বৃহস্পতিবার, ৭ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

রহমত, বরকত ও নাজাতের রমজান

মুহম্মাদ ওমর ফারুক

রহমত, বরকত ও নাজাতের রমজান

মহান আল্লাহর অফুরন্ত রহমত, বরকত ও নাজাতের মাস রমজান। এ মাস মানুষকে ধৈর্য ও সহমর্মিতার মহৎ গুণ শিক্ষা দেয়। এ গুণগুলো মানুষের সফলতার চাবিকাঠি হিসেবে বিবেচিত হয়। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, রমজান বরকতময় মাস, ধৈর্য ও সহমর্মিতার মাস।’ রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘রোজা ঢালস্বরূপ। সুতরাং কেউ যেন এ মাসে অশ্লীল ও মূর্খতাসুলভ কাজ না করে। কেউ যদি তার সঙ্গে লড়াই-ঝগড়া করতে চায় তাহলে সে যেন বলে আমি রোজাদার।’ মানুষ এ মাসে দীর্ঘক্ষণ পানাহার থেকে বিরত থেকে ধৈর্য ও সংযমের অভ্যাস গড়ে তোলে। এই সংযমী মনোভাবের বিনিময়ে আল্লাহ তাকে দেবেন পরকালের শান্তি-সমৃদ্ধি। আল কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে, ‘সুতরাং সে যাপন করবে সন্তোষজনক জীবন সুউচ্চ জান্নাতে। আর ফলরাশি অবনমিত থাকবে নাগালের মধ্যে। তাদের বলা হবে পানাহার কর তৃপ্তির সঙ্গে তোমরা অতীত দিনে যা করেছিলে তার বিনিময়ে।’ সূরা আল হাক্কা, আয়াত ২১-২৪।

হিজরি সনের নবম মাস হলো রমজানুল মুবারক। এ মাসের মর্যাদা অপরিসীম। আল্লাহ এ মাসে দান করেছেন মুষলধারে বৃষ্টির মতো অশেষ বরকত ও অফুরন্ত কল্যাণ।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যখন রমজানের আগমন ঘটে তখন জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয়। জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেওয়া হয় আর শয়তানকে শিকলে আবদ্ধ করা হয়।’ বুখারি, মুসলিম।

ইরশাদ হচ্ছে, ‘মাহে রমজান, যাতে নাজিল করা হয়েছে কোরআন যা মানুষের জন্য হেদায়াত ও সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা এবং সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী। তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এ মাসে উপস্থিত হয় সে যেন সারা মাস রোজা রাখে।’ সূরা বাকারা, আয়াত ১৮৫।

রহমতের এ মাসে আল্লাহর কাছে বেশি করে রহমত চাইতে হবে। জীবিতদের জন্য রহমত চাইতে হবে, মৃতদের জন্য রহমত চাইতে হবে এবং করোনা মহামারীর এই সময়ে গোটা উম্মতের জন্য রহমত চাইতে হবে। রমজানে আল্লাহর রহমত পাওয়ার জন্য গরিব-দুঃখীর প্রতি দয়া করতে হবে। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা দুনিয়াবাসীর প্রতি দয়া দেখাও তাহলে আল্লাহ তোমাদের প্রতি রহমত নাজিল করবেন।’ তিরমিজি।

এ বছর মাহে রমজান এসেছে গ্রীষ্মকালে। যারা কষ্ট সহ্য করে রোজা রাখছে দুনিয়ার ক্ষুধা-পিপাসা সহ্য করছে, তাদের জন্য সুসংবাদ রয়েছে। এ কষ্টের বিনিময়ে কিয়ামতের দিন প্রচন্ড গরমের সময় আল্লাহ হাউসে কাওসারের পানি পান করাবেন এবং রহমতের ছায়ায় স্থান দান করবেন।

হজরত আবু মুসা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহ রব্বুল আলামিন নিজের ওপর অবধারিত করে দিয়েছেন যে ব্যক্তি তাঁর সন্তুষ্টির জন্য গ্রীষ্মকালে রোজা রেখে পিপাসার্ত থেকেছে তিনি তাকে কিয়ামতের দিন পানি পান করাবেন।’

                লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

সর্বশেষ খবর