রবিবার, ৫ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

শাবানে বেশি বেশি রোজা রাখতে হবে

মুহম্মাদ ওমর ফারুক

শাবানে বেশি বেশি রোজা রাখতে হবে

শাবানকে বলা হয় রমজানের প্রস্তুতিমূলক মাস। মাহে রমজানের প্রস্তুতিমূলক মাস হিসেবে মুসলমানদের কাছে শাবান মাস অত্যন্ত বরকতময় বলে বিবেচিত। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ‘আমি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে রমজান ছাড়া এত বেশি রোজা রাখতে দেখিনি, যত বেশি রোজা তিনি শাবানে রাখতেন।’ হঠাৎ করে রমজানে রোজা রাখতে শুরু করলে উম্মতের জন্য কষ্ট হতে পারে সেজন্য উম্মতের কষ্ট লাঘবে, নিজে রোজা রেখেই রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মতকে শিক্ষা দিয়েছেন, ‘আমি শাবান মাসে বেশি রোজা রাখছি। তোমরা আমাকে অনুসরণ করে এ মাসে বেশি বেশি রোজা রাখো, তাহলে রমজানের ফরজ রোজা রাখতে তোমাদের কষ্ট হবে না।’ রমজানে দিনে রোজা ও রাতে জাগরণ করে যেন ইবাদত করা যায় তার জন্য রমজানের আগে লাইলাতুল বরাতে জাগরণ ও দিনে রোজা রাখাকে পছন্দ করেছেন। যাতে রমজানের রাত-দিনের ইবাদতে কোনো ব্যাঘাত না ঘটে। রমজান শুরু হওয়ার আগে শাবানে বেশি বেশি রোজা ও অন্য ইবাদতের মাধ্যমে রমজানের ইবাদতের জন্য মানসিক ও শারীরিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়। শাবান মাস ধারণ করছে লাইলাতুল বরাতকে। হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘এ রাতে আল্লাহতায়ালা বান্দার প্রতি নজর দেন (যারা ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে তওবা করেন) সবাইকে মাফ করে দেন একমাত্র মুশরিক ও হিংসুক ছাড়া।’ লাইলাতুল বরাতে ক্ষমাপ্রাপ্তির মাধ্যমে রমজানের রহমত, মাগফিরাত, নাজাত পাওয়ার জন্য পরিপূর্ণভাবে শিরক ও হিংসা থেকে মুক্ত হতে হবে। বর্তমানে লাইলাতুল বরাত পালন করা হলেও এর ফজিলত পাওয়ার জন্য শিরক ও হিংসা থেকে মুক্ত হওয়ার যে সক্ষমতা অর্জন করা দরকার তা আমাদের অনেকের ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় না। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমরা কত ধরনের শিরকে লিপ্ত আছি, তা একটু চিন্তা করলে আতঙ্কিত হতে হবে। এ শিরক থেকে মুক্ত না হয়ে লাইলাতুল বরাত পালনে কতটুকু ফজিলত অর্জন করা যাবে তা ভেবে দেখার বিষয়। মধ্য শাবানে লাইলাতুল বরাতের আগমন ঘটে। এ পবিত্র রাতের ফজিলত পাওয়ার জন্য শিরক ও হিংসা থেকে মুক্ত হওয়ার যে দুটি শর্ত রয়েছে তা মেনে যদি আমরা শিরক ও হিংসামুক্ত হতে পারি তাতে লাইলাতুল বরাতের ফজিলত পাওয়া যাবে এবং রমজানে ইবাদত করার জন্য পূর্বপ্রস্তুতিও গ্রহণ করা হবে। এতে রমজানের রহমত, মাগফিরাত, নাজাত পাওয়ার পথও অধিকতর উন্মুক্ত হবে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে শাবানে বেশি বেশি ইবাদত করার ও রমজানের প্রস্তুতি নেওয়ার তৌফিক দান করুন।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

সর্বশেষ খবর