শনিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

সারা দেশকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা

আইন মান্যতায় কঠোর হোন

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেশে ভয়াবহ আকারে বাড়ছে। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৩৪১ জনকে এ ভাইরাসে আক্রান্ত বলে শনাক্ত করা হয়েছে। এই সময়ে করোনায় মারা গেছেন সরকারি হিসাবে ১০ জন। ইতিমধ্যে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা সরকারি হিসাবে ১ হাজার ৫৭২-এ পৌঁছেছে। করোনা শনাক্তের পরীক্ষার সুযোগ সীমিত হওয়ায় আক্রান্তের অনেকেই হিসাবের বাইরে থাকছে। দেশে প্রতিদিনই জ্বর, সর্দি, শ্বাসকষ্ট নিয়ে গড়ে অন্তত ১০ জন মারা যাচ্ছেন। এর একাংশও করোনায় আক্রান্ত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে সরকার সারা দেশকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে। বৃহস্পতিবার সরকারিভাবে এ ঘোষণা দিয়ে বলা হয়, বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে। হাঁচি, কাশি ও পরস্পরের মেলামেশার কারণে এ রোগের বিস্তার ঘটে। বিশ্বে এ রোগের প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী এর একমাত্র প্রতিষেধক হচ্ছে পরস্পর থেকে নির্দিষ্ট দূরত্বে অবস্থান করা। যেহেতু একে অন্যের সঙ্গে মেলামেশা নিষিদ্ধ ছাড়া সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়, সেহেতু সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮-এর ১১ (১) ধারার ক্ষমতাবলে সমগ্র বাংলাদেশকে সংক্রমণের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করা হলো। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়- করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রশমনে জনগণকে অবশ্যই ঘরে থাকতে হবে, অতীব জরুরি দরকার ছাড়া ঘরের বাইরে বের হওয়া যাবে না। এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত কেউ ঘরের বাইরে যেতে পারবে না। আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ সরকারি প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টদের সহায়তায় আইন প্রয়োগ করার ক্ষমতা রাখেন। এ আদেশ বৃহস্পতিবার থেকে জারি হয়েছে বলেও জানানো হয় ঘোষণায়। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সারা দেশকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা একটি যথার্থ উদ্যোগ। তবে শুধু ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা নয়, নাগরিকরা যাতে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলে তা নিশ্চিত করাও জরুরি। জরুরি সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছাড়া কেউ বিনা প্রয়োজনে বাইরে বেরোলে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। গরিব ও অভাবী পরিবারগুলোর জন্য ঘরে ঘরে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়াও জরুরি।

এ ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার বিষয়টিও গুরুত্বের দাবিদার।

সর্বশেষ খবর