চলাকালে শিবচরে কেউ প্রবেশ করতে পারবেন না, কেউ ওই এলাকা থেকে বেরও হতে পারবেন না। সবাইকে ঘরে থাকতে হবে। জরুরি সেবা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দোকান ছাড়া অন্যসব দোকানপাট, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় পরিবহন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। এর আগে বিভিন্ন দেশে একের পর এক শহর লকডাউন ঘোষণা করা হলেও এই প্রথম বাংলাদেশের কোনো এলাকাকে অন্য এলাকা থেকে বিচ্ছিন্ন করা হলো। শিবচর লকডাউনের পাশাপাশি সারা দেশে ধর্মীয়, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। শুক্রবার পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে তিনজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে বাংলাদেশে মোট ২০ জন করোনায় আক্রান্ত হলেন। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন দেশ থেকে তিন সহস্রাধিক প্রবাসী মাদারীপুরে ফিরেছেন। এর বড় একটি অংশই এসেছেন করোনা আক্রান্ত ইতালি থেকে। এক ইতালিপ্রবাসী সম্প্রতি মাদারীপুরের শিবচরে আসেন। করোনাভাইরাসের বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিলে তার স্ত্রী, সন্তান, শাশুড়িসহ চারজনকে আইসোলেশনে রাখা হয়। এখন এদের সবাই করোনাভাইরাস বহন করছেন। এ ছাড়া তার সন্তানরা যাদের সংস্পর্শে এসেছে, এমন ১৯ শিক্ষার্থীকে চিহ্নিত করে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। মাদারীপুর সদর উপজেলার ইতালিপ্রবাসী এক যুবক করোনাভাইরাস বহন করছিলেন। আইইডিসিআর থেকে চিকিৎসা নিয়ে তিনি সুস্থ হয়েছেন। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মানুষ বাঁচাতে দেশের যে কোনো এলাকায় একই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণাধীনে। তবে এ বিষয়ে যে ঝুঁকি রয়েছে তা মোকাবিলায় সরকারকে আরও

সক্রিয় হতে হবে। সামাজিক সচেতনতা গড়ে তোলাও জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর