সোমবার, ৪ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

টেকনিশিয়ানের অভাব

জরুরিভিত্তিতে নিয়োগ দিন

করোনাভাইরাসের কোনো সুনির্দিষ্ট ওষুধ কিংবা প্রতিষেধক মানুষ এখনো আবিষ্কার করতে পারেনি। ফলে একাংশ শতাব্দীতে জ্ঞান-বিজ্ঞানের চরম উৎকর্ষতার যুগেও মানুষ ক্ষুদ্রতিক্ষুদ্র একটি ভাইরাসের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছে। মানব বিধ্বংসী এই ভাইরাসের থাবা থেকে রেহাই পেতে ইতিমধ্যে বেকার অবস্থায় ঘরে অবস্থান করছে কয়েকশ কোটি মানুষ। মাত্র তিন মাসে করোনায় আক্রান্ত হয়ে যত মানুষ প্রাণ হারিয়েছে তার সংখ্যা প্রথম মহাযুদ্ধে নিহত লোকের চেয়েও বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ঘাতক ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য করোনা পরীক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। যাতে এ ভাইরাসে আক্রান্তদের আলাদা রেখে অন্যদের নিরাপদ রাখা যায়। বাংলাদেশেও একই উদ্দেশ্যে করোনা শনাক্তের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ জন্য ল্যাবের সংখ্যা বাড়ানো হলেও প্রয়োজনীয় মেডিকেল টেকনোলজিস্টের অভাবে ঠিকভাবে রোগীর নমুনা সংগ্রহ করা যাচ্ছে না। মাঠপর্যায়ে যাদের দিয়ে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে তারা যথাযথভাবে নমুনা সংগ্রহ না করায় তা পরীক্ষাও করা যাচ্ছে না। ফলে সারা দেশ থেকে ব্যাপক সংখ্যক মানুষের নমুনা সংগ্রহ করে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি জানার সুযোগ মিলছে না স্বাস্থ্য বিভাগের। আইইডিসিআরের কর্মকর্তারা বলেছেন, নমুনা সংগ্রহে যাদেরই কিছু অভিজ্ঞতা আছে তাদের কাজে লাগানো উচিত। একই সঙ্গে যতদ্রুত সম্ভব মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগ দেওয়া উচিত। বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, সময়ক্ষেপণ না করে দ্রুততম সময়ে টেকনোলজিস্ট নিয়োগ দিয়ে তাদের নমুনা সংগ্রহের জন্য মাঠে পাঠানো হোক। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও টেকনিশিয়ানের পদ রয়েছে ৭ হাজার ৯২০টি। যার মধ্যে শূন্য পদের সংখ্যা ২ হাজার ৭৫৫টি। সারা দেশে জেলা সদর হাসপাতালে ন্যূনতম চারজন এবং প্রত্যেক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কমপক্ষে দুজন করে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট থাকার কথা। কিন্তু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স দূরের কথা অনেক জেলা সদর হাসপাতালেই টেকনোলজিস্ট নেই। স্বাভাবিক অবস্থায় প্রয়োজনীয় সংখ্যার চেয়ে এক-তৃতীয়াংশ টেকনোলজিস্ট কম থাকায় এখন জরুরি পরিস্থিতিতে খেসারত দিতে হচ্ছে। এ অবস্থার অবসানে জরুরি ভিত্তিতে টেকনোলজিস্ট নিয়োগের উদ্যোগ নিতে হবে। প্রয়োজনে অস্থায়ী ভিত্তিতে বেশি সংখ্যক টেকনোলজিস্ট নিয়োগ করে পরবর্তীতে তাদের মধ্য থেকে যোগ্যতরদের স্থায়ী করার কথা ভাবা যেতে পারে। এ বিষয়ে হেলাফেলা কিংবা সময়ক্ষেপণের কোনো সুযোগ থাকা উচিত নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর