রবিবার, ১৭ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

ইতিকাফকারীর জন্য অসংখ্য পুরস্কার

মুফতি মুহাম্মদ আল আমিন

ইতিকাফকারীর জন্য অসংখ্য পুরস্কার

রমজানের শেষ ১০ দিন জুমার নামাজ চালু আছে এমন মসজিদে অবস্থান করা সুন্নাতে মুয়াক্কাদা  কিফায়া। অর্থাৎ এমন সুন্নাত যা মসজিদের আওতাধীন এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে যে কেউ আদায় করে দিলে সবার পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যাবে। আর কেউ আদায় না করলে সবাই গুনাহগার হবে। প্রিয় রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সব সময় রমজানের শেষ ১০ দিনে ইতিকাফ করতেন। তাঁর প্রিয়তমা জীবনসঙ্গিনী হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) বলেন, ‘রসুলুল্লাহ সব সময় রমজানের শেষ ১০ দিনে ইতিকাফ করতেন। তাঁর ওফাতের পর তাঁর স্ত্রীগণও ইতিকাফ করেছেন।’ এ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয়, পুরুষরা যেমন মসজিদে ইতিকাফ করে, তেমন মহিলারাও নিজ ঘরের যে কোনো একটি রুমে ইতিকাফ করতে পারবে। তবে ইতিকাফের নিয়ম মানতে হবে। বিশেষ  প্রয়োজন ছাড়া ওই রুম থেকে বের হলে ইতিকাফ ভেঙে যাবে। ইতিকাফের সওয়াব ও পুরস্কার পুরুষের মতো মহিলারাও অর্জন করতে পারে। ইতিকাফের ফজিলত ও পুরস্কার সম্পর্কে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘ইতিকাফকারী সকল প্রকার গুনাহ থেকে পবিত্র থাকে। তার আমলনামায় সেসব নেকি লেখা হয় যা অন্যরা ইতিকাফ না করার কারণে বাইরে গিয়ে করেছে।’ অর্থাৎ ইতিকাফ করার কারণে সে বাইরে গিয়ে যেসব নেক আমল করতে পারেনি আল্লাহ তাকে ইতিকাফরত অবস্থায় সেসব নেক আমলের সওয়াব দিয়ে দেন। ইমাম বায়হাকি তাঁর শুয়াবুল ইমান গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি এক দিন ইতিকাফ করবে আল্লাহ তার থেকে জাহান্নামকে তিন খন্দক দূরে ঠেলে দেবেন। এক খন্দকের দূরত্ব আসমান-জমিনের দূরত্বের সমান।’ আল কোরআনে সুরা কদর  নামে একটি পৃথক সুরা নাজিল হয়েছে শবেকদরের ফজিলত ও গুরুত্ব উল্লেখ করে। ইতিকাফকারী যেহেতু রমজানের শেষ ১০ দিন আল্লাহর ঘরে অবস্থান করে তাই তার শবেকদরের সৌভাগ্য নসিব হয়। হজরত সালমান ফারসি (রা.) বলেছেন, ‘একবার রসুলুল্লাহ আমাদের সামনে শাবানের শেষ তারিখে ভাষণ দান করলেন এবং বললেন, হে মানবম-লী! তোমাদের প্রতি ছায়া বিস্তার করেছে এক মহান মাস, মুবারক মাস। এটি এমন মাস যাতে একটি রাত রয়েছে যা হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। আল্লাহ এর রোজাগুলোকে করেছেন (তোমাদের ওপর) ফরজ আর রাতে নামাজ আদায়কে তোমাদের জন্য  করেছেন নফল। এ মাসে যে ব্যক্তি আল্লাহর নৈকট্যলাভের উদ্দেশ্যে একটি নফল আমল করল সে ওই ব্যক্তির সমান হলো যে অন্য মাসে একটি ফরজ আদায় করল। আর যে ব্যক্তি এ মাসে একটি ফরজ আদায় করল সে ওই ব্যক্তির সমান হলো যে অন্য মাসে ৭০টি ফরজ আদায় করল।’ মহান আল্লাহ যেন আমাদের শবেকদর নসিব করেন।

লেখক :  খতিব, সমিতি বাজার মসজিদ, নাখালপাড়া, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর