করোনাভাইরাস ও অন্যান্য মহামারীতে করণীয় আমলের মধ্যে রয়েছে নিজের ইমান-আমলকে সংশোধন করা। ইরশাদ হচ্ছে, ‘আর আপনার রব এমন নন যে, তিনি জনপদসমূহকে অন্যায়ভাবে ধ্বংস করে দেবেন অথচ তার অধিবাসীরা সৎকর্মে লিপ্ত রয়েছে।’ সূরা হুদ, আয়াত ১১৭। দুই নম্বর কাজ হলো তাকদিরে বিশ্বাস দৃঢ় করা। ইরশাদ হচ্ছে, ‘হে নবী! আপনি বলে দিন! আল্লাহ আমাদের জন্য (তাকদিরে) যা লিখে রেখেছেন তা ছাড়া অন্য কোনো কষ্ট আমাদের কিছুতেই স্পর্শ করবে না।; সূরা তওবা, আয়াত ৫১। এ বিশ্বাস রাখা যে, মানুষ যে রোগে আক্রান্ত হয়, তা তার তাকদিরে আছে। ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ছোঁয়াচে রোগ বলতে কিছু নেই! এক সাহাবি জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রসুলুল্লাহ! আমরা একটি খুজলিযুক্ত বকরি অন্যান্য (সুস্থ) বকরির মাঝে রেখে দিলে সেগুলোও তো খুজলিযুক্ত হয়ে যায়! নবীজি বললেন, তাহলে প্রথম বকরিটি কী কারণে আক্রান্ত হলো? অর্থাৎ প্রথম বকরিটি যেভাবে আল্লাহর হুকুমে আক্রান্ত হয়েছে, তেমনি অন্যগুলোও আল্লাহর হুকুমে আক্রান্ত হয়েছে।’ মুসনাদে আহমাদ।
তবে কোনো কোনো হাদিসে কুষ্ঠ রোগাক্রান্ত ব্যক্তির কাছে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। যেমন, এক হাদিসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘তুমি কুষ্ঠ রোগাক্রান্ত ব্যক্তির থেকে এমনভাবে পলায়ন কর, যেভাবে সিংহ থেকে পলায়ন করে থাক।’ বুখারি।
এ হাদিসে নিষেধাজ্ঞার কারণ হলো, তাকদিরকে অবিশ্বাস করে কেউ যেন এ ধারণার শিকার না হয় যে, এ রোগীর সংস্পর্শে আসার কারণেই আমার এ রোগ হয়েছে! এজন্য প্রিয় নবী দুর্বল ইমানদের ওপর দরদস্বরূপ কুষ্ঠ রোগীর কাছে যেতে নিষেধ করেছেন। শরহু মাআনিল আসার, ৪/৩০৯।সতর্কতামূলক এ-জাতীয় মারাত্মক রোগী থেকে দূরে থাকা ইসলামে নিষেধ নয়। তবে তা কেবল ওই রোগীর ক্ষেত্রে, যার আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি সুনিশ্চিত।
তৃতীয় কাজ হলো, আল্লাহর কাছে নিজ গুনার জন্য বেশি বেশি ক্ষমা চাওয়া। ইরশাদ হচ্ছে, ‘এবং তিনি (আল্লাহ) এমনও নন যে, তারা ইসতিগফারে রত অবস্থায় তাদের শাস্তি দেবেন।’ সূরা আনফাল, আয়াত ৩৩।
নিচের দোয়া দুটি বেশি বেশি পাঠ করা- লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জোয়ালিমিন। আল্লাহুম্মা আউয়ুজুবিকা মিনাল বারাসি ওয়াল জুনুবি ওয়াল জুজামি ওয়া মিন সাইয়িয়িল আসকাম।
বাদ ফজর ও বাদ মাগরিব তিনবার নিম্নোক্ত দোয়া দুটি পড়া-
বিসমিল্লাহিল্লাজি লা ইয়াদুররু মা আসমিহি শাইয়ুন ফিল আরজি ওয়া ফিস সামায়ি ওয়া হুয়াস সামিউল আলিম। আউয়ুজু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন শাররি মা খালাকা। দিনে যে কোনো সময়ে সূরা ফাতিহা তিনবার, সূরা ইখলাস তিনবার ও নিম্নোক্ত আয়াতটি ৩১৩ বার পড়া- হাসবুনাল্লাহু ওয়া নিইমাল ওয়াকিল। দিনে যে কোনো সময়ে নিজ পরিবারে সম্মিলিতভাবে সিরাতের (নববীজীবনী) নির্ভরযোগ্য কোনো কিতাবের তালিম করা।
লেখক : প্রধান মুফতি
জামিয়া রহমানীয়া আরাবিয়া মোহাম্মদপুর ঢাকা।