মঙ্গলবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

বাংলা নববর্ষের উৎস রসুল (সা.)-এর হিজরত

আবদুর রশিদ

বাংলা সন হলো ইসলামী হিজরি সনের সৌরবর্ষীয় সংস্করণ। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতের সময় হিজরি সনের শুরু। বাংলা সনের সঙ্গে রয়েছে হিজরতের সেই পবিত্র স্মৃতি। ভারতবর্ষে মুসলিম শাসন কায়েম হওয়ার পর হিজরি সন অনুসরণ করা হতো। খাজনা আদায়ের সুবিধার্থে হিজরি সনের উৎস ঠিক রেখে সৌরবর্ষীয় বাংলা সনের উৎপত্তি। মোগল সম্রাট আকবরের আমলে বাংলা সন শুরু হয়। সে সময় কৃষককে হিজরি সন অনুযায়ী খাজনা দিতে হতো। হিজরি চান্দ্র বছরের সঙ্গে বাংলা ঋতুচক্রের হিসাব এলোমেলো হয়ে যাওয়ায় কৃষক বিপাকে পড়ে যেত। সম্রাট আকবর সিংহাসনে আরোহণ করে এ সমস্যাটি গভীরভাবে উপলব্ধি করেন। তিনি সমস্যার সুষ্ঠু সমাধানের জন্য ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দ মোতাবেক ৯১২ হিজরি সনে প্রখ্যাত ইরানি জোতির্বিজ্ঞানী আমির ফতেহ উল্লাহ সিরাজিকে সৌরবর্ষীয় সন তৈরির দায়িত্ব দেন। আমির ফতেহ উল্লাহ হিজরি সনের সঙ্গে মিল রেখে সৌর মাসভিত্তিক ফসলি সন প্রণয়ন করেন। এ সন হিজরি সনের আদলেই শুরু হয়। ৯৩৬ হিজরি সন বাংলা সনের জন্মবছর হলেও তা ৯৩৬ বঙ্গাব্দ হিসাবে গণনা শুরু করা হয়। শুধু তাই নয়, হিজরি সনের সঙ্গে মিল রাখার জন্য বাংলা সনের প্রথম মাস চৈত্রের পরিবর্তে বৈশাখ করা হয়। কারণ ৯৩৬ হিজরি সনের পয়লা মহররমের সঙ্গে পয়লা বৈশাখের মিল ছিল। সে থেকেই পয়লা বৈশাখ বাংলা নববর্ষ হিসেবে উদ্যাপিত হয়ে আসছে। সুতরাং বলা যায়, বাংলা সনের সঙ্গে ইসলামী ঐতিহ্যের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। বাংলা নববর্ষ পালনে ইসলামী ঐতিহ্যের ব্যত্যয় যাতে না ঘটে সেদিকে নজর দিতে হবে। পয়লা বৈশাখ বাঙালির নববর্ষ। নামাজ, দান-সদকা, নফল রোজা, কোরআন তিলাওয়াত, আল্লাহর কাছে করোনাভাইরাস থেকে মুক্তির মোনাজাত করার মাধ্যমে এ বছর নববর্ষ উদ্যাপন করা যেতে পারে। নতুন বছরের নতুন দিনে কোনো অভাবীর অভাব পূরণ করে কিংবা ঋণগ্রস্তকে সাহায্য করা যেতে পারে। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েও নববর্ষ উদ্যাপন করা যেতে পারে।

সর্বশেষ খবর