রবিবার, ৩ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

শিল্প খাতের সংকট

উৎপাদন শুরুর উদ্যোগ নিন

করোনাভাইরাসে স্থবিরতা নেমে এসেছে দেশের শিল্প খাতে। এক মাস বন্ধ থাকার পর তৈরি পোশাক খাতে মোটামুটি কাজ শুরু হলেও বেশির ভাগ শিল্পকারখানাই এখনো বন্ধ। ফলে শিল্পমালিকরা পড়েছেন মহাবিপাকে। এসব শিল্পের সঙ্গে জড়িত অন্তত আড়াই কোটি মানুষ। যার মধ্যে অন্তত ২ কোটি এখন বিপর্যয়ের মুখে। শুধু বৃহৎ শিল্পের সঙ্গেই জড়িত প্রায় ২০ লাখ মানুষ, যারা পুরোপুরি নাজুক অবস্থার শিকার। কারখানা বন্ধ থাকলেও সংশ্লিষ্ট শিল্পের বিপরীতে নেওয়া বিপুল অঙ্কের ব্যাংক ঋণের সুদ গুনতে হচ্ছে। ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকের সুদ ও ইউটিলিটি বিল মওকুফের দাবি জানিয়েছেন শিল্পোদ্যোক্তারা। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশে বেসরকারি খাত ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বৃহৎ শিল্প স্থাপনের মাধ্যমে লাখ লাখ লোকের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এ শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বেশির ভাগই আমদানির বিকল্প হিসেবে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করছে। রপ্তানিমুখী শিল্পগুলোও দেশের অর্থনীতিতে রাখছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। শিল্পোদ্যোক্তারা বলছেন, এখন যে পরিস্থিতি চলছে তা দীর্ঘায়িত হলে কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। শ্রমিকরা বেকার হয়ে যাবে। ইতিমধ্যে যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণে কমপক্ষে ব্যাংকের সুদ মওকুফ করা দরকার। ব্যাংকের সুদ ডিসেম্বর পর্যন্ত মওকুফ না করলে গভীর সংকটে পড়বে শিল্প খাত। আশার কথা, প্রধানমন্ত্রী শিল্পোদ্যোক্তাদের সংকট উত্তরণে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। এ প্রেক্ষাপটে ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংক ঋণের সুদ মওকুফের বিষয়টি বিবেচনায় আনা উচিত। পাশাপাশি শ্রমিক-কর্মচারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে পোশাকশিল্পের মতো অন্যান্য শিল্প চালুর কথাও ভাবতে হবে। পরিবহনব্যবস্থা সচল করার ব্যাপারেও উদ্যোগ থাকা দরকার। পরিবহন খাতে অচলাবস্থা থাকায় কৃষি খাতেও ধস নামার উপক্রম হচ্ছে। উৎপাদিত কৃষিপণ্য পানির দামে বিক্রি করাও কঠিন হয়ে পড়ছে। পোলট্রি ও ডেইরি ফার্মগুলো অস্তিত্বের সংকটে ভুগছে। করোনা নিঃসন্দেহে এক প্রাণঘাতী ভাইরাস। ক্ষুধা ও বেকারত্ব যে তার চেয়ে ভয়াবহ তা এক প্রমাণিত সত্যি। দেশের সাড়ে ৩ কোটি মানুষের জীবন-জীবিকার স্বার্থে কলকারখানা চালুর ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর