শিরোনাম
সোমবার, ১ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

লকডাউন শেষ মানেই হাল ছেড়ে দেওয়া নয়

হাসানুল হক ইনু

লকডাউন শেষ মানেই হাল ছেড়ে দেওয়া নয়

করোনা সংক্রমণ বিস্তার ঠেকাতে ২৬ মার্চ থেকে শুরু হওয়া সাধারণ ছুটি তথা অঘোষিত লকডাউনের ৬২-এর মাথায় গতকাল থেকে সরকারি অফিস-প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। যদিও সরকারের টেকনিক্যাল কমিটি, আইইডিসিআর, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, ভাইরাস বিশেষজ্ঞ, সংক্রমণ রোগ বিশেষজ্ঞগণ এভাবে সরকারি ছুটি বাতিল করা ও লকডাউন তুলে নেওয়ার বিষয়ে ভিন্ন মত পোষণ করেছেন। সাধারণ ছুটি ঘোষণা এবং পরে দফায় দফায় ছুটি বাড়ানোর সময় প্রজ্ঞাপনে সংক্রমণ বিস্তার ঠেকাতে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা জারি করে। এ ছাড়াও সরকার দেশে সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নির্মূল আইনের অধীনে দেশে স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা জারি রাখে।

জীবন বাঁচানোর ৬২ দিনের সাধারণ ছুটি তথা লকডাউনের মধ্যেই জীবিকা রক্ষা ও অর্থনীতি সচল রাখার প্রশ্ন বড় হয়ে হাজির হয়েছিল।

এ পরিস্থিতিতে সাধারণ ছুটির শর্ত ও নির্দেশনা কঠোরভাবে প্রতিপালনের বদলে সমন্বয়হীনতা, বৈপরীত্য ও শিথিলতা বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। তারপরও সবাই এটা স্বীকার করেছেন যে, সাধারণ ছুটির নামে অঘোষিত লকডাউন সংক্রমণ বিস্তারের হার ও গতি কমিয়েছে। লকডাউনের মধ্যেই পোশাক কারখানা খুলে দেওয়া, চাকরি বাঁচাতে শ্রমিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের অমানবিক ভ্রমণ বা হেঁটে দলে দলে আসা-যাওয়া, অসচেতনতা ও অপ্রয়োজনে মানুষের ঘরের বাইরে যাওয়া, শপিং মলে ভিড় করে কেনাকাটা করা, ঈদের ছুটিতে মানুষের কর্মস্থল থেকে গ্রামের বাড়িতে যাওয়া-আসাসহ শিথিলতার ঘটনা যত ঘটেছে সংক্রমণের হার ও গতি তত বেড়েছে।

অনির্দিষ্টকালের জন্য সাধারণ ছুটি বা লকডাউন চালু রাখার কথা কেউই বলবে না। তবে লকডাউন শিথিল করা, সীমিত করা, অঞ্চল বিষেশে চালু রাখা, ধাপে ধাপে প্রত্যাহার করার সুনির্দিষ্ট কর্মকৌশল প্রয়োজন আছে। তা করতে হবে সংক্রামক রোগতত্ত্ব বিজ্ঞান, ভাইরাস বিজ্ঞান, গণস্বাস্থ্য বিজ্ঞানের বৈজ্ঞানিক বিবেচনা দিয়েই। টানা ৬২ দিনের কঠোরতা-শিথিলতার সরকারি ছুটি শেষে অঘোষিত লকডাউন যখন তুলে নেওয়া হলো তখন দেশে সংক্রমণের হার দ্রুতগতিতে বাড়ছে। তাই সাধারণ ছুটি শেষ তথা লকডাউন তুলে নেওয়ার বিষয়টি আরও সুবিবেচনাপ্রসূত হওয়া প্রয়োজন ছিল।

সাধারণ ছুটি তথা লকডাউনের আগে আমাদের সামনে ৩টি চ্যালেঞ্জ ছিল। ১. স্বাস্থ্য সংকট ও স্বাস্থ্যসেবা সংকট। করোনা সংক্রমণ বিস্তার রোধ। টেস্ট করে শনাক্তকরণ। শনাক্তকৃত রোগীর হাসপাতালে চিকিৎসা, আইসিইউ বেড, ভেন্টিলেটর, প্রাতিষ্ঠানিক বা ঘরে আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা, চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের মাস্ক, পিপিই সরবরাহসহ তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি তাদের উদ্বুদ্ধ ও মানসিকভাবে শক্তি জোগানো। ২. লকডাউনে কর্মহীন আয়হীন লাখ লাখ মানুষ ও পরিবারের খাদ্য সংকট। ৩. অর্থনীতি সচল রাখা। রপ্তানিমুখী শিল্প চালু রাখা। আমদানি-রপ্তানি-বন্দর চালু রাখা। বোরো ধান কেটে ঘরে তোলাসহ কৃষিকাজ চালু রাখা। অভ্যন্তরীণ পণ্যপ্রবাহ চালু রাখা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অপ্রস্তুত অবস্থা থেকেই এই সংকট মোকাবিলায় যুদ্ধাবস্থায় প্রধান সেনাপতির ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। স্বাস্থ্যসেবা খাতের অপ্রস্তুত, অসমর্থ, ভঙ্গুর অবস্থাকে সচল করার উদ্যোগ নেন। চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের বড় একটি অংশ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ শুরু করেন। মাঠ প্রশাসন, পুলিশ বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী ও মাঠ প্রশাসনকে সহযোগিতা এবং মানুষকে ঘরে রাখতে টহল শুরু করে। ৭৫ লাখ পরিবারকে খাদ্য সহায়তা ও ৫০ লাখ পরিবারকে নগদ সহায়তা প্রদানের পদক্ষেপ নেন। প্রধানমন্ত্রী যেভাবে যুদ্ধ শুরু করেছিলেন দায়িত্বপ্রাপ্তরা তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারেননি। বরং প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই অদক্ষতা, ব্যর্থতা, সমন্বয়হীনতা, বৈপরীত্য, ক্ষেত্রবিশেষে দুর্নীতি-অনিয়ম-আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। যা প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টাকে কালিমালিপ্ত করেছে।

অপ্রস্তুত অবস্থা থেকে শুরু হয়ে সমন্বয়হীনতা-শিথিলতা-বৈপরীত্যে-জন অসচেতনতার মধ্য দিয়ে যাওয়ার পরও ঘনবসতির দেশে করোনা সংক্রমণ যে হারে বাড়া এবং মহামারীর আকার নেওয়ার আশঙ্কা ছিল তা হয়নি, সাধারণ ছুটি তথা অঘোষিত লকডাউনের কারণেই।

আমি একজন আশাবাদী ও রাজনীতির মাঠের মানুষ হিসেবে বলব, সাধারণ ছুটি শেষে লকডাউন তুলে নেওয়া মানে হাল ছেড়ে দেওয়া না। করোনা সংক্রমণ বিস্তার ঠেকাতে এবং আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে জীবন বাঁচানোর জন্য আমাদের লড়াই চালিয়েই যেতে হবে।

আমি বিশ্বাস করি, প্রধানমন্ত্রী করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে মাঝপথে তিনি হাল ছেড়ে দিবেন না। এই যুদ্ধে তার অপরিসীম কষ্ট ও পরিশ্রম, চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মী-মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তা ও কর্মচারী, পুলিশ ও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য, সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মীদের আত্মবলিদানকে বৃথা যেতে দিবেন না। সরকারি ছুটি তথা লকডাউন উঠে গেলেও প্রধানমন্ত্রী শক্ত হাতেই যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন।

এত সমন্বয়হীনতা, বৈপরীত্য, শিথিলতার মধ্যেও মাঠপ্রশাসন ও সামাজিক প্রতিরোধের কারণে এখন পর্যন্ত দেশের ৮০ ভাগ জনপদ নিরাপদ ও সংক্রমণমুক্ত আছে। ১৬ কোটি মানুষ ৪ কোটি পরিবারের মধ্যে গতকাল ৩০ মে পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৪৪,৬০৮ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন ৬১০ জন। শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১.৩৭%। এ পরিসংখ্যান নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলা যেতে পারে টেস্টের সংখ্যা কম হওয়ায় প্রকৃত সংক্রমণের সংখ্যা জানা যাচ্ছে না। অনেক বিশেষজ্ঞ অনুমান করছেন যে সরকারি হিসাবের ১০ থেকে ৪০ গুণ বেশি সংক্রমণ হয়েছে। তাদের অনুমান স্বীকার করে নিলেও তা মহামারীর পর্যায় বা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়নি। পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণযোগ্য এবং আমাদের যে রাষ্ট্রীয়-জাতীয় প্রশাসনিক-অর্থনৈতিক সামর্থ্য আছে, স্বাস্থ্যসেবা খাতে অপ্রতুলতা ও অসমর্থ অবস্থার মধ্যেও যে অবকাঠামো আছে- তা দিয়েই আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা চালিয়ে সফল হতে পারি। তাই সাধারণ ছুটি শেষে অঘোষিত লকডাউন তুলে নেওয়ার পর আমাদের করণীয় :

১. সংক্রমণ বিস্তার রোধ : ধাপে ধাপে লকডাউন তুলে নেওয়া বা শিথিল করার সামগ্রিক ও পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা প্রয়োজন। সমগ্র বাংলাদেশকে সংক্রমিত রোগী আর সংক্রমণ হারের বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের ভিত্তিতে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ লাল অঞ্চল, মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ হলুদ অঞ্চল, কম ঝুঁকিপূর্ণ ও নিরাপদ সবুজ অঞ্চল হিসেবে চিন্তিত করে অঞ্চলভিত্তিক ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে। সারা দেশ, বিভাগ, জেলা, উপজেলা এবং শিল্পাঞ্চলগুলোকে লাল, হলুদ, সবুজ অঞ্চলে ভাগ করতে হবে। লাল অঞ্চল, হলুদ অঞ্চল, সবুজ অঞ্চলের সংক্রমণ বিস্তার রোধে সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থাপনা, ঘরে থাকার নিয়মের কঠোরতা বা শিথিলতা, অর্থনৈতিক কর্মকা-, বিপণি বিতান-দোকানপাট-হাট-বাজার-গণপরিবহন-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া বা না দেওয়া, জনসমাগম বন্ধ রাখায় কঠোরতা বা শিথিলতার কৌশল প্রয়োগ করতে হবে। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ সংলগ্ন অঞ্চল, চট্টগ্রাম বা যেসব অঞ্চলে সংক্রমণ বেশি সেসব জেলা বা অঞ্চলের ব্যবস্থাপনা আর যে জেলা বা অঞ্চলে ১০০ জনের কম সংক্রমিত হয়েছে সেই জেলা বা অঞ্চলের ব্যবস্থাপনা এক রকম হবে না। লাল অঞ্চলে প্রয়োজনে কঠোর লকডাউন দিয়ে সংক্রমণ বিস্তার ঠেকাতে হবে। লাল অঞ্চল থেকে হলুদ ও সবুজ অঞ্চলে সংক্রমণের সব সুযোগ বন্ধ করে দিতে হবে। ক্রমান্বয়ে সবুজ নিরাপদ অঞ্চল বাড়াতে হবে।

শিল্পাঞ্চল ও কারখানাগুলোকেও এভাবেই লাল, হলুদ, সবুজ-তিন ভাগে করতে হবে। যেহেতু শ্রমিকঘন কারখানায় সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মানা কঠিন। তাই শ্রমিকদের জন্য মালিক ও সরকারকে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে। কারখানায় কারখানায় টেস্ট করা, শনাক্ত হলে সেই শিল্পাঞ্চলেই তাদের আইসোলেশন ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, সংক্রমণ ঝুঁকি এড়াতে শ্রমিকদের সাধারণ হাটবাজার-দোকানপাটে কেনাকাটা এড়াতে কারখানার ব্যবস্থাপনায় কারখানাতেই নিত্যপণ্য কেনাকাটার ব্যবস্থা করা।

২. টেস্ট ও শনাক্তকরণ : টেস্টের জন্য ল্যাব, অবকাঠামো ও জনবল অপ্রতুল। তাই টেস্টের সুযোগও কঠিন। তাই যতক্ষণ সবাইকে টেস্টের আওতায় আনার সামর্থ্য অর্জিত না হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত টেস্টের অগ্রাধিকার নির্ধারণ করতে হবে। যাদের লক্ষণ ও উপসর্গ দেখা দিয়েছে, যারা সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে গেছেন,  চিকিৎসক ও মাঠপ্রশাসনের পর্যবেক্ষণে যাদের টেস্ট প্রয়োজন আর যারা করোনার সামনে উন্মুক্ত সেই প্রথম সারির যোদ্ধাদের টেস্টে অগ্রাধিকার দিতে হবে। দেশে অব্যবহৃত ল্যাবগুলোকে চালু করতে হবে, নতুন ল্যাব বাড়াতে হবে, কিট ও মেশিনপত্র জরুরি ভিত্তিতে আমদানি ও সংগ্রহ করতে হবে, নতুন পাঁচ হাজার মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট/টেকিনিশিয়ান নিয়োগ দিতে হবে। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ দেশে উদ্ভাবিত টেস্ট কিটের মান পরীক্ষা দ্রুত সম্পন্ন করে তা মানসম্মত হলে ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে হবে। বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে টেস্টের সুযোগ দিতে হবে।

৩. চিকিৎসা : সরকারি ও বেসরকারি মালিকানা নির্বিশেষে সমগ্র স্বাস্থ্যসেবা খাতকে সাময়িকভাবে সরকারি সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণে নিতে হবে। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ১০০টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জাতীয় পর্যায়ের সরকারি ২৫টি বিশেষায়িত হাসপাতাল, ৬৪টি জেলায় সদর হাসপাতাল, ৪৯১টি উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বেসরকারি পর্যায়ে ৩৫ হাজার হাসপাতাল-ক্লিনিক আছে। বেসরকারি পর্যায়ে ৭০ হাজার চিকিৎসক ও ৫ লাখ স্বাস্থ্যকর্মী আছেন। আমাদের স্বাস্থ্য খাতের এই অবকাঠামো ও জনবল সামর্থ্যকে অব্যবস্থাপনা ও  সমন্বয়হীনতা থেকে মুক্ত করে দক্ষতার সঙ্গে কাজে লাগালে করোনা চিকিৎসাসহ সাধারণ চিকিৎসায় যে হায় হায় অবস্থা রয়েছে তা দূর করা সম্ভব।

হাসপাতাল বা ক্লিনিকগুলোকেও সবুজ, হলুদ, লাল জোনে ভাগ করতে হবে। কোনো রোগীকেই বিনা চিকিৎসায় ফিরিয়ে দেওয়া যাবে না। হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসা রোগীকে চিকিৎসকরা লক্ষণ ও উপসর্গ পর্যবেক্ষণ এবং প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সম্ভাব্য করোনা রোগী বিবেচিত হলে তাকে হাসপাতালেই আইসোলেশনে রেখে করোনার টেস্টসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শুরু করবেন। টেস্টে করোনা শনাক্ত হলে সেই হাসপাতালেই আর সেখানে সম্ভব না হলে নিকটস্থ সমর্থ হাসপাতালে পাঠাবেন।

করোনায় আক্রান্ত হওয়া মানেই নিশ্চিত মৃত্যু না। করোনা আক্রান্ত রোগীর মাত্র ১৫ ভাগের জন্য হাসপাতাল ও অক্সিজেন লাগে। ৫ ভাগের জন্য আইসিইউ ও  ভেন্টিলেটর লাগে। বাকি ৮০ ভাগ বাসায় আইসোলেশনে থেকে বা হাসপাতাল/প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে থেকে খুব সাধারণ চিকিৎসায় সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেন। আইসিইউ ও ভেন্টিলেটর অপ্রতুল হলেও আমরা যে রোগীর অক্সিজেন প্রয়োজন তাকে অক্সিজেন দেওয়ার সামর্থ্য আছে। জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অক্সিজেনের সিলিন্ডার ও অক্সিজেন দেওয়ার জন্য নজেল সংখ্যা প্রয়োজন অনুযায়ী সরবরাহ করা সম্ভব।

স্বাস্থ্যসেবা খাতকে সচল রাখতে এই খাতের চিকিৎসক-নার্স-কর্মীদের নিরাপদ রাখতে হবে। আমরা পিপিই, মাস্ক রপ্তানি শুরু করেছি। আগে আমাদের চাহিদা পূরণ তারপর রপ্তানি এই নীতি গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি মানসম্মত পিপিই, মাস্ক আমদানি ও সংগ্রহ অব্যাহত রাখতে হবে।

জনসচেতনতা : সরকারি-বেসরকারি অফিস, প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বিপণিবিতান, দোকানপাট, গণপরিবহন খুলে যাওয়ায় আমরা ঝুঁকির মধ্যেই কর্মস্থলে যাব। গণপরিবহনে উঠব। আমাদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা নিশ্চিত করার নির্দেশিত করণীয়গুলো আমাদের কঠোরভাবেই মানতে হবে। মাস্ক ব্যবহার, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, হাত ধোয়া, হাঁচি-কাশি শিষ্টাচার মেনে চলার মধ্য দিয়ে নিজেকে-পরিবারকে-কর্মস্থলের সহকর্মীদের-প্রতিবেশী-সমাজকে নিরাপদ রাখতে হবে। সরকারি সাধারণ ছুটি শেষে এভাবেই আমরা করোনার বিরুদ্ধে আমাদের জীবনযুদ্ধ চালু রাখব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার সংক্রমণ রোগ বিশেষজ্ঞ, ভাইরাস বিশেষজ্ঞ, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের বৈজ্ঞানিক পরামর্শ নিয়ে জীবনের ঝুঁকি আর জীবিকার সংকটের মধ্যে সঠিক ভারসাম্য তৈরি করেই সংক্রমণ বিস্তারে যেখানে যা করণীয় তাই করবেন। আমি আবারও বলছি, সরকারি ছুটি শেষ মানেই হাল ছেড়ে দেওয়া না।

                লেখক : সভাপতি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)।

সর্বশেষ খবর