বৃহস্পতিবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

সচল হোক অর্থনীতি

উৎপাদনে ফেরার উদ্যোগ নিন

লকডাউনে দেশের অর্থনীতিতে অশনিসংকেত স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। কয়েক কোটি মানুষের জন্য খাদ্যের ব্যবস্থা করা সত্ত্বেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হচ্ছে। খাবারের দাবিতে প্রতিদিনই সংঘটিত হচ্ছে বিক্ষোভ। লুট হয়েছে ত্রাণবাহী গাড়ি। বেতনের দাবিতে শ্রমজীবীরা রাজপথে নামছে। কৃষিপণ্য পরিবহনেও সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। রেকর্ড পরিমাণ বোরো ধান উৎপাদনে কৃষক যখন ন্যায্য মূল্য না পাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে তখন পরিবহন সংকটে এক মাসে চালের দাম বেড়েছে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ। এদিকে লকডাউনে প্রতিদিন ক্ষতি হচ্ছে ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের মতে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত এক মাসে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ক্ষতি ১ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। লকডাউন দীর্ঘায়িত হলে প্রতিদিনের ক্ষতির পরিমাণও বাড়বে। মঙ্গলবার ‘অর্থনীতিতে করোনার প্রভাব’ শীর্ষক এক সমীক্ষা প্রতিবেদনে এ হিসাব প্রকাশ করা হয়। বাংলাদেশের অর্থনীতির তিনটি বড় খাত- কৃষি, শিল্প ও সেবা খাত ধরে ক্ষতির অনুমিত হিসাব দেওয়া হয়েছে এ সমীক্ষা প্রতিবেদনে। সমীক্ষায় বলা হয়, লকডাউনের কারণে প্রতিদিন কৃষিতে ক্ষতি হচ্ছে ২০০ কোটি, শিল্প খাতে ১ হাজার ১৩১ কোটি, উৎপাদন ও নির্মাণ খাতে প্রায় ১ হাজার ১৩১ কোটি ও সেবা খাতে ২ হাজার কোটি টাকা। বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও গত ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সবাইকে ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে সরকার। এই সময়ে সব ধরনের কলকারখানাসহ বাইরের সব কাজকর্ম বন্ধ রয়েছে। এদিকে লকডাউন পুরো মে পর্যন্ত থাকলে দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ২ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে মনে করছে এই গবেষক দল। বিপর্যয় এড়াতে লকডাউন শিথিল করে কীভাবে কৃষি, শিল্প, সেবা খাতসহ সব ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক কর্মকা- সচল করা যায় সেদিকে নজর দিতে হবে। করোনাভাইরাসের কারণে উৎপাদন বন্ধ থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে এবং নৈরাজ্য সৃষ্টিতে  মদদ জোগাবে; যা কাম্য হওয়া উচিত নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর