সোমবার, ৩০ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনার থাবায় নজিরবিহীন নিরাপত্তা সংকটে মানবজীবন

মেজর জেনারেল এ কে মোহাম্মাদ আলী শিকদার পিএসসি (অব.)

করোনার থাবায় নজিরবিহীন নিরাপত্তা সংকটে মানবজীবন

করোনাভাইরাসের আক্রমণে বিশ্বব্যাপী মানবজীবন আজ মহাদুর্যোগের মধ্যে আছে। সমগ্র বিশ্বের জননিরাপত্তা আজ নজিরবিহীন হুমকির মধ্যে। ১৯১৮ সালে স্প্যানিশ ফ্লুর ভয়াবহতার স্মৃতিতে নিদারুণ ভয়ার্ত একটি পরিবেশের ভিতরে আছে বিশ্বের তাবৎ জনতা। সে সময় ২৬৩ দিনের আঘাতে তিন কোটিরও বেশি মানুষের অকাল মৃত্যু ঘটেছিল। কিন্তু বেদনাদায়ক হলেও বাস্তবতা হলো মানুষ সেটি ভুলে গিয়েছিল। তা না হলে করোনাভাইরাসটি চীনের উহানে উৎপত্তি হওয়ার পর বিশ্বের অন্যান্য রাষ্ট্র পরিচালকরা যথেষ্ট সময় হাতে পাওয়ার পরেও কেন প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থ হলেন। করোনা চীনের কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটিয়ে ইরান-ইউরোপ হয়ে আটলান্টিকের ওপারে আমেরিকার মূল ভূ-খন্ডকে কাঁপিয়ে তুলছে। এশিয়া তো আছেই। তার সঙ্গে আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকার দেশসহ এখন কোনো দেশই করোনার দানবীয় থাবার বাইরে নেই। বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষ ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে রাষ্ট্র-সমাজ, আত্মীয়স্বজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নিজ নিজ ঘরের মধ্যে আবদ্ধ হয়ে পড়েছে। অবিশ্বাস্য প্রাণঘাতী এই অদৃশ্য শত্রুর সঙ্গে লড়াইয়ে মানব সভ্যতা আজ দিশাহারা। বড় বড় রাষ্ট্র নেতারা দ্বিধাদ্বন্দ্বে। সিদ্ধান্তহীনতার চরম বহিঃপ্রকাশ সর্বত্র। মানুষের প্রাণশক্তি, সম্মিলিত ও সংযুক্ত জীবনযাত্রা আজ স্তব্ধ। অর্থনৈতিক কর্মকা- থমকে পড়ায় সাধারণ শ্রমজীবী মানুষের জন্য জীবন যদি বাঁচেও তারপর কী হবে বোঝা যাচ্ছে না। বিশ্বব্যাপী ভীষণ মন্দার শঙ্কা প্রকাশ করছেন অর্থনীতির বিশেষজ্ঞরা। রোগব্যাধি ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু মহামারী সামষ্টিক বিষয়। বিশ্বের পুরো জনগোষ্ঠী যখন বিপন্ন অবস্থায় তখন এটি শুধু রোগতত্ত্বের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। এর ব্যাপ্তি সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি ও নিরাপত্তাসহ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। মানুষের নিরাপত্তার বিষয়টি তখন সব কিছুর ঊর্ধ্বে চলে আসে। মানুষের জীবন বিপন্ন হলে সব অর্জন বৃথা হয়ে যায়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নতুন করে মনে করিয়ে দিল, চলমান বৈশ্বিক যুগে, দেশ, কাল পাত্রভেদে আজ রাষ্ট্র বনাম রাষ্ট্র, ধনী বনাম গরিব, সমাজ বনাম সমাজ এবং ব্যক্তি বনাম ব্যক্তি, আমরা একে অপরের সঙ্গে এমন ওতপ্রোতভাবে জড়িত যে, কারও আর স্বতন্ত্র, আলাদা বা বিচ্ছিন্নভাবে বাঁচার সুযোগ নেই। আমেরিকার মতো পরাশক্তি অসহায়, দিশাহারা। কী করবে বুঝে উঠতে পারছে না। ভয়ে জরুরি অবস্থা জারি ও কার্ফু দিয়ে মানুষকে ঘরে কপাট লাগাতে বাধ্য করা হচ্ছে। পশ্চিমা বিশ্বের সবচেয়ে বড় মূল্যবোধ অবাধ ব্যক্তিস্বাধীনতা আজ ভূলুণ্ঠিত। ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র একটি ভাইরাস কোথায় কোন দিকে কখন কাকে আক্রমণ করবে তা এই একবিংশ শতাব্দীতে মানুষের বোঝার অসাধ্য হয়ে উঠছে। ফলে একশ্রেণির মানুষ গুজব ছড়াতে মত্ত হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে, যার কোনো বিশ্বাসযোগ্যতা নেই, তাতে গুজব ছড়িয়েছে এটা নাকি চীনের কোনো ল্যাবে তৈরি হয়েছে এবং দুর্ঘটনাবশত সেটি মানুষের শরীরে ঢুকে পড়েছে। আবার আরেকটি গুজব আছে, আমেরিকা এই ভাইরাস চীন ও ইরানে ছড়িয়ে দিয়েছে। আসলে দুটো গুজবের পিছনেই কোনো যুক্তি বা ভিত্তি নেই। একেবারেই স্রেফ গুজব। সামাজিক মাধ্যমের অনেক ইতিবাচক দিক থাকলেও এর বিপরীত দিক এখন মানুষের নিরাপত্তার জন্য ক্রমেই বড় হুমকি হয়ে পড়ছে। অনেক উচ্চশিক্ষিত বুঝমান লোকও গুজব ছড়ানোর অংশীদার হচ্ছে। নিউটনের অ্যাকশন ইকুয়েল টু রিঅ্যাকশনের সূত্রটি বারবার সামনে এলেও সেটি আমরা মনে রাখছি না। বিশ্বের নামকরা চিকিৎসা বিজ্ঞান সাময়িকী নেচার মেডিসিনের গবেষণামূলক প্রবন্ধে গবেষকরা বলছেন, এই ভাইরাসটির জেনোম সিকুয়েন্স তারা বিশ্লেষণ করেছেন এবং তাতে প্রমাণিত হয়েছে এটি মানুষ তৈরি করেনি, প্রাকৃতিকভাবে উদ্ভব হয়েছে। এর জোরালো প্রমাণ পাওয়া গেছে। বলেছেন, সম্ভবত, ভাইরাসটি বাদুড় অথবা বনরুই জাতীয় পিঁপড়াভুক প্রাণীর দেহ থেকে মানুষের দেহে প্রবেশ এবং তারপর একজন থেকে আরেকজন, এভাবে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। টেলিগ্রাফ পত্রিকার সূত্রে বাংলাদেশ প্রতিদিন ২০ মার্চ এ খবরটি ছেপেছে। বন্যপ্রাণী থেকে এই মারাত্মক ভাইরাসটি মানবদেহে কীভাবে প্রবেশ করেছে তার কিছুটা বোঝা যায় চাইনিজদের খাবার অভ্যাস ও সংস্কৃতির দিকে তাকালে। তবে বন্যপ্রাণী, বাদুড়, বনরুই অথবা সাপের দেহে এই জীবনঘাতী ভাইরাসের জন্ম কীভাবে হলো তা হয়তো বিজ্ঞানীরা একদিন আবিষ্কার করবেন। তবে আজকের বৈশ্বিক পরিবেশগত বাস্তবতা হলো, বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের আকাশ, বাতাস, পানি, সাগর, পাহাড়-পর্বত, বন-জঙ্গল, সব কিছু বিষে বিষে বিষময়। মানুষসহ সব প্রাণী এই বিষময় পরিবেশে বসবাস শুধু নয়, অনবরত বিষপানে বাধ্য হচ্ছে। তাই কোন বিষের কী প্রতিক্রিয়ায় কোন প্রাণীর দেহে কী ভাইরাসের জন্ম হচ্ছে তার কতটুকু হদিস আজ বিজ্ঞানীরা রাখতে পারছেন বা রাখছেন সেই প্রশ্নটিই আজ জ্বলন্ত হয়ে দেখা দিয়েছে। বৈশ্বিক ব্যবস্থা ও পরিস্থিতি এমন রূপ নিয়েছে, যেখানে আজ প্রাকৃতিক সম্পদ দখলের প্রতিযোগিতা, অতি মুনাফাসহ অর্থনৈতিক স্বার্থ ও রাজনৈতিক শ্রেষ্ঠত্বের কাছে প্রতিনিয়ত মানবতা পরাজিত হচ্ছে। করোনা মহামারীতে পৃথিবীব্যাপী মানুষের মৃত্যুর মিছিলের ওপর দিয়ে কয়েকদিন আগে উত্তর কোরিয়া জাপান সাগরে নিক্ষেপ করল স্বল্পপাল্লার মিসাইল। সঙ্গে সঙ্গে আমেরিকা পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপে সক্ষম দূরপাল্লার মিসাইলের পরীক্ষা চালাল। অস্ত্র প্রতিযোগিতার ধারাবাহিকতায় পারমাণবিক বোমাসহ অন্যান্য বোমা-মিসাইল, কেমিক্যাল ও বায়োলজিক্যাল অস্ত্রের নির্মাণ এবং তার পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষক্রিয়ায় পৃথিবীর সব প্রাণীর অবস্থা নাকাল। বিশ্বব্যাপী যুদ্ধবিগ্রহ এবং তার জন্য মারণাস্ত্রসহ সব ধরনের অস্ত্র নির্মাণের পিছনে সবচেয়ে বড় কারণটি হচ্ছে অস্ত্র ব্যবসায়ীদের সীমাহীন অর্থলিপ্সা ও সম্পদের প্রতি অভাবনীয় লোভ। সাগরের নিচে পারমাণবিক অস্ত্র ফাটিয়ে সাগরতলের ভূ-প্রকৃতির বারোটা বাজিয়ে ছাড়ছে। যুদ্ধ, গৃহযুদ্ধ ও প্রক্সি যুদ্ধের কারণে প্রতি বছর হাজার হাজার বোমা নিক্ষেপিত হচ্ছে। তাতে শত শত জনপদ ধ্বংসসহ কোটি কোটি মানুষের মৃত্যু এবং বাস্তুচ্যুতির সঙ্গে নিক্ষেপিত বোমার রাসায়নিক ও বায়োলজিক্যাল অভিঘাতে পানি-বাতাস বিষময় হয়ে যাচ্ছে। এর বিরূপ প্রভাব মানুষের জন্য কত ভয়ঙ্কর হতে পারে তা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিকে জাপানের দুটি শহরের ওপর পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপ এবং তার ধ্বংসযজ্ঞের সঙ্গে পরবর্তী সময়ে যুগ যুগ ধরে সেখানকার মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে তাকালে বোঝা যায়। ওই বোমা নিক্ষেপের কারণে মানুষের চেয়ে বিষক্রিয়ার অভিঘাত অন্যান্য প্রাণীর ওপরেও নিশ্চয়ই কম কিছু ছিল না। কিন্তু আমরা মানবজাতি এমনই স্বার্থপর, ওইসব প্রাণিকুলের খবর কেউ রাখিনি।

তাই আজকে যদি সত্যিই চীনের উহান শহরের কোনো এক বন্যপ্রাণীর দেহে জন্ম হওয়া ভাইরাসটি মানবদেহে প্রবেশ ও আক্রমণ করে থাকে তাহলে প্রকৃতির প্রতিশোধ বা রিভেঞ্জ অব নেচারের কথাই আমাদের স্মরণে আনতে হবে। হতে পারে বন্যপ্রাণীর দেহে করোনাভাইরাসটি নিরীহ ছিল। কিন্তু হতে পারে মানবদেহ তাদের জীবন বিস্তার ও প্রবাহের জন্য সর্ব উপযুক্ত উর্বর স্থান। অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠার প্রতিযোগিতায় মানবকুল প্রকৃতির ওপর যেভাবে আঘাতের পর আঘাত করে যাচ্ছে তাতে প্রকৃতির রুদ্রমূর্তি ধারণ করাটাই স্বাভাবিক। প্রাকৃতিক সম্পদ দখলের হীনউদ্দেশ্যে প্রকৃতিকে জয় করার প্রতিযোগিতায় বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের ভারসাম্য আজ ভেঙে পড়ার উপক্রম হচ্ছে। ২০১৮ সালে ব্লুমবার্গের এক গবেষণা প্রতিবেদনে জানা যায়, পৃথিবীতে এ পর্যন্ত আহরিত সম্পদের শতকরা ৯৫ ভাগ ভোগ করছে, মাত্র শতকরা পাঁচভাগ মানুষ, আর বাকি ৯৫ ভাগ মানুষের জন্য আছে সম্পদের মাত্র পাঁচভাগ। ওই শতকরা পাঁচভাগ মানুষ বৈশ্বিক ক্ষমতার সব উপকরণ নিয়ন্ত্রণ করে বিধায় বৃহত্তর মানুষ অনেক কিছু সম্পর্কে আসল খবরের তথ্য-উপাত্ত কিছু পায় না। ততটুকুই প্রকাশ পায় যতটুকু তাদের জন্য একটা ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে। সুতরাং রাষ্ট্র ক্ষমতাধারী অথবা তার অদৃশ্য শক্তি যারা জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্বে আছেন তারা ক্ষমতা ও সম্পদের লিপ্সার জন্য জননিরাপত্তার সবদিকের হুমকিকে আমলে নিচ্ছেন না এবং ইচ্ছাকৃতভাবে অনেক কিছুকে কার্পেটের নিচে রেখে দিচ্ছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব ঠেকাতে বিশ্বব্যাপী আন্দোলন-সংগ্রাম চলছে। কিন্তু           ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা যদি বন্ধ করা না যায় তাহলে অস্ত্র প্রতিযোগিতা এবং তার বিষক্রিয়া থেকে মানুষসহ প্রাণিকুলকে আর রক্ষা করা যাবে না। কোনো কোনো বিজ্ঞানী বলা শুরু করেছেন, সেদিন আর বেশি দূরে নয়, যেদিন হয়তো পৃথিবী থেকে মানবপ্রাণী বিলুপ্ত হয়ে যাবে। হেনরি কিসিঞ্জার অন চায়না এবং ইতিহাসবিদ আয়ন ক্রফটনের ওয়ার্ল্ড হিস্ট্রি গ্রন্থে চায়নার ওইসব দুর্ভিক্ষের বর্ণনা পাওয়া যায়। সুতরাং বিরাজমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও পরিবেশগত অবস্থার প্রেক্ষাপটে ও পরিপ্রেক্ষিতে বন্যপ্রাণীর দেহে জীবনঘাতী ভাইরাসের জন্ম এবং সেটি কোনো মানুষের দেহে প্রবেশ করাটা অস্বাভাবিক নয়। ভাইরাসটি বন্যপ্রাণীর দেহে সুপ্ত অবস্থায় থাকলেও মানবদেহের ভিতরের কোনো উপাদান হয়তো ভাইরাসটিকে শক্তিশালী হতে সহায়তা করেছে এবং লাফিয়ে লাফিয়ে তারা একজন থেকে অন্যজনের দেহে প্রবেশ করছে। সার্সসহ এর আগে যত প্রাণঘাতী ভাইরাসের উৎপত্তি হয়েছে সেগুলোর কোনোটাই করোনার মতো এত শক্তিশালী ও দ্রুত বিস্তারের সক্ষমতা ছিল না। বৈশ্বিক পরিবেশগত বাস্তবতার কারণে আগামীতে অন্য কোনো ভাইরাস এলে সেটি হয়তো করোনার চেয়ে আরও কয়েকগুণ শক্তিশালী হবে। এবার বন্যপ্রাণী থেকে করোনার উৎপত্তি হয়ে থাকলে আগামীতে বন্যপ্রাণীসহ আরও যেসব প্রাণী মানুষের খাদ্য হিসেবে ব্যবহারিত হচ্ছে এবং মানুষের ঘনিষ্ঠ সংযোগে আসে ও থাকে, সেসব প্রাণীর দেহে অন্য কোনো প্রাণঘাতী ভাইরাসের জন্ম যে হবে না, তার কোনো নিশ্চয়তা কি আছে। কারণ, পানি ও বাতাস যদি বিষাক্ত হয়ে যায়, তাহলে এর বিরূপ প্রভাব থেকে মানুষসহ কোনো প্রাণীই মুক্ত নয়। আধুনিক বিজ্ঞান অনেক রোগব্যাধিকে জয় করেছে, এ কথা ঠিক। আবার এ কথাও ঠিক, যত সংখ্যক জয় ও নিয়ন্ত্রণ করা গেছে তারচেয়ে অনেক বেশি নতুন নতুন রোগের আবির্ভাব ঘটেছে। ক্যান্সার ও হার্ট ডিজিজের বিস্তার ঘটছে অপ্রতিরোধ্য গতিতে। এমন কেন হচ্ছে তার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা কিছুটা পাওয়া গেলেও এর পিছনে অর্থনৈতিক লিপ্সা ও রাজনৈতিক শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠার প্রতিযোগিতা কতখানি দায়ী সে সম্পর্কে অবাধ গবেষণা ও জোরালো বক্তব্য খুব বেশি নেই। যারা বিশ্বের শতকরা ৯৫ ভাগ সম্পদের মালিক, সেই পাঁচভাগ মানুষের কাছেই সব ক্ষমতা আজ বন্দী হয়ে পড়েছে। গবেষণা থেকে শুরু করে বিশ্বের সব মিডিয়া ওই ক্ষমতাবানদের হাতেই নিয়ন্ত্রিত। অস্ত্র ব্যবসায় তাদের সম্পদ জ্যামিতিকহারে বৃদ্ধি পায়। করোনার জন্ম ও তা ছড়িয়ে পড়ার পর বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্র পরিচালকরা প্রতিকার ও মানুষকে রক্ষা করার কথা বলছেন। করোনার প্রতিষেধক হয়তো অদূর ভবিষ্যতেই বের হবে। কিন্তু ভবিষ্যতে করোনার থেকে আরও শক্তিশালী নতুন কোনো ভাইরাসের জন্ম ঠেকানোর কথা কেউ বলছেন না। সুতরাং করোনাই শেষ নয়। ভবিষ্যতে আরও কঠিন চ্যালেঞ্জ কীভাবে মোকাবিলা করা যাবে তার জন্য স্থায়ী ব্যবস্থার কথা আমাদের মতো জনবহুল দেশকে আগেভাগেই ভাবতে হবে। সময়ের এক ফোঁড় অসময়ের দশ ফোঁড় বলে একটা কথা আছে। বাংলাদেশ কোনোভাবেই এরকম ভাইরাসের জন্ম ও বিস্তারের জন্য দায়ী নয়। কিন্তু অভিঘাত থেকে মুক্ত থাকার উপায় নেই। সুতরাং করোনা থেকে উত্তরণ ঘটাতে পারলে ভবিষ্যতের জন্য নতুন করে স্থায়ী স্ট্যাট্রেজি নিতে হবে।

লেখক : রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক।

[email protected]

সর্বশেষ খবর