রবিবার, ১৭ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

দূষণের শিকার বুড়িগঙ্গা

কর্তৃপক্ষীয় দায়বদ্ধ ভূমিকা কাম্য

রাজধানীর প্রধান নদী বুড়িগঙ্গা ময়লা-আবর্জনা ফেলার ভাগাড় হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার দুর্ভাগ্য থেকে কিছুতেই মুক্ত হতে পারছে না। শীতলক্ষ্যা, তুরাগ, বালু নদের অবস্থাও অভিন্ন। বুড়িগঙ্গাসহ রাজধানীর নদ-নদী ও লেকগুলো থেকে পলিথিন প্লাস্টিক ও অন্যান্য বর্জ্য ওঠাতে সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয় করলেও ময়লা ফেলার ভাগাড় হিসেবে রাজধানীর নদ-নদীগুলোকে ব্যবহার করার অপসংস্কৃতি লালন করায় তা কোনো কাজে লাগছে না। বুড়িগঙ্গা এখন দেশের সবচেয়ে দূষিত নদীগুলোর একটি। প্রতিদিন এ নদীতে যেমন বিপুল পরিমাণ বর্জ্য ফেলা হচ্ছে তেমন আশপাশের কলকারখানার বর্জ্য এসে মিশছে এ নদীতে। প্রায়ই মৃত পশুর দেহ ফেলা হচ্ছে নদীতে, যা পরিবেশের জন্য খুবই বিপজ্জনক। কারণ মৃত পশু থেকে যেসব জীবাণু ছড়িয়ে পড়ছে তা নদীতে অন্যান্য প্রাণী ও মানুষের জন্য চরম বিপদ ডেকে আনতে পারে। দূষণ বন্ধের পদক্ষেপ না নেওয়ায় বুড়িগঙ্গা ক্রমান্বয়ে প্রাণ হারাচ্ছে। দুর্গন্ধের জন্য নদীর পাশে দাঁড়ানো কঠিন হয়ে উঠছে। দূষণমুক্ত রাখার কার্যকর পদক্ষেপ নিলে বুড়িগঙ্গা যে এতটা বিপন্ন হতো না তা সহজেই অনুমেয়। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও নানা ধরনের বর্জ্য নদীমুখী হচ্ছে, সেদিকে কারও খেয়াল নেই। বুড়িগঙ্গা অনেকেরই জীবন-জীবিকার প্রশ্ন। কিন্তু আমরা নগর উন্নয়নে যেভাবে যতœবান নদীকে দূষণমুক্ত রাখতে সেভাবে যতœবান নই। পরিবেশ অধিদফতরসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের এ ব্যাপারে আরও মনোযোগী হতে হবে। নিজেদের স্বার্থেই রাজধানীর নদ-নদী ও পরিবেশ বাঁচাতে হবে। বুড়িগঙ্গাসহ রাজধানীর নদ-নদী সুরক্ষায় পরিবেশ অধিদফতরকে পালন করতে হবে দায়বদ্ধ ভূমিকা। সিটি করপোরেশনকেও এ ব্যাপারে সক্রিয় হতে হবে। ঢাকাকে দূষণমুক্ত রাখার ক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধিদের দায় অন্য যে কারোর চেয়ে বেশি। অথচ নদ-নদী দূষণে বহু ক্ষেত্রে তারা সহযোগীর ভূমিকায় অবতীর্ণ। বুড়িগঙ্গাসহ রাজধানীর চার নদ-নদী রক্ষায় সাম্প্রতিককালে দখলদারদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করা হলেও দূষণের বিরুদ্ধে কোনো কর্তৃপক্ষের নজর নেই বললেই চলে। করোনা সংক্রমণের কারণে গত দুই মাস দখলদারবিরোধী অভিযানও কার্যত বন্ধ। আমরা আশা করব, রাজধানীর নদ-নদী সুরক্ষায় দখল-দূষণের বিরুদ্ধে সরকার ও সিটি করপোরেশনের উদ্যোগী ভূমিকার পাশাপাশি জনসচেতনতাও গড়ে তোলা হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর