সোমবার, ১৮ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

পোশাক শিল্পের সংকট

ক্রেতাদের মানবিক মনোভাব প্রত্যাশিত

করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন ক্রেতা প্রতিষ্ঠান ক্রয়াদেশ বাতিল করায় বাংলাদেশের পোশাক শিল্প গভীর সংকটে পড়েছে। একতরফাভাবে ক্রয়াদেশ বাতিল ব্যবসায়িক দিক থেকে নৈতিকতার পরিপন্থী। বিশেষ করে করোনা সংক্রমণের কঠিন সময়ে এমন সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের ৪০ লাখ পোশাক শ্রমিকের জীবন-জীবিকার জন্য হুমকি সৃষ্টি করেছে। ঢালাওভাবে ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিত করায় এ বিষয়ে ইইউ পার্লামেন্টের হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। ১৩ মে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য ও কমিটি অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডের (আইএনটিএ) চেয়ার মি. ব্রান্ড ল্যাঞ্জের কাছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, কিছু ইউরোপীয় ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতাপ্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলোর ক্রয়াদেশ বাতিল ও মূল্য কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ধরনের অনৈতিক ও অস্বস্তিকর পদক্ষেপ পোশাক ব্যবসার নৈতিকতার ধারণার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। উপরন্তু এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের চেতনারও পরিপন্থী। এ বিষয়ে সমাধান চেয়ে আইএনটিএ’র হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়। চিঠিতে বলা হয়, কভিড-১৯ বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং রপ্তানিভিত্তিক তৈরি পোশাক কারখানায় নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। দেশের রপ্তানি আয়ের ৮০ ভাগই আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। এ মুহূর্তে এ খাতটিকে পর্যাপ্ত সহায়তা না দিলে ধস নামতে পারে। পোশাক খাতকে চাঙ্গা করতে সরকার নানামুখী উদ্দীপনা প্যাকেজ গ্রহণ করলেও তা ৪০ লাখ শ্রমিকের জীবন ও জীবিকা নির্বাহের পক্ষে যথেষ্ট নয়। চিঠিতে বলা হয় গার্মেন্ট শিল্পে কর্মরতদের বেশির ভাগই নারী শ্রমিক। দেশের টেকসই উন্নয়নে তারা ভূমিকা রাখছেন। চিঠিতে কভিড-১৯ এর কারণে ইউরোপীয় অনেক ব্যবসায় ক্ষতির বিষয়টি স্বীকার করে বলা হয় এই চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠতে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগিতা বিশেষ করে নীতিগত ও মানভিত্তিক বাণিজ্য এবং সবার জন্য দায়বদ্ধ ব্যবসা পরিচালনায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভূমিকা প্রত্যাশা করা হয়। করোনা বা কভিড-১৯ একটি বৈশ্বিক সংকট। এ সংকটে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হলে ৪০ লাখ পরিবারের জীবনে সংকট নেমে আসবে। যা এড়াতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় দেবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর