রবিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

মাহে রমজানকে স্বাগত জানিয়ে রসুলুল্লাহর ভাষণ

মুফতি মুহাম্মাদ এহছানুল হক মুজাদ্দেদী

মাহে রমজানকে স্বাগত জানিয়ে রসুলুল্লাহর ভাষণ

রহমত, মাগফিরাত, নাজাতের মাস মাহে রমজান আমাদের দ্বারপ্রান্তে। মাহে রমজানকে স্বাগত জানিয়ে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিশ্ববাসীর উদ্দেশে যে ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেছেন তা আলোচনা করা হলো। হজরত সালমান ফারসি (রা.) বলেন, ‘একবার শাবান মাসের শেষ দিন রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের উদ্দেশে ভাষণ প্রদান করলেন। তিনি বললেন, হে লোকসকল! তোমাদের ওপর এক মহান মাস, এক কল্যাণময় মাস ছায়া বিস্তার করছে। এটা এমন মাস, যাতে এমন একটি রাত রয়েছে, যা হাজার মাস অপেক্ষাও উত্তম। আল্লাহতায়ালা (তোমাদের জন্য) এ মাসের রোজাকে ফরজ করেছেন এবং রাতে (তারাবি) নামাজ পড়াকে নফল করেছেন। যে ব্যক্তি এ মাসে আল্লাহর (নৈকট্য) চেয়ে একটি নেক কাজ করবে সে ওই ব্যক্তির সমান হবে, যে অন্য মাসে ৭০টি ফরজ আদায় করেছে। এটা ধৈর্যের মাস। আর ধৈর্য এমন একটি গুণ যার প্রতিদান (সওয়াব) হলো জান্নাত।’

এটা পরস্পরিক সহানুভূতির মাস। এটা ওই মাস যাতে মুমিন ব্যক্তির রিজিক বাড়িয়ে দেওয়া হয়, এ মাসে যে ব্যক্তি একজন রোজাদারকে ইফতার করাবে এটা তার পক্ষে তার গুনাসমূহের জন্য ক্ষমাস্বরূপ হবে এবং তার নিজেকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তির কারণ হবে। আর তাকে রোজাদারের সমান সওয়াব দান করা হবে; এতে তার সওয়াব থেকে কিছুই কমানো হবে না। হাদিস বর্ণনাকারী বলেন, ‘আমরা বললাম, ইয়া রসুলুল্লাহ! আমাদের প্রত্যেক ব্যক্তি এমন সামর্থ্য রাখে না, যা দ্বারা রোজাদারকে ইফতার করাতে পারে। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ এ সওয়াব ওই ব্যক্তিকেও দান করেন, যে কোনো রোজাদারকে এক ঢোক দুধ দ্বারা, একটি খেজুর দ্বারা অথবা এক ঢোক পানি দ্বারা ইফতার করায়। যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে পরিতৃপ্তির সঙ্গে ভোজন করায় আল্লাহ তাকে আমার হাউস (কাউসার) থেকে পানীয় পান করাবেন। ফলে জান্নাতে প্রবেশ করা পর্যন্ত সে কখনো তৃষ্ণার্ত হবে না। এটা এমন একটি মাস, যার প্রথম অংশ রহমত, মধ্য অংশ ক্ষমা আর শেষ অংশ জাহান্নাম থেকে মুক্তি। যে ব্যক্তি এ মাসে নিজের অধীনস্তদের কর্মভার হালকা করে দেবে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেবেন এবং তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করবেন।’ বায়হাকি, মিশকাত।

করোনাভাইরাস মহামারীর এই সময়ে গরির-দুঃখী প্রতিবেশী মুসলিমদের সাহরি/ইফতারে যেন আমরা সহায়তা করতে পারি, মহান আল্লাহ আমাদের সেই তৌফিক দান করুন।

লেখক :  খতিব, মণিপুর বাইতুর রওশন (মাইকওয়ালা) মসজিদ, মিরপুর, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর