শুক্রবার, ৮ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনার ভ্যাকসিন

মহত্তম উদ্ভাবনের অপেক্ষায় মানুষ

করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে কঠিন লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত মানুষই জয়ী হতে চলেছে। এ ঘাতক ব্যাধির বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন উদ্ভাবনে নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিশ্বজুড়ে ১০৮টি গবেষক দল। এর মধ্যে আটটি ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমতি দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ইতিমধ্যে কার্যকর ভ্যাকসিন তৈরির দাবি করেছে ইতালি। মানবদেহে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য ভ্যাকসিন প্রয়োগ করে দি আমেরিকান ন্যাশনাল হেলথ ইনস্টিটিউট গত ১৬ মার্চ। ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনও ভ্যাকসিন তৈরিতে একধাপ এগিয়ে আছে। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য অনুমোদন পাওয়া আটটি ভ্যাকসিনের মধ্যে পাঁচটিই চীনের। এ ছাড়া একটি করে ভ্যাকসিন তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। অন্যটি যৌথভাবে তৈরির কাজ করছে জার্মান কোম্পানি বায়োএনটেকে ও যুক্তরাষ্ট্রের বায়োটেক কোম্পানি পিজফার। ১৬ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমবারের মতো মানবদেহে পরীক্ষামূলকভাবে ভ্যাকসিন প্রয়োগের পর আরও সাত গবেষণা প্রতিষ্ঠান তাদের তৈরি কভিড-১৯-এর সম্ভাব্য ভ্যাকসিন মানবদেহে প্রয়োগ করেছে। পরীক্ষা শেষে কার্যকারিতার প্রমাণ পাওয়া গেলেই বাজারে আসবে করোনাভাইরাস প্রতিরোধের সম্ভাব্য ভ্যাকসিন বা টিকা। ইতালির গবেষকদের দাবি, বিশ্বে করোনাভাইরাসের প্রথম ভ্যাকসিন তারা তৈরি করে ফেলেছে। তাদের দাবি, এমন ভ্যাকসিন তারা আবিষ্কার করেছে, যা মানুষের কোষে ভাইরাসটিকে নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম হয়েছে। অ্যান্টিবডি-সমৃদ্ধ রক্ত থেকে সিরামকে আলাদা করে এ ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়েছে। ইতালির রোমে সংক্রামক রোগের চিকিৎসা কেন্দ্র স্পাল্লানজানি হাসপাতালে করা একাধিক পরীক্ষায় দেখা গেছে, ইতালীয় ভ্যাকসিনটি ইঁদুরের ক্ষেত্রে অ্যান্টিবডি তৈরি করেছে, যা মানুষের কোষেও কাজ করে। ভ্যাকসিন পরীক্ষার পর গবেষকরা দেখেছেন, মানবকোষেও এটি ভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করছে। করোনাভাইরাসে ইতিমধ্যে যে প্রাণহানি ঘটেছে তা প্রথম মহাযুদ্ধের চেয়ে বেশি। অর্থনীতির যে ক্ষতি করেছে এ ভাইরাস তা প্রথম মহাযুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতিকেও ছাড়িয়ে গেছে বলে ধারণা করা হয়। লাখ লাখ মানুষকে ঠেলে দিয়েছে দারিদ্র্যসীমার নিচে। কভিড-১৯-এর কার্যকর ভ্যাকসিন উদ্ভাবন করা গেলে তা হবে মানবজাতির জন্য এক সুখবর। বিজ্ঞানের জন্যও এটি হবে এক মহত্তম আবিষ্কার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর