মঙ্গলবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

অচলাবস্থা কাম্য নয়

অর্থনৈতিক কর্মকান্ড সচল হোক

অচলাবস্থা থেকে বেরিয়ে আসছে বাংলাদেশ। সীমিত পরিসরে চালু হয়েছে সরকারি-বেসরকারি অফিস, শিল্পকারখানা। করোনাভাইরাসের কারণে সাধারণ ছুটি বহাল থাকা সত্ত্বেও সীমিত পর্যায়ে সরকারি-বেসরকারি অফিস, কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের অভিশাপ ঠেকাতে অবদান রাখবে। করোনাভাইরাসের চেয়ে এ দুটি অভিশাপ যে আরও বেশি বড় তা দুনিয়াজুড়ে অভাবী মানুষের প্রতিক্রিয়ায় স্পষ্ট হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষকে বাঁচিয়ে রাখতে নানামুখী সহায়তা দেওয়া হলেও এগুলো কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। করোনাভাইরাস দুর্যোগে উৎপাদনব্যবস্থা স্থবির হয়ে পড়ায় মাত্র এক মাসের ব্যবধানে লাখ লাখ মানুষের জীবন-জীবিকায় অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় সব ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মান্য করে অফিস-আদালত, কলকারখানা চালুর কোনো বিকল্প নেই। সীমিত আকারে সরকারি-বেসরকারি অফিস, কারখানা চালুর এ প্রক্রিয়াকে অর্থনীতির চাকা পূর্ণাঙ্গভাবে চালুর দিকে এগিয়ে নিতে হবে। এ মুহূর্তে ব্যাংকগুলোর কার্যক্রম পূর্ণাঙ্গভাবে চালুর উদ্যোগ নেওয়া উচিত। সীমিত আকারে ব্যাংক চালু রাখার সিদ্ধান্ত করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোর বদলে আরও বাড়াতেই কার্যত অবদান রাখছে। কারণ ব্যাংকগুলোয় মাত্রাতিরিক্ত ভিড় জমে ওঠায় তা সংক্রমণের জন্য সহায়ক হচ্ছে। অন্যদিকে ব্যাংকিং প্রক্রিয়ার অভাবে স্তব্ধ হয়ে পড়ছে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। ইউরোপ-আমেরিকার দেশগুলোয় কভিড-১৯ বা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করলেও উৎপাদনব্যবস্থা স্তব্ধ হয়ে পড়ায় ঝুঁকি নেওয়া হয়নি। বাংলাদেশেও অভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে হবে। সবকিছু চালু রাখতে হবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে। দেরিতে হলেও সরকার সে কৌশলকে যথার্থ মনে করছে। ইতিমধ্যে দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য পোশাকশিল্পের কারখানাগুলো সীমিত আকারে খুলে দেওয়া হয়েছে। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার এ শিল্প যাতে বাজার না হারায় তা নিশ্চিত করতে এর কোনো বিকল্প ছিল না। আমরা মনে করি, অন্য সব ক্ষেত্রেও উৎপাদনের পথে যেতে হবে। করোনাভাইরাসের ভয়ে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকলে তা হবে আত্মহননের শামিল। ভয়াবহ এ ভাইরাসকে ভয় নয়, তা থেকে সাবধান থেকে জীবন-জীবিকার সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর