সোমবার, ১৮ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

রক্তদানে উদ্বুদ্ধ হতে হবে

দাঁড়াতে হবে আর্ত মানবতার পাশে

করোনাজনিত সংকটে দেশের স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রম বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়েছে। মানবতার সেবায় নিয়োজিত বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষে দুর্যোগকালে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে অর্ধেক রক্ত সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে। বেশ কিছু সংগঠন তাদের কার্যক্রমই চালাতে পারছে না। ফলে যেসব রোগীর রক্তের প্রয়োজন তাদের বড় অংশ দাতাসংস্থাগুলোর কাছে এসে ফিরে যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে তারা পেশাদার দাতাদের কাছ থেকে রক্ত কিনছে। যাদের বেশিরভাগই মাদকাসক্ত বলে ভাবা হয়। স্বেচ্ছায় রক্তদান কার্যক্রম বিঘিœত হওয়ায় প্রয়োজনীয় রক্তের অভাবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন এবং চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যমান পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে এই মৌসুমের ডেঙ্গু রোগীদের জন্য অপরিহার্য প্লাটিলেট সরবরাহে বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। প্রতি ব্যাগ প্লাটিলেট সংগ্রহের জন্য একই গ্রুপের চার ব্যাগ তাজা রক্তের প্রয়োজন হয়। যার বড় অংশই স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের মাধ্যমে সংগৃহীত হয়। স্বেচ্ছা রক্তদানে দেশের সবচেয়ে বড় প্লাটফরম কোয়ান্টাম স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রম, রেডক্রিসেন্ট রক্তকেন্দ্র, সন্ধানী, বাঁধনসহ সব সংগঠনেই রোগী ও তাদের স্বজনরা চাহিদামাফিক রক্ত পাচ্ছেন না। কোয়ান্টাম ল্যাব গত এক মাসে বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে আসা রোগীদের সরবরাহ করেছে ৪ হাজার ৫৭৪ ইউনিট রক্ত ও রক্ত উপাদান। গত বছর একই সময়ে সরবরাহ করা হয়েছিল ৮ হাজার ৫৮৫ ইউনিট। অর্থাৎ, বর্তমান পরিস্থিতিতে মাসিক সরবরাহ কমে গেছে ৪ হাজার ১১ ইউনিট। ফলে প্রায় ৪৭ শতাংশ রক্তগ্রহীতা রক্ত বা রক্ত উপাদান না নিয়েই ফিরে গেছেন। তিন লক্ষাধিক রক্তদাতার একটি ডোনার পুল থাকায় তাদের কাছ থেকে রক্ত পাচ্ছে কোয়ান্টাম, যদিও তা বর্তমান চাহিদার তুলনায় অনেক কম। সবচেয়ে প্রতিকূল অবস্থায় পড়েছে মেডিকেল কলেজ ও শিক্ষাঙ্গন ভিত্তিক সংগঠন সন্ধানী ও বাঁধন। শিক্ষাঙ্গন বন্ধ থাকায় তাদের কার্যক্রম বন্ধ। করোনা সংক্রমণের ভয়ে আত্মীয়স্বজনের প্রয়োজনেও অনেকে রক্তদান করতে ভয় পাওয়ায় সংকট গভীর থেকে গভীরতর হয়ে উঠছে। এ অবস্থায় দেশবাসীর কাছে রক্তদানে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন রক্তদাতা সংগঠনগুলো। আমাদের বিশ্বাস এ আবেদনে কাক্সিক্ষত সাড়া পাওয়া যাবে।

সর্বশেষ খবর