মঙ্গলবার, ৫ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

নাইকো মামলায় জয়

উৎকোচখোরদের শাস্তিও কাম্য

নাইকো মামলায় অবশেষে বাংলাদেশই জয়ী হলো। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর সেটেলমেন্ট অব ইনভেস্টমেন্ট ডিসপুটেড (ইকসিড) আদালতে মামলা চলার পর রায় বাংলাদেশের পক্ষে এসেছে। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে কানাডার বহুজাতিক তেল-গ্যাস কোম্পানি নাইকোকে বহুল কথিত হাওয়া ভবনের কুশীলবদের আগ্রহে গ্যাস উত্তোলনের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এ প্রেক্ষাপটে ছাতকের টেংরাটিলা গ্যাস ক্ষেত্র উন্নয়নে ২০০৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি নাইকোর সঙ্গে চুক্তি করে বাপেক্স। গ্যাস ক্ষেত্রে অনুসন্ধান কূপ খননকালে ২০০৫ সালের ৭ জানুয়ারি ও ২৪ জুন দুই দফা প্রচ- বিস্ফোরণ ঘটে। দুর্ঘটনার কারণে মজুদ গ্যাস পুড়ে যায়। আশপাশের সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এজন্য নাইকোর কাছে ৭৪৬ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করে পেট্রোবাংলা; যা দিতে নাইকো অস্বীকৃতি জানায়। ক্ষতিপূরণ আদায়ে পেট্রোবাংলা নাইকোর বিরুদ্ধে ২০০৭ সালে স্থানীয় নিম্ন আদালতে মামলা করে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে নাইকোর বিরুদ্ধে মামলাটি জোরদার হয়। ফলে বিপাকে পড়ে কানাডীয় বহুজাতিক কোম্পানিটি। পরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর শুরু হয় নাইকোর সঙ্গে জাতীয় স্বার্থবিরোধী চুক্তির তদন্ত। নিজেদের পিঠ বাঁচাতে নাইকো ২০১০ সালে ছাতক গ্যাস ক্ষেত্র বিস্ফোরণের ঘটনায় তারা দায়ী নয় মর্মে ঘোষণা চেয়ে ইকসিডে একটি শালিসি মোকদ্দমা দায়ের করে। ২০১৬ সালে বাপেক্স আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করে তাদের মাধ্যমে সমীক্ষা পরিচালনা করে। এ সমীক্ষার প্রেক্ষাপটে ১০০ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ চেয়ে ইকসিডে মামলা করে সরকার। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি দেওয়া রায় বাংলাদেশের পক্ষে আসায় ক্ষতিপূরণ বাবদ নাইকোর কাছ থেকে বাংলাদেশ ১ বিলিয়ন ডলার বা ৮ হাজার কোটি টাকা পেতে পারে। ইকসিড স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও প্রতিবেশের ক্ষতি নির্ণয় করে বাংলাদেশকে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দিতে বলেছে। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, দীর্ঘ ১০ বছর আইনি প্রক্রিয়ার পর এ মামলার রায় বাংলাদেশের পক্ষে আসায় বিশ্বের কাছে বার্তা গেছে, বাংলাদেশে গিয়ে যা ইচ্ছা তা করা যাবে না। নাইকোর দুর্নীতি নিয়ে বাংলাদেশেও মামলা রয়েছে। নাইকোর কাছ থেকে কারা উৎকোচ নিয়েছে তা উদ্ঘাটনে এ মামলা সক্ষম হবে বলে আশা করা যায়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর