রবিবার, ১৭ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

চিকিৎসা বিড়ম্বনা

রোগীদের মধ্যে আতঙ্ক দুর্ভাগ্যজনক

মানুষ হাসপাতালে যায় রোগমুক্তির জন্য। কিন্তু হাসপাতালে গিয়ে নিরাময়ের বদলে সংক্রমণের কারণে আরও গুরুতর রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। করোনা সংক্রমণের এই সময়ে এ ভাইরাসে আক্রান্ত নন এমন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তাতে আক্রান্ত হওয়া এমনকি প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। ফলে রোগীদের মধ্যেও হাসপাতাল সম্পর্কে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিশেষ করে একই হাসপাতালে সংক্রমণ ও সাধারণ রোগের চিকিৎসা হওয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে অসুস্থ জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামানের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েই তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। এর আগে সাবেক এক বিমান বাহিনী কর্মকর্তাও হাসপাতালে গিয়ে আক্রান্ত হন করোনাভাইরাসে। তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি হন। ভর্তির দিন তাঁর করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ আসে। তিন দিন পর তাঁর মৃত্যুর পর ফল আসে পজিটিভ। বিশেষজ্ঞদের মতে, সংক্রামক রোগের হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্সসংখ্যা তুলনামূলক কম থাকে। রোগে আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে তারাও ভীত থাকেন। হাসপাতালে গিয়ে একজন করোনা নেগেটিভ রোগীর করোনা পজিটিভ হওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তিনি কীভাবে আক্রান্ত হলেন তা নিয়ে কথা হতে পারে কিন্তু এটি অস্বাভাবিক নয়। সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালগুলোয় এ ধরনের ঘটনা যেমন ঘটতে পারে, তেমন অনেক সময় চিকিৎসকের মধ্যেও করোনা সংক্রমণ হতে পারে। এজন্য যেখানে করোনা রোগীদের চিকিৎসা হবে সেখানে অন্য রোগীদের চিকিৎসা না দেওয়াই ভালো। কিন্তু রূঢ় বাস্তবতায় এমনটি করা সম্ভব নয়। হাসপাতাল সম্পর্কে সাধারণ রোগীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করার ঘটনা নিঃসন্দেহে দুর্ভাগ্যজনক। করোনাকালে অন্যান্য রোগে আক্রান্তের মৃত্যুসংখ্যা যে বাড়ছে তা সহজেই অনুমেয়। দেশের চিকিৎসাব্যবস্থায় এটি যে অশনিসংকেত এতে দ্বিমতের অবকাশ নেই। এ সমস্যা সমাধানে সংক্রমণ রোগের চিকিৎসা বিশেষায়িত হাসপাতালে দেওয়ার বিষয়ে ভাবা দরকার। সংক্রমণ রোধে চিকিৎসাসংশ্লিষ্ট সবার মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টিও জরুরি। করোনার বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে অন্যান্য রোগের চিকিৎসা অবহেলার স্বীকার হবে, তা কোনোভাবে কাম্য নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর