শনিবার, ১১ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

ইসলামে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব

মুহম্মাদ আশরাফ আলী

ইসলামে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া ফরজ বা অবশ্যপালনীয়। নামাজসহ যে কোনো ইবাদতের আগে অজু করা বা পরিচ্ছন্ন হওয়া মুসলমানদের জন্য বাধ্যতামূলক। নিজেকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার ক্ষেত্রে অজুর তুলনা নেই। অজু ছাড়া নামাজ আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হয় না। নামাজ আদায়ের আগে অজুর দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করতে হবে। কারও জন্য গোসল করা ফরজ হলে অজু ও গোসল দুটিই করতে হবে। হজরত আমর ইবনে আবাসা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি আরজ করলাম ইয়া রসুলুল্লাহ! অজুর মধ্যে ফায়দা কী? তিনি বললেন, যখন তুমি অজু করবে ও দুই হাতের কব্জি পরিষ্কার করে ধোবে, তখন গুনাসমূহ আঙ্গুলের অগ্রভাগ ও নখ দিয়ে বের হয়ে যাবে। এরপর যখন তুমি কুলি করবে, নাকে পানি দিয়ে দুই নাকের ছিদ্র পরিষ্কার করবে, মুখ ও হাত দ্বারা কনুই পর্যন্ত ধোবে, মাথা মাসেহ করবে ও উভয় পা টাখনু পর্যন্ত ধোবে, তখন তুমি যেন তোমার গুনাসমূহকে ধুয়ে পরিষ্কার করে দিলে। এরপর যখন তুমি তোমার চেহারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য জমিনে রাখবে (নামাজ আদায় করবে) তখন তুমি এমনভাবে গুনা থেকে নিষ্পাপ হয়ে যাবে, যেদিন তোমার মা তোমাকে জন্ম দিয়েছিল।’ নাসায়ি, মুসলিম।

অন্য বর্ণনায় আছে, হজরত উকবা ইবনে আমের জুহানি (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যে কোনো মুসলমান পরিপূর্ণভাবে অজু করে, অতঃপর (দুই রাকাত) নামাজ এমন ধ্যানের সঙ্গে আদায় করে যে, যা সে পড়ছে তা সে জানে, তাহলে (নামাজ শেষ করার সঙ্গে সঙ্গে) সদ্যভূমিষ্ঠ বাচ্চার মতো তার গুনা মাফ হয়ে যায়। অর্থাৎ তার আর কোনো গুনাই অবশিষ্ট থাকে না।’ মুস্তাদরাকে হাকেম-জাহাবি।

হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাসাল্লাম বলেন, ‘আল্লাহ (রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে স্বপ্নের মাধ্যমে) ইরশাদ করেছেন, হে মুহাম্মদ! আমি আরজ করলাম, হে আমার রব! আমি হাজির আছি। ইরশাদ হলো, নৈকট্যশীল ফেরেশতারা কী বিষয় নিয়ে পরস্পর বিতর্ক করছে? আমি আরজ করলাম, সেসব আমল সম্পর্কে যা গুনার কাফফারা হয়। (ইরশাদ হলো, সেই আমলসমূহ কী? আমি আরজ করলাম), জামাতে নামাজ আদায়ের জন্য পায়ে হেঁটে যাওয়া, কষ্টকর অবস্থায় (যেমন শীত মৌসুমে বা মন না চাইলেও) উত্তমভাবে অজু করা এবং এক নামাজের পর আর এক নামাজের জন্য অপেক্ষা করা। যে ব্যক্তি এগুলোর ওপর নিয়মিত আমল করবে, সে জীবনযাপন করবে কল্যাণের সঙ্গে এবং মৃত্যুবরণ করবে কল্যাণের সঙ্গে।  আর সে তার গুনা থেকে পরিত্রাণ পাবে ওই দিনের মতো যেদিন মা তাকে ভূমিষ্ঠ করেছে।’ মাজমায়ুজ জাওয়ায়েদ, তিরমিজি। আল্লাহ আমাকেসহ সবাইকে সঠিকভাবে অজু করার তৌফিক দান করুন।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

সর্বশেষ খবর