শনিবার, ১৬ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

চাল উৎপাদনে বিশ্বে তৃতীয়

কৃষকের প্রতি অভিনন্দন

করোনার প্রভাবে বিশ্বজুড়ে খাদ্য সংকট মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে বলে যখন আশঙ্কা করা হচ্ছে তখন বাংলাদেশের জন্য স্বস্তির খবর হয়ে উঠেছে রেকর্ড পরিমাণ বোরো ধান উৎপাদনের ঘটনা। গম, ভুট্টা, আলুসহ অন্যান্য খাদ্যপণ্যের উৎপাদনও এ বছর আগের চেয়ে ভালো। করোনায় শিল্পকারখানার উৎপাদন স্তব্ধ হয়ে পড়লেও কৃষি দেশের ১৭ কোটি মানুষের জন্য এ মুহূর্তের সবচেয়ে বড় সান্ত্বনা। চাল উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্যের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় সংস্থার পক্ষ থেকে। এতে বলা হয়, কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে চাল উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় ইন্দোনেশিয়াকে টপকে চাল উৎপাদনে তৃতীয় বৃহত্তম দেশ হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। মার্কিন কৃষি বিভাগের পূর্বাভাস বলছে, চলতি অর্থবছরে (২০১৯-২০) উৎপাদন ৩ কোটি ৬০ লাখ টন ছাড়িয়ে যাবে। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ চাল উৎপাদনকারী হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এত দিন ধরে চীন ও ভারতের পর তৃতীয় স্থানটি ছিল ইন্দোনেশিয়ার। তবে এবার ইন্দোনেশিয়াকে সরিয়ে সে অবস্থানে উঠে আসছে বাংলাদেশ। চলতি অর্থবছরে আমন মৌসুমে রেকর্ড উৎপাদন হয়েছে। আবার গত আউশ মৌসুমেও চালের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। সর্বশেষ চলতি বোরো মৌসুমে সাড়ে ৪ লাখ টন বাড়তে পারে চালের উৎপাদন। তিন মৌসুমে উৎপাদন বৃদ্ধির সম্মিলিত ফলই বাংলাদেশ শীর্ষ তিনে চলে আসার মূল কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। চাল উৎপাদনে বাংলাদেশের তৃতীয় স্থানে উঠে আসা নিঃসন্দেহে আশাজাগানিয়া ঘটনা। কারণ হাজার বছর ধরে আমাদের এই দেশ খাদ্য ঘাটতির এলাকা হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। ব্রিটিশ আমলে দুর্ভিক্ষে মারা গেছে এক-তৃতীয়াংশ মানুষ। ক্ষুধাজয়ের সাফল্য স্বভাবতই বাংলাদেশের জন্য এক বড় অর্জন। তবে এতে আত্মপ্রসাদের কোনো সুযোগ থাকা উচিত নয়। কৃষি আধুনিকীকরণের মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদন আরও বাড়াতে হবে। খাদ্য রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে আবির্ভাবের লক্ষ্যে থাকতে হবে অটল। কৃষিজমি সুরক্ষণেও নিতে হবে উদ্যোগ। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে যারা দেশবাসীর খাদ্য জোগান দিচ্ছে সেই কৃষকের প্রতি আমাদের অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা।

সর্বশেষ খবর