বুধবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

বেহাল করোনা টেস্ট

এ অবস্থা থেকে সরে আসতে হবে

করোনাভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক এযাবৎ আবিষ্কৃত হয়নি। এ ভয়াবহ রোগ থেকে নিরাময় লাভের কোনো সুনির্দিষ্ট ওষুধও নেই। এ ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার একমাত্র উপায় সঙ্গনিরোধ অবস্থায় থাকা। বিশেষ করে যারা এ ভাইরাসে আক্রান্ত তাদের অন্যদের থেকে নিরাপদ দূরে রেখে চিকিৎসা দেওয়া। এটি করতে হলে কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কিনা তা আগে চিহ্নিত করতে হবে। এ কারণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে টেস্ট টেস্ট এবং টেস্টের কথা বলা হয়েছে। দুনিয়ার অধিকাংশ দেশও সে পথে হাঁটছে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এর ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে। এমনিতেই টেস্টের পরিমাণ একেবারে সীমিত। যেখানে টেস্ট করা হচ্ছে সেখানকার পরিবেশ নিয়েও রয়েছে নানান প্রশ্ন। টেস্টের জন্য গাদাগাদি করে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। আবার কোথাও একই ঘরের মধ্যে নমুনা পরীক্ষা করতে যাওয়া সবাইকে বসিয়ে রাখা হচ্ছে। সেখানে গায়ে গা লাগিয়ে বসে থাকতে হচ্ছে সম্ভাব্য পজিটিভ ও নেগেটিভ রোগীকে। আবার করোনা টেস্ট ছাড়া সাধারণ কোনো রোগীকেও ভর্তি নেওয়া হচ্ছে না হাসপাতালগুলোয়। টেস্টের এ দীর্ঘ ভোগান্তি শেষ করতে করতে অনেক ক্ষেত্রে রোগীই বিদায় নিচ্ছেন পৃথিবী থেকে। গত ২৩ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনাবিষয়ক উপদেষ্টা খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম। তিন দিন ধরে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের কাছে ঘুরেও করোনা টেস্ট করাতে পারেননি। এমনকি মৃত্যুর পরও এই কর্মকর্তার নমুনা নিতে আসেননি প্রতিষ্ঠানটির কেউ। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নিজস্ব উদ্যোগে ওই কর্মকর্তার নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। তাতে ধরা পড়ে তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। সন্দেহভাজন রোগীরা তাদের নমুনা পরীক্ষার জন্য প্রতিদিনই আইইডিসিআরের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। কিন্তু তাদের এক ক্ষুদ্র অংশকে নমুনা পরীক্ষার জন্য ডাকা হচ্ছে। যাদের ৮-১০ শতাংশ করোনায় সংক্রমিত বলে ধরা পড়ছে। কিন্তু পরীক্ষার সময় সম্ভাব্য পজিটিভ ও নেগেটিভ রোগীদের গাদাগাদি অবস্থান প্রকারান্তরে করোনা সংক্রমণের ভূমিকা রাখছে। জনস্বার্থে এই ঝুঁঁকিপূর্ণ ও কা-জ্ঞানহীন অবস্থা থেকে সরে আসতে হবে সংশ্লিষ্টদের।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর