বৃহস্পতিবার, ৭ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

বন্দরে জাহাজজট

সংকট নিরসনের উদ্যোগ নিন

একদিকে লকডাউন অন্যদিকে লাগাতার সরকারি ছুটির কারণে চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজজট দেখা দিয়েছে। জটের কারণে জাহাজ থেকে পণ্য নামাতে দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে। পরিণতিতে আমদানিকারকদের গুনতে হচ্ছে জাহাজপ্রতি ১ লাখ থেকে দেড় লাখ ডলার। লকডাউনের কারণে সরকারি কার্যক্রম সীমিত হয়ে পড়ায় দেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের গেটওয়ে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের কার্যক্রম ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এর ফলে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে জড়িত ব্যবসায়ীরা সময়মতো পণ্য খালাস করতে পারছেন না। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও বন্দর কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে কয়েক দিন ধরে কনটেইনার খালাসের কার্যক্রম কিছুটা বাড়লেও এখনো অতিরিক্ত সাত থেকে ১০ দিন পর্যন্ত জাহাজ বহির্নোঙরে ভাসমান রাখতে হচ্ছে। বার্থিংয়ে জাহাজের অবস্থান-সময় বেড়ে যাওয়ায় প্রতিটি জাহাজকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে, যা জাহাজশিল্প, শিপিং এজেন্ট, কনটেইনার পরিচালনাকারী মেইনলাইন অপারেটর- সব খাতেই বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। এ অবস্থায় শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বন্দরের পোর্ট ডিউজ, পাইলটেজ ফি, বার্থিং বা আনবার্থিং ট্যারিফসহ অন্তত আট ধরনের চার্জ মওকুফ বা অর্ধেক করার সুপারিশ করা হয়েছে। জাহাজজটের কারণে রমজানের জন্য আনা ছোলা, ডাল, পিয়াজ, চিনি, রসুন, আদা ইত্যাদি আটকে থাকায় খোলাবাজারে এসব পণ্যের দাম বাড়ছে। প্রায় দেড় মাস লকডাউনে সাধারণ মানুষের পকেট এমনিতেই শূন্যপ্রায়। বাড়তি দামে পণ্য কিনতে গিয়ে তাদের সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। বন্দর ব্যবহারকারীদের মতে, আট ধরনের চার্জ মওকুফ কিংবা হ্রাস করা হলে দেশের ব্যবসায়ীরা প্রতিকূল অবস্থায় টিকে থাকার সুযোগ পাবে। এর বিকল্প হলো সবকিছু খুলে দেওয়া এবং বন্দরের কার্যক্রম শতভাগ চালু করা। কিন্তু বাস্তব কারণে তেমন সিদ্ধান্ত সরকারের পক্ষে নেওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়ালে অন্তত বন্দর পূর্ণাঙ্গভাবে চালুর উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। করোনাভাইরাসে লকডাউনসহ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অর্থনীতির উৎপাদনসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো দ্রুত চালু করার উদ্যোগ নিতে হবে। বন্দর সর্বক্ষণ চালুর ব্যবস্থাও জরুরি। অন্য দেশগুলো করোনা সংক্রমণের মধ্যেও কীভাবে অর্থনীতির চাকা চালু রেখেছে তা থেকে শিক্ষা নেওয়া জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর