শনিবার, ৩০ মে, ২০২০ ০০:০০ টা
ইতিহাস

রাজা অশোক

পিতা বিন্দুসারের মৃত্যুর পর অশোক যখন উত্তরাধিকারের দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন তখন তিনি স্পষ্টত বৌদ্ধ ছিলেন না। মৌর্য সিংহাসনে আরোহণের পরই বৌদ্ধধর্মের প্রতি তাঁর আগ্রহ সৃষ্টি হয়। ইতিহাসকারদের অধিকাংশই একমত যে, উত্তরাধিকারের দ্বন্দ্বে অশোক রাজসভার ব্রাহ্মণ সভাসদগণের তেমন সমর্থন পাননি এবং এ বিষয়টিই সম্ভবত তাঁকে বিকল্প হিসেবে বৌদ্ধ দর্শনের দিকে ঠেলে দেয়। তা ছাড়া বণিক শ্রেণির উত্থান এবং হেলেনীয় বিশ্বের সঙ্গে তাদের ক্রমবর্ধমান যোগসূত্রের ফলে যে সামাজিক পরিবর্তন এসেছিল, তাও সম্ভবত সম্রাট অশোককে বৌদ্ধধর্ম গ্রহণে প্রভাবিত করেছিল। এভাবেই অশোক ধম্ম-এর ধারণা গ্রহণ করে সাধারণ মানুষের কাছাকাছি পৌঁছানোর জন্য নতুন অর্থনৈতিক পরিবেশকে এক ধরনের সুযোগ হিসেবে চিহ্নিত করেন। সম্ভবত বৃহত্তর রাজ্যসীমায় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজনৈতিক ইউনিটসমূহকে সমন্বিত করাই ছিল অশোকের ধম্ম-এর নতুন রাষ্ট্রনীতি। কলিঙ্গ যুদ্ধের অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি না করে মৌর্য সার্বভৌমত্বের মধ্যে বিপুলসংখ্যক সার্বভৌম রাষ্ট্রের একত্রীকরণেই হয়তো তাঁর স্বপ্ন আবর্তিত হয়েছে। শার্লামেন এবং কনস্টান্টাইন কর্তৃক খ্রিস্টধর্মের নামে ইউরোপের রাজনৈতিক একত্রীকরণের স্বপ্নের সঙ্গে তাঁর স্বপ্নের মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ইতিপূর্বে ব্রাহ্মণ কর্তৃক যেসব বৌদ্ধ স্বীকৃতি লাভ করেননি, তারাই এখন ধম্ম-এর নামে একটি শান্তিপূর্ণ ধর্মীয় গোষ্ঠী হিসেবে নিজেদের জন্য একটি নিরাপদ ও সম্মানজনক অবস্থান  লাভ করেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর