শুক্রবার, ৫ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনা প্রতিরোধে মনোবল জরুরি

ড. মো. আওলাদ হোসেন

করোনা প্রতিরোধে মনোবল জরুরি

বাংলাদেশে ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে মৃতের তালিকা। করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত রোগীর শতকরা হার বেড়েই চলছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন, আশির দশকের রাজপথ কাঁপানো নিবেদিতপ্রাণ ছাত্রলীগ কর্মী উৎপল কুমার সাহা। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের দুর্দিনে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (বাকসু ৮৮-৮৯) নির্বাচনে ছাত্রলীগ মনোনীত রফিক-আওলাদ পরিষদে সমাজকল্যাণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। খাদ্য অধিদফতরের ঢাকা রেশনিংয়ের চিফ কো-অর্ডিনেটর কৃষিবিদ উৎপল কুমার সাহার অকাল মৃত্যুতে দুঃখ প্রকাশ করে, সম্মানিত খাদ্য সচিব নাজমানারা খানুম জানিয়েছেন, পরলোকগত সাহা একজন সৎ, দক্ষ, নিবেদিতপ্রাণ দেশপ্রেমিক কর্মকর্তা ছিলেন।

গত ৮ মার্চ, ২০২০ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। করোনা প্রতিরোধে ২৬ মার্চ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত সরকার একনাগাড়ে ৬৬ দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে জনসাধারণকে ঘরে থাকতে নির্দেশ দেয় এবং বিভিন্ন এলাকা প্রয়োজন অনুযায়ী লকডাউন ঘোষণা করে। বাংলাদেশে এখন প্রতিদিন পরীক্ষা অনুযায়ী কমবেশি ২৩% হারে করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছে। এমনি পরিস্থিতিতে করোনা প্রতিরোধে ঘোষিত ‘সাধারণ ছুটি’ বৃদ্ধি না করে ও ‘লকডাউন’ তুলে দিয়ে সবকিছু সীমিত আকারে স্বাভাবিক করার ঘোষণা দিয়েছে সরকার।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ করোনা আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা উদ্বেগজনক পর্যায় থাকলেও লকডাউন শিথিল করেছে। কোথাও কোথাও তুলে নিয়েছে। পবিত্র মক্কা-মদিনা-মসজিদুল আকসাও মুসল্লিদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রক্ষাপটে, বেঁচে থাকার জন্য যেমন মানুষের অর্থনৈতিক গতি দরকার, কাজ দরকার, দিনের পর দিন যেমন তাদের ঘরে বসে থাকা সম্ভব নয়, তেমনি নিজেদের সুরক্ষাও অতীব জরুরি। আর এসব দিক বিবেচনা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনার সঙ্গে সহাবস্থান এবং করোনাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বেঁচে থাকার যুদ্ধে ‘আপনার সুরক্ষা, আপনার হাতে’ এই নতুন মডেল উপস্থাপন করে সব কিছু সীমিত আকারে খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত নতুন রোগীর সংখ্যা সর্বোচ্চ দুই হাজার ৪২৩ জন এবং মৃতের সংখ্যা সর্বোচ্চ ৩৫ জন প্রকাশিত হওয়ার পর, উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সব কিছু খুলে দেওয়ার ফলে এখন করোনায় আক্রান্ত রোগী এবং মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকবে। কিন্তু জীবনের পাশাপাশি জীবিকা দীর্ঘমেয়াদে বন্ধ থাকলে জীবনের গতিপথ থেমে যাবে, নেমে আসবে স্তব্ধতা। অর্থনীতিও স্থবির হয়ে পড়বে। বাংলাদেশ একটি ঘোরতর সংকটের মধ্যে পড়বে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা।

‘করোনাভাইরাস কবে নির্মূল হবে’-এ বিষয়ে জেনেভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক ভার্চুয়াল প্রেস কনফারেন্সে সংস্থার ইমার্জেন্সি বিষয়ের পরিচালক ডা. মাইক রায়ান বলেন, ‘এই (করোনা) ভাইরাসটি আমাদের জাতিগত রোগ হিসেবে আমাদের সঙ্গেই থাকতে পারে এবং হয়তো কখনোই শতভাগ নির্মূল হবে না। এইচআইভি’ও নির্মূল হয়নি, আমরা ওই (এইচআইভি) ভাইরাসের সঙ্গে সহাবস্থান করতে পেরেছি’। ডা. রায়ান আরও বলেন, ‘বর্তমানে করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য প্রতিষেধক তৈরির অন্তত ১০০টি প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। তবে প্রতিষেধক আবিষ্কারই ভাইরাসের বিলুপ্তি নিশ্চিত করে না।’ বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সারা দেশে যেভাবে করোনা ছড়িয়ে পড়েছে এটি এখন নিয়ন্ত্রণ করা খুব কঠিন হয়ে যাবে। শীর্ষস্থানীয় ভাইরোলজিস্ট প্রফেসর নজরুল ইসলাম বিবিসিকে বলেছেন, সংক্রমণের যে প্যাটার্ন বা গ্রাফ দেখা যাচ্ছে তাতে ‘হার্ড ইমিউনিটি’ না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই।

‘হার্ড ইমিউনিটি’ কী? এর বাংলা অর্থ ‘সম্প্রদায়ব্যাপী অনাক্রমন্যতা’। উইকিপিডিয়ার ব্যাখ্যা : রোগবিস্তার বিজ্ঞানের আলোচনাতে সম্প্রদায়ব্যাপী অনাক্রমন্যতা বা সম্প্রদায়ব্যাপী প্রতিরক্ষা বলতে মানুষ থেকে মানুষে বাহিত কোনো সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে পরোক্ষ সুরক্ষামূলক একটি অবস্থাকে বোঝায়, যেখানে কোনো জনসমষ্টির যথেষ্ট বড় একটি অংশ টিকাদান বা অন্য কোনো উপায়ে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করার সুবাদে রোগটির বিস্তার প্রতিরোধ করতে সক্ষম, যার ফলে রোগটি কেবল খুবই সীমিত সংখ্যায় রোগাক্রান্ত ব্যক্তি থেকে অন্য কোনো ঝুঁকিপ্রবণ ব্যক্তির দেহে ছড়াতে পারে। যখন কোনো জনসমষ্টির সিংহ ভাগ ব্যক্তিই কোনো মনুষ্যবাহিত সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করে, তখন তারা সেই রোগের সংবহনে আর অংশগ্রহণ করে না; এর ফলে রোগ সংবহন ও সংক্রমণের শৃঙ্খল ব্যাহত হয় এবং রোগটির বিস্তার ধীর হতে হতে শেষ পর্যন্ত থেমে যায়। কোনো জনসমষ্টি বা সম্প্রদায়ে যত বেশি সংখ্যায় অনাক্রমন্যতা বা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বিশিষ্ট ব্যক্তি থাকে, একজন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাহীন ব্যক্তির পক্ষে একজন সংক্রামক ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার সম্ভাবনা ততটুকুই কমে যায়, ফলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাহীন ব্যক্তিরা সংক্রমণের হাত থেকে এক ধরনের পরোক্ষ সুরক্ষা লাভ করেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভাইরাসটি যে পরিমাণ সংক্রমণ ঘটিয়েছে তা নির্দিষ্ট দেশের মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশেরও কম। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের হার্ড ইমিউনিটি পেতে হলে অন্তত কোনো দেশের জনসংখ্যার ৮০ শতাংশের বেশি মানুষ সংক্রমিত হতে হবে।

পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ড. তৌফিক জোয়ার্দার TBS-এর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ‘হার্ড ইমিউনিটি’ সম্ভব হবে না কারণ, ভ্যাকসিন আবিষ্কারের আগে প্রাকৃতিকভাবে হার্ড ইমিউনিটি গড়ে তুলতে যে পরিমাণ মানুষ আক্রান্ত হবে এবং যত মানুষ মারা যাবে, তার সংখ্যা হবে বিরাট।

মূল কথা, একটি জনগোষ্ঠীতে ভ্যাকসিন দিয়ে বা সংক্রমণ বাড়িয়ে বা যে কোনো উপায়ে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করার সুবাদে করোনার বিস্তার প্রতিরোধ করতে হবে। যেহেতু করোনার প্রতিষেধক বা ভ্যাকসিন আবিষ্কার সময়সাপেক্ষ, সুতরাং আপাতত ভ্যাকসিনের কথা বাদ দিলাম। ড. তৌফিক জোয়ার্দারের মতে, হার্ড ইমিউনিটি পেতে জনগোষ্ঠীর শতকরা ৮০% মানুষের সংক্রমণ হওয়া পর্যন্ত এক বিরাটসংখ্যক জীবনহানির আশঙ্কা রয়েছে, রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে, অর্থনীতি অচল হতে পারে। এমন পরিস্থিতি কারও কাম্য নয়, সহনীয়ও নয়। সুতরাং বাংলাদেশে হার্ড ইমিউনিটি সম্ভব নয়। কিন্তু রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটি বৃদ্ধি করার বিকল্প নেই। টাঙ্গাইলে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন খলিল মিয়া। তার স্বজনরা জানান, আক্রান্ত হওয়ার পর খলিল মিয়া জমির পাশে একটি ঘরে থাকতেন। পরিবারের সদস্যদের নিরাপদে রাখতে তিনি এমন সিদ্ধান্ত নেন। বয়স ৬০ ছুঁই ছুঁই হলেও শারীরিক কোনো জটিলতা ছিল না। সময় কাটাতে তিনি ভোরে উঠে নিজের জমিতে কাজ করতেন ও রান্না করে খেতেন। কোনো ধরনের জটিলতা না থাকায় ওষুধ খাওয়ারও প্রয়োজন পড়েনি। জমির টাটকা শাক-সবজি খেয়ে তিনি ১৪ দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এক্ষেত্রে জলিল মিয়ার দৃঢ় মনোবলই তাকে সুস্থ হতে সাহায্য করেছে। ভাইরাস বিশেষজ্ঞ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, সবার শরীরের ইমিউনিটি এক রকম নয়। তাদের দ্রুত সুস্থ হওয়ার পেছনে বেশ কয়েকটি বিষয় কাজ করেছে। ওই শ্রমিকরা নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করেন। ফলে তাদের ইমিউনিটি সিস্টেম মজবুত হয়েছে। করোনাভাইরাস তাদের কাবু করতে পারেনি।

দেশে লকডাউন চলাকালীন, হঠাৎ করে গার্মেন্ট খুলে দেওয়া হয়েছিল। লাখ লাখ গার্মেন্ট শ্রমিক পায়ে হেঁটে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কর্মস্থল ঢাকা বা অন্যস্থান গিয়েছে। টেলিভিশন, পত্রিকা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব ছবি ব্যাপক প্রচার পেয়েছে। আমরা ভয় পেয়েছিলাম। আমরা লক্ষ করছি, গাদাগাদি করে ফেরিতে নদী পার হয়ে, পায়ে হেঁটে আসা গার্মেন্ট শ্রমিকদের মধ্যে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা তেমন নেই। রংপুরের ধানকাটা শ্রমিকদের মতো গার্মেন্ট শ্রমিকরা নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করেন। তাদের ইমিউনিটি সিস্টেম মজবুত হওয়ায় করোনা তাদের কাবু করতে পারেনি।

যাদের শরীরে রোগপ্রতিরোধ শক্তি বা ইমিউনিটি সিস্টেম দুর্বল, করোনাভাইরাস তাদের দ্রুত কাবু করে ফেলছে। এজন্য স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা রোগপ্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি করার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করা, শরীরে ইমিউনিটি বাড়ে এমন পুষ্টিযুক্ত খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। একটা সময় ছিল, যখন বলা হতো ‘যক্ষ্মারোগে রক্ষা নাই’। তখন যক্ষ্মারোগে ওষুধ ও ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি, যক্ষ্মারোগীদের আলাদা করে রাখা হতো। হাঁচি-কাশি দেওয়ার সময় রুমাল ব্যবহার করা হতো। বক্ষব্যাধি হাসপাতালের যক্ষ্মারোগীদের মন আনন্দময় ও উৎফুল্ল রাখার জন্য নৌকায় করে বিলের দিকে (বর্তমান নিকেতন এলাকা) বেড়াতে নিয়ে যাওয়া হতো। যেহেতু চিকিৎসা ছিল না, তখনো রোগীদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য বেশি পরিমাণ মাংস ও দুধ খাওয়ানো হতো।

সুতরাং বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে, যেহেতু ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি, ভ্যাকসিন প্রয়োগ করে মানুষের শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা সম্ভব হচ্ছে না, এ ছাড়া বাংলাদেশে হার্ড ইমিউনিটিও সম্ভব নয়। তাই যক্ষ্মারোগের প্রাথমিক পরিস্থিতির ন্যায় করোনা প্রতিরোধে সংক্রমণের আগেই রোগপ্রতিরোধ শক্তি বা ইমিউনিটি বৃদ্ধির যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি প্রয়োজন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এবং ইউজিসি অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ, করোনা প্রতিরোধে নিয়মিত খাদ্য তালিকায় ভাত-রুটি, শাক-সবজির সঙ্গে মাছ, মাংস, ডিম, দুধ রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। জনৈক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, করোনা পরিস্থিতিতে কর্তব্য পালনকালে নিজের শরীরে করোনা প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধির জন্য পুলিশ সদস্যদের প্রত্যেককে খাওয়ার জন্য প্রতিদিন দুটি করে ডিম সরবরাহ করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের সর্বত্র করোনা ছড়িয়ে পড়েছে। করোনা মোকাবিলায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত মডেল সফল করতে করোনা সংক্রমণের আগেই প্রতিটি নাগরিকের শরীরে রোগপ্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিযুক্ত খাবার গ্রহণ ও আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে সরকারের যেমন ভূমিকা রয়েছে, তেমনি জনগণের ভূমিকাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সরকার এরই মাঝে ধান উৎপাদনে সফলতা অর্জন করেছে। করোনার কারণে সম্ভাব্য খাদ্য সংকট মোকাবিলা করতে হলে খাদ্য উৎপাদন আরও অনেক বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছে সরকার। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় চাল, ডাল, আটা, তেলের মতো নিত্যপণ্যের সঙ্গে এবার সরকারি সহায়তার তালিকায় যুক্ত হচ্ছে আম, লিচুসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফল ও শাক-সবজি ও নগদ অর্থ। লকডাউনের মধ্যে কর্মহীন হয়ে পড়া শ্রমজীবী ও দরিদ্র মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণের পাশাপাশি ফল ও সবজি চাষিরা যাতে বিপাকে না পড়েন, সেজন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। করোনার কারণে লকডাউন চলাকালীন বাজারে যেন মাছ, মাংস, ডিম, দুধের ঘাটতি না হয়, সেজন্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সরকারিভাবে ডিম, দুধ ক্রয় করে বিপণন করেছে।

কৃষি মন্ত্রণালয় পরিকল্পিতভাবে ধানসহ যাবতীয় ফসল উৎপাদন, সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। তেমনিভাবে প্রতিজন সম্মানিত নাগরিকের শারীরিক রোগপ্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি করতে প্রয়োজনীয় আমিষ জাতীয় খাদ্য উৎপাদন, বাজারজাতকরণ এবং বাজারমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিশ্চিত করার জন্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। দেশের সম্মানিত নাগরিকদের জীবন নিরাপদ ও করোনামুক্ত রাখার জন্য ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে মাছ, মাংস, ডিম, দুধসহ অন্যান্য পুষ্টিকর খাবার সরকারি সহায়তা হিসেবে সরবরাহের ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। এ ব্যাপারে জনগণকে অধিক সচেতন থাকতে হবে, কায়িক শ্রম বাড়াতে হবে, সঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। দেশের প্রতিজন নাগরিক যদি মনকে উৎফুল্ল রেখে নিজেদের সুরক্ষার বিষয়টি প্রতিপালন করেন তাহলে স্বাভাবিক জীবনে থেকেও করোনা আমাদের জন্য বড় ধরনের কোনো হুমকি তৈরি করতে পারবে না। বিশ্বের এক নম্বর ‘করোনাযোদ্ধা’ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত করোনার সঙ্গে সহাবস্থান এবং করোনাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বেঁচে থাকার যুদ্ধে আমরা জয়ী হব।

                লেখক : রাজনীতিক।

সর্বশেষ খবর