সোমবার, ২৩ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

পোশাক শিল্পের সংকট

সরকারি সহায়তা জরুরি

করোনাভাইরাসের কারণে দেশের পোশাক শিল্পে বিপর্যয়ের আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। সারা দুনিয়ায় এই প্রাণঘাতী ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় মানুষ এখন জীবন বাঁচানোকেই প্রাধান্য দিচ্ছে। পোশাকের দোকানগুলোর এক বড় অংশ বন্ধ রাখা হয়েছে করোনাভাইরাসের মুখে। দীর্ঘ মেয়াদে এ অবস্থা চললে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের জন্য ভয়াবহ সংকট তৈরি হবে। এমনিতেই শ্রমঘন পোশাক শিল্পের শ্রমিকরা করোনাভাইরাস আতঙ্কে ভুগছে। পোশাক শিল্পে শত শত শ্রমিক এক ফ্লোরে কাজ করে। তাদের কারোর মধ্যে করোনাভাইরাস বাসা বাঁধলে অন্যদের মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকবে। মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে ক্রেতাদের অর্ডার বাতিলের ঘটনা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্পে একের পর এক অর্ডার বাতিল হচ্ছে। একদিকে কাঁচামাল ও এক্সেসরিজ সংকট, অন্যদিকে পুরনো অর্ডার বাতিল ও নতুন কোনো অর্ডার না আসায় চরম বিপর্যয়ে পড়েছে তৈরি পোশাক খাত। ইতিমধ্যেই ঢাকার কিছু পোশাক কারখানার প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলার এবং চট্টগ্রামের ৩৭টি গার্মেন্টের ২১ মিলিয়ন ডলারের ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিত হয়েছে। এই বাতিল ও স্থগিতাদেশের মধ্যে ২৫ শতাংশ গার্মেন্ট এক্সেসরিজ পণ্যের অর্ডারও রয়েছে। সূত্র মতে, করোনাভাইরাসের কারণে কিছু দিন ধরে তৈরি পোশাক শিল্পে চলমান অর্ডারের ওপর স্থগিতাদেশ আসছিল। গত কয়েক দিন ধরে অর্ডার বাতিলের সিদ্ধান্ত আসা শুরু করেছে বিদেশি ক্রেতা প্রতিষ্ঠান ও নামিদামি ব্র্যান্ডের পক্ষ থেকে। ফলে দিশাহারা অবস্থায় আছেন এ খাতের উদ্যোক্তারা। অর্ডার বন্ধ হওয়ায় ঢাকা-চট্টগ্রামের বেশ কয়েকটি কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গত কয়েক দিনে ২৫টি পোশাক কারখানায় ১৫ মিলিয়ন ডলার এবং ১২টি কারখানায় ৬ মিলিয়ন ডলারের অর্ডার বাতিল হয়েছে। অচিরেই অন্তত ৩০ মিলিয়ন ডলারের অর্ডার বাতিল হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পোশাক শিল্পে ব্যবহৃত উপাদান বিদেশ থেকে আমদানি করা কঠিন হয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস আতঙ্কে পণ্য পরিবহন হ্রাস পাওয়ার কারণে। ক্রেতারা একের পর এক অর্ডার বাতিল করায় পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের বেতন ঠিকমতো দেওয়া কঠিন হয়ে পড়তে পারে। যা মোকাবিলায় এই শিল্পের দিকে সরকারকে সহায়তার হাত বাড়াতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর